ইনসাইড পলিটিক্স

আজিজ-আনার-বেনজীর ইস্যুতে বিএনপিতে চাঙ্গাভাব


প্রকাশ: 29/05/2024


Thumbnail

৭ জানুয়ারি নির্বাচনের পর বিএনপির মধ্যে হতাশার সুস্পষ্ট লক্ষণ দেখা দিয়েছিল। বিএনপি নেতাকর্মীদের মন ভেঙে গিয়েছিল। ১১ জানুয়ারি আওয়ামী লীগ টানা চতুর্থবারের মতো মন্ত্রিসভা গঠন করেন। এই মন্ত্রিসভা গঠিত হবার পর মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র সহ বিভিন্ন দেশের পক্ষ থেকে নতুন সরকারকে যেভাবে অভিনন্দন জানানো হয়, প্রশংসা করা হয় তাতে বিএনপির নেতাকর্মীদের মধ্যে এক ধরনের ভেঙে পড়া মনোভাব লক্ষ্য করা গিয়েছিল। তারা এতই হতাশ হয়েছিলেন যে, আন্দোলনের কর্মসূচি দিতেও তাদের অনীহা দেখা দিয়েছিল। 

শুধুমাত্র তৃণমূলের নেতাকর্মীরা নন, শীর্ষস্থানীয় নেতাকর্মীদের মধ্যেও এই হতাশা মহামারীর মতো ছড়িয়ে পড়েছিল। কিন্তু সেই বিএনপিতে আবার নতুন করে চাঙ্গা ভাব লক্ষ্য করা যাচ্ছে। 

গত কিছুদিন ধরে বিএনপির নেতাদের মধ্যে একটি উল্লাস উল্লাস ভাব লক্ষ্য করা যাচ্ছে। সব নেতাকর্মীরাই এখন মনে করছেন সরকারকে এখন চাপ দেওয়ার সময় এসে গেছে। বিএনপির এই মানসিকতার পরিবর্তনের প্রধান কারণ হল বাংলাদেশের তিনটি ঘটনা।

রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা মনে করছেন, ২৮ অক্টোবরের পর থেকেই বিএনপির হতাশার গ্রাফ বাড়তে শুরু করে। পুরো জানুয়ারি মাসজুড়ে বিএনপি নেতৃবৃন্দের মধ্যে ব্যাপকভাবে হতাশা গ্রাস করেছিল। এবং এটি চূড়ান্ত আকার ধারণ করে যখন ডোনাল্ড লু বাংলাদেশ সফর করেন এবং ফুচকা খেয়ে, ক্রিকেট খেলে যখন তিনি নতুন সরকারের সঙ্গে অতীতের তিক্ততা ভুলে সম্পর্ক এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার বার্তা দেন। কিন্তু এর পরপরই আজিজ আহমেদের ওপর নিষেধাজ্ঞা, বেনজীর আহমেদের সম্পদ জব্দ এবং আনার হত্যাকাণ্ড নিয়ে বিএনপির মধ্যে একটি চাঙ্গা ভাব লক্ষ্য করা গেছে। 

বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর কদিন আগেও লোকচক্ষুর অন্তরালে ছিলেন। সিঙ্গাপুর এসে চিকিৎসা নিয়ে এসে ওমরাহ পালন করেছেন এবং পরে সময় কাটাচ্ছিলেন। দলের মহাসচিব পদ থেকে সরে দাঁড়ানোর ব্যাপারেও আগ্রহ জানিয়েছিলেন। সেই মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর এখন সরব হচ্ছেন এই তিন ইস্যুতে। এই তিন ইস্যুতে তিনি ব্যাপক কথা বলছেন। 

বিএনপির নেতারা বলছেন, এই তিনটি ইস্যু জনগণের মধ্যে এক ধরনের কাঁপন ধরিয়েছে। সাধারণ মানুষ মনে করছে সরকারের ভিতর দুর্বৃত্তরা এবং দুর্নীতিবাজরা শক্তপোক্ত জায়গা করে ফেলেছে। এ কারণেই এখন জনগণকে সঙ্গে নিয়ে আন্দোলন বেগবান করার উপযুক্ত সময়। আর এ কারণেই তারা নতুন করে রাজপথে নামার পরিকল্পনা গ্রহণ করছে। আনারের ঘটনার মাধ্যমে প্রমাণ করার চেষ্টা করছেন যে, জাতীয় সংসদে কারা যাচ্ছে। চোরাকারবারি, দুর্নীতিবাজ, দুর্বৃত্ত এবং সন্ত্রাসীরা যে সংসদে যাচ্ছে এটি প্রমাণের চেষ্টা করছে বিএনপি।

বেনজীর আহমেদের ঘটনা দিয়ে তারা প্রমাণ করার চেষ্টা করছে যে, সরকারের দুর্নীতি কোন পর্যায়ে চলে গেছে একজন পুলিশ কর্মকর্তা বেসামাল এ রকম দুর্নীতি করতে পারে। অন্যদিকে আজিজ আহমেদের ঘটনা দিয়ে বিএনপির কর্মীরা আশ্বানিত হচ্ছে যে, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র সরকারের সাথে যে সুসম্পর্ক করেছে বলে প্রচার করা হচ্ছে তা আসলে ঠিক নয়। এই তিন ঘটনাকে নিয়ে বিএনপি এখন কথামালার রাজনীতি শুরু করেছে। তবে রাজপথে যাওয়ার মত এখনও শক্তি বা মনোবল চাঙ্গা করতে পারেনি দলটি। 


প্রধান সম্পাদকঃ সৈয়দ বোরহান কবীর
ক্রিয়েটিভ মিডিয়া লিমিটেডের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান

বার্তা এবং বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ ২/৩ , ব্লক - ডি , লালমাটিয়া , ঢাকা -১২০৭
নিবন্ধিত ঠিকানাঃ বাড়ি# ৪৩ (লেভেল-৫) , রোড#১৬ নতুন (পুরাতন ২৭) , ধানমন্ডি , ঢাকা- ১২০৯
ফোনঃ +৮৮-০২৯১২৩৬৭৭