ইনসাইড বাংলাদেশ

কোন সরকার যা পারেনি, শেখ হাসিনার সরকার তা করে দেখাল


প্রকাশ: 27/05/2024


Thumbnail

আশরাফুল হুদার কথা মনে আছে কিংবা রকিবুল হুদা অথবা কোহিনুর মিয়া। এরা পুলিশের একেকজন দুর্নীতিবাজ, জাঁদরেল কর্মকর্তা ছিলেন। বিভিন্ন সরকারের সময়ে এরা ফুলে ফেঁপে উঠেছেন। সরকারের চেয়েও বড় হয়ে উঠেছিলেন। এদের দুর্নীতি এবং অপকর্মের দীর্ঘ ফিরিস্তি বলে শেষ করা যাবে না। 

সাবেক আইজি হিসেবে আশরাফুল হুদা একুশে অগাস্টের গ্রেনেড হামলার অন্যতম নাটের গুরু ছিলেন। গ্রেনেড হামলায় তিনি সমস্ত পরিকল্পনা ঠিকঠাক করে দিয়ে বিদেশ পাড়ি দিয়েছিলেন। পরবর্তীতে তাকে আইনের আওতায় আনা হয়েছে। সেটি বিএনপি-জামায়াত জোট সরকারের আমলে নয়, আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় এসে নির্মোহ তদন্তের মাধ্যমে আশরাফুল হুদাকে আইনের আওতায় আনা হয়েছে। 

রকিবুল হুদার কথা নিশ্চয়ই অনেকেরই মনে থাকবে। এই রকিবুল হুদা চট্টগ্রামের পুলিশ কমিশনার থাকা অবস্থায় শেখ হাসিনাকে লক্ষ্য করে গুলি করেছিলেন। যুবলীগের নেতারা মানববর্ম রচনা করে নিজেদের জীবন উৎসর্গ করে সেদিন শেখ হাসিনাকে বাঁচিয়েছিলেন। সেই রকিবুল হুদার দুর্নীতির ফিরিস্তিও রূপকথার গল্পকে হার মানাবে। আর কোহিনুর মিয়া ছিলেন একজন মধ্য স্তরের পুলিশ কর্মকর্তা। এই কোহিনুর মিয়ার দুর্নীতি এবং অত্যাচারের কাহিনি লিখে শেষ করা যাবে না। কিন্তু এদের বিরুদ্ধে বিএনপি-জামায়াত কোনদিনই ব্যবস্থা গ্রহণ করতে পারেননি।

পঁচাত্তরের পর থেকে যারা বিভিন্ন সময় রাষ্ট্র ক্ষমতায় এসেছেন, তারা পুলিশকে ব্যবহার করেছেন লাঠিয়াল হিসেবে।জিয়াউর রহমান, এরশাদ, খালেদা জিয়া প্রত্যেকেই তাই। এবং যে কারণে পুলিশ হয়ে উঠেছিল দুর্বৃত্ত। তারা ছিল আইনের ঊর্ধ্বে, বিচারের ঊর্ধ্বে। ব্যাপক দুর্নীতি, লুণ্ঠন এবং অবৈধ অর্থের মালিক হয়ে যাওয়াটা ছিল পুলিশ প্রশাসনের একটি স্বাভাবিক ঘটনা। 

এ কথা অস্বীকার করার উপায় নেই যে পুলিশের মধ্যেও কিছু সৎ, দায়িত্ববান, নিষ্ঠাবান কর্মকর্তা সবসময় ছিলেন, আছেন। কিন্তু বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ পদে সরকারের লেজুর, চাটুকার এবং এক ধরনের ভাড়াটে মাস্তানের মত পুলিশের দাপট বেড়েছিল পঁচাত্তরের পর থেকে। অনির্বাচিত সরকার গুলো ক্ষমতায় টিকে থাকার জন্য, জনগণকে শায়েস্তা করার জন্য পুলিশ প্রশাসনকে ব্যবহার করেছে। সেই সংস্কৃতি থেকে বর্তমান সরকার বেরিয়ে আসার চেষ্টা করছে। 

দুর্ভাগ্যজনক হল জিয়াউর রহমান, এরশাদ, বেগম খালেদা জিয়া কেউই পুলিশের দুর্নীতি, অনিয়ম এবং স্বেচ্ছাচারিতার বিরুদ্ধে কখনও কোন ব্যবস্থা গ্রহণ করতে পারেনি। শেখ হাসিনার সরকার এবার সাবেক পুলিশ প্রধান দুর্দান্ত ক্ষমতাশালী বেনজীর আহমেদের অবৈধ সম্পদের উৎস সন্ধান করতে গিয়ে চোখ খুলে গেলেন। তিনি সবসময় যে বলেন, কেউই আইনের ঊর্ধ্বে নয়, দুর্নীতির ব্যাপারে শূন্য সহিষ্ণুতা নীতি সেটি আরও আরেকবার প্রমাণিত হল। দুর্নীতি দমন কমিশন এখন পর্যন্ত বেনজীর আহমেদের বিপুল সম্পত্তির দুটি অংশ জব্দ করেছে। যে দুই অংশ জব্দ করা হয়েছে তার পরিমাণ বিপুল।

অতীতে কোন সরকারই ক্ষমতায় থেকে পুলিশের কোনো কর্মকর্তার গায়ে আঁচড় দিতে পারেনি। তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করতে পারেননি। কিন্তু শেখ হাসিনা এ ব্যাপারে নির্মোহ ভাবে দুঃশাসন দমন করছেন। শুধু মাত্র যে বেনজীর আহমেদের দুর্নীতির তদন্ত হচ্ছে এমনটি নয়, বর্তমান সরকারের আমলে দুর্নীতিবাজ বিভিন্ন পুলিশ কর্মকর্তাকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে, জেলে যেতে হয়েছে। যিনি আইন লঙ্ঘন করেছেন তার বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করতে এবং আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করতে কার্পণ্য করেনি শেখ হাসিনার সরকার।

আমরা কক্সাবাজারের ওসি প্রদীপের কথা জানি। আমরা ডিআইজি মিজানের কথা জানি। এ রকম অনেক উদাহরণ দেওয়া যায়, যেখানে পুলিশ দুর্নীতি করে বা অপরাধ করে পাড় পাননি। আগে পুলিশ কর্মকর্তাদের যে দায়মুক্তি দেওয়া সংস্কৃতি ছিল সেই সংস্কৃতি ভাঙছেন শেখ হাসিনাই। অন্যরা যা পারেননি, শেখ হাসিনা তা করে দেখাচ্ছেন।


প্রধান সম্পাদকঃ সৈয়দ বোরহান কবীর
ক্রিয়েটিভ মিডিয়া লিমিটেডের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান

বার্তা এবং বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ ২/৩ , ব্লক - ডি , লালমাটিয়া , ঢাকা -১২০৭
নিবন্ধিত ঠিকানাঃ বাড়ি# ৪৩ (লেভেল-৫) , রোড#১৬ নতুন (পুরাতন ২৭) , ধানমন্ডি , ঢাকা- ১২০৯
ফোনঃ +৮৮-০২৯১২৩৬৭৭