ওয়ার্ল্ড ইনসাইড

ষষ্ঠ দফায় বিজেপির আসন হারানোর আশঙ্কা বেশি


প্রকাশ: 24/05/2024


Thumbnail

ভারতে চলমান লোকসভা নির্বাচনের ষষ্ঠ দফার ভোটগ্রহণ শুরু হবে শনিবার (২৫ মে)। ভারতের ছয়টি রাজ্য ও দুটি কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলের ৫৮ সংসদীয় আসনে এ ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে। এর মধ্যে উত্তরপ্রদেশের ১৪, বিহারের ৮, ঝাড়খণ্ডের ৪, ওড়িশার ৬, পশ্চিমবঙ্গের ৮, হারিয়ানার ১০টি, দিল্লিতে ৭টি এবং জম্মু ও কাশ্মিরের ১টি আসনে ভোট হবে।

এই দফার নির্বাচনে ৮৮৯ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। তবে এবার লড়াই ক্ষুরধার। কারণ, এই দফায় বিজেপির আসন বাড়ানোর জায়গা খুবই কম, বিপরীতে হারানোর আশঙ্কা বেশি।

আসন বাড়ানোর লক্ষ্যে বিজেপি এবার যে রাজ্যগুলোর দিকে বিশেষ নজর দিয়েছে, তার মধ্যে রয়েছে কাল পশ্চিমবঙ্গে ভোট আটটি ও ওডিশার ছয়টি আসনে। পশ্চিমবঙ্গে ওই আট আসনের মধ্যে বিজেপি গতবার জিতেছিল পাঁচটিতে। বাকি তিনটি তৃণমূল। ওডিশার ছয়টি আসনের মধ্যে বিজেপি জিতেছিল দুটি। পশ্চিমবঙ্গে তৃণমূল কংগ্রেস নতুন করে বিতর্কবিদ্ধ হচ্ছে রামকৃষ্ণ মিশন ও ভারত সেবাশ্রম সংঘ নিয়ে। অন্যদিকে ওডিশায় বিজেপি বিপাকে পড়েছে তাদের মুখপাত্র ও পুরি কেন্দ্রের প্রার্থী সম্বিত পাত্রের মন্তব্যের কারণে। সম্বিত দিন দুই আগে বলেছিলেন, প্রভু জগন্নাথ দেব নরেন্দ্র মোদির ভক্ত। মোদি নিজেই যখন নিজেকে পরমাত্মার অংশ বলে দাবি করেন, তখন সম্বিতের মন্তব্য বাড়তি কিছু সংযোজন না করলেও গোটা রাজ্য প্রতিবাদে মুখর হয়েছে। অবস্থা সামাল দিতে ও প্রায়শ্চিত্ত করতে সম্বিত তিন দিন উপবাস থাকার কথা ঘোষণা দিয়েছেন। এই আবহের মধ্যে বিজেপির জন্য ওডিশায় বাড়তি আসন পাওয়া সহজ হবে না।

উত্তর প্রদেশে এই দফায় ভোট ১৪ আসনে। এর মধ্যে গতবার বিজেপি জিতেছিল ৯টিতে। বাকি পাঁচটির মধ্যে চারটিতে বিএসপি, একটিতে এসপি জয় পেয়েছিল। বিএসপি এবার তেড়েফুঁড়ে লড়াই করছে না। তাদের দলিত ভোট আগের মতো বিজেপিতে গেলে মোদি এই রাজ্য থেকে আসন বৃদ্ধির আশা করতেই পারেন। কিন্তু দলিত ভোট এসপি-কংগ্রেস জোটে গেলে শাসক দলের চিন্তা বাড়বে। অখিলেশ যাদব সেই লক্ষ্যে এবার দলিত ও অনগ্রসর প্রার্থীর সংখ্যা বাড়িয়ে দিয়েছেন। দোসর কংগ্রেসকে নিয়ে প্রচারও চলছে সেভাবে।

জম্মু-কাশ্মীরের অনন্তনাগ-রাজৌরি কেন্দ্রের লড়াই এবার জোরদার। ফারুক আবদুল্লাহর দল ন্যাশনাল কনফারেন্স (এনসি) গতবার এই আসনে জিতেছিল। কিন্তু নয়া জমানায় এই কেন্দ্রের সীমান্ত পুনর্গঠন করা হয়েছে। রাজৌরির অনেকটা অনন্তনাগের মধ্যে ঢোকানো হয়েছে। এনসি প্রার্থীকে এখানে বেগ দিতে পিডিপির হয়ে দাঁড়িয়েছেন মেহবুবা মুফতি। বিজেপি প্রার্থী দেয়নি, তবে তারা সমর্থন করছে, তাদের তৈরি করা আপনি পার্টির প্রার্থীকে। উপত্যকায় বিজেপিকে সমর্থন করছে সাজ্জাদ লোনের দল পিপলস কনফারেন্সও। এনসি-পিডিপির রেষারেষিতে আপনি পার্টি জিতে গেলে বিজেপি বকলমে উপত্যকায় জমি খুঁজে পাবে।

এই পরিস্থিতিতে নির্বাচন কমিশনকে বড় স্বস্তি দিলেন সুপ্রিম কোর্ট। ভোট গ্রহণের ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে বুথভিত্তিক ভোটের যাবতীয় পরিসংখ্যান প্রকাশ করার আবেদন জানিয়ে সুপ্রিম কোর্টে মামলা হয়েছিল। দুই পক্ষের শুনানি শেষে সুপ্রিম কোর্ট আজ শুক্রবার এই বিষয়ে কোনো নির্দেশ না দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেন। বিচারপতি দীপংকর দত্ত ও বিচারপতি সতীশচন্দ্র শর্মার ডিভিশন বেঞ্চ জানান, পাঁচ দফার ভোট গ্রহণ হয়ে গেছে। বাকি মাত্র দুই দফা। এই সময় এমন কোনো নির্দেশ মানা কমিশনের পক্ষে চ্যালেঞ্জিং হয়ে দাঁড়াবে।

এবারের ভোটে নির্বাচন কমিশনের ভূমিকা নিয়ে বিরোধীরা সমালোচনায় মুখর। ভোট গ্রহণের ১১ দিন পর ভোটের হার বৃদ্ধির ঘোষণা বিরোধীদের শঙ্কিত করে রেখেছে। সেই শঙ্কা দূর করতেই ওই আবেদন করা হয়েছিল। প্রধানমন্ত্রীসহ বিজেপির শীর্ষ নেতারা ইতিমধ্যেই বলতে শুরু করেছেন, হার নিশ্চিত জেনে বিরোধীরা এখন থেকেই নির্বাচন কমিশন ও ইভিএমকে কাঠগড়ায় তুলতে শুরু করেছে।



প্রধান সম্পাদকঃ সৈয়দ বোরহান কবীর
ক্রিয়েটিভ মিডিয়া লিমিটেডের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান

বার্তা এবং বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ ২/৩ , ব্লক - ডি , লালমাটিয়া , ঢাকা -১২০৭
নিবন্ধিত ঠিকানাঃ বাড়ি# ৪৩ (লেভেল-৫) , রোড#১৬ নতুন (পুরাতন ২৭) , ধানমন্ডি , ঢাকা- ১২০৯
ফোনঃ +৮৮-০২৯১২৩৬৭৭