ইনসাইড বাংলাদেশ

বোয়িং নয়, এয়ারবাস কিনছে বিমান: যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে সম্পর্কের অবনতির শঙ্কা


প্রকাশ: 29/05/2024


Thumbnail

শেষ পর্যন্ত বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স চারটি এয়ারবাস কেনার সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত করে ফেলেছে। ১৮০ মিলিয়ন ডলার করে প্রতিটি এয়ারবাসের মূল্য পড়বে। ইতোমধ্যে এয়ারবাস কেনার জন্য সবুজ সংকেত দিয়েছে বিমানের বোর্ড। এর ফলে বিমানের বিমান ক্রয় নিয়ে যে আন্তর্জাতিক মেরুকরণ এবং দরকষাকষি তার অবসান ঘটতে যাচ্ছে বলে ধারণা করা হচ্ছে। কিন্তু ফ্রান্সের তৈরি এয়ারবাস কেনার ফলে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র নাখোশ হতে পারে এমন আশঙ্কা করছেন কেউ কেউ। এর ফলে নতুন করে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র সরকারের ওপর চাপ সৃষ্টি করতে পারে বলেও কূটনৈতিক বলে আশঙ্কা প্রকাশ করছেন। 

উল্লেখ্য, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র বিমানকে বোয়িং কেনার জন্য অনুরোধ জানিয়েছিল এবং এ নিয়ে মার্কিন দূতাবাস এবং মার্কিন সরকারের পক্ষ থেকে বেশ দরকষাকষিও করা হয়েছিল। ডোনাল্ড লু বাংলাদেশ সফরের সময়ও প্রধানমন্ত্রীর উপদেষ্টা সালমান এফ রহমানকে বোয়িং কেনার ব্যাপারে প্রস্তাব দিয়েছিলেন। এছাড়াও নির্বাচনের আগে বিমানের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে দেখা করেন পিটার হাস। তিনি বাংলাদেশকে বোয়িং কেনার জন্য অনুরোধ করেন।

বাংলাদেশ বিমানে নতুন করে উড়োজাহাজ কেনার বিষয়টি গত এক বছর ধরেই আলোচনার মধ্যে ছিল। এর মধ্যেই সরকার ফ্রান্সের এয়ারবাস কেনার জন্য আগ্রহ প্রকাশ করেছে এবং সেই আগ্রহের অংশ হিসেবে ফ্রান্সের সঙ্গে আলাপ আলোচনা অনেকদূর গড়িয়ে যায়। কিন্তু এই আলোচনার মাঝেই মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র বিমানে এয়ারবাসের পরিবর্তে বোয়িং দেওয়ার জন্য চেষ্টা তদবির করে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত বিমানের বোর্ড সভায় এয়ারবাস কেনার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে বলে একাধিক দায়িত্বশীল সূত্র নিশ্চিত করেছে। এর ফলে বাংলাদেশের সঙ্গে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সম্পর্কের নতুন করে টানাপোড়েন হতে পারে বলে কেউ কেউ শঙ্কা প্রকাশ করেছে। 

তবে বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষ দাবি করছে, এটি যাচাই বাছাই এবং নীরিক্ষার মাধ্যমে করা হয়েছে। কাজেই এই নিয়ে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র সন্তুষ্ট হবার কোন কারণ নেই। 

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র নির্বাচনের পর বাংলাদেশের সঙ্গে অংশীদারিত্বের সম্পর্ক এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার বার্তা দিয়েছিল। দুই দেশের সম্পর্ককে এগিয়ে নেওয়ার জন্য মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র নির্বাচন ত্রুটিপূর্ণ হওয়ার পরেও নতুন সরকারের সাথে কাজ করার অঙ্গীকার ব্যক্ত করেছিল। শুধু তাই নয়, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সহকারী পররাষ্ট্রমন্ত্রী ডোনাল্ড লু বাংলাদেশ সফর করে অতীতের তিক্ততা ভুলে সামনের দিকে এগোনোর বার্তা দিয়েছিলেন। এ রকম একটি পরিস্থিতির মধ্যেই বাংলাদেশ-মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র সম্পর্ক নতুন মাত্রা পেতে যাচ্ছে বলে অনেকে ধারণা করেছিল। বিশেষ করে নির্বাচনের আগে এক বছর মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশের ওপর যে নানামুখী চাপ প্রয়োগ করেছিল সেই চাপের কারণে বাংলাদেশের নির্বাচন এবং সরকারের গ্রহণযোগ্যতা ইত্যাদি নিয়ে একটি সংকট তৈরি হয়েছিল। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী লীগ সরকারকে ক্ষমতা চ্যুত চায় এমন কথা স্বয়ং প্রধানমন্ত্রী জাতীয় সংসদে বলেছিলেন। কিন্তু তারপরও শেষ পর্যন্ত বিএনপি ছাড়া নির্বাচন হয়েছে। এবং এই নির্বাচন জাতীয় এবং আন্তর্জাতিক ভাবে গ্রহণযোগ্য হয়েছে।

নির্বাচনের পরপর মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশে বিনিয়োগ বাড়ানো, বাণিজ্য সম্প্রসারণের ওপর গুরুত্ব দিয়েছিল। কিন্তু এখন সেই ক্ষেত্রে প্রথম দফায় মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র পিছিয়ে পড়ল। ইতোমধ্যে সাবেক সেনাপ্রধান জেনারেল আজিজ আহমেদের বিরুদ্ধে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে। সামনের দিনগুলোতে এই বোয়িং বিক্রি না হওয়ার প্রভাব দুই দেশের কূটনৈতিক সম্পর্কের মধ্যে পড়বে কি না সেটি নিয়েও নানামুখী জল্পনা-কল্পনা চলছে।



প্রধান সম্পাদকঃ সৈয়দ বোরহান কবীর
ক্রিয়েটিভ মিডিয়া লিমিটেডের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান

বার্তা এবং বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ ২/৩ , ব্লক - ডি , লালমাটিয়া , ঢাকা -১২০৭
নিবন্ধিত ঠিকানাঃ বাড়ি# ৪৩ (লেভেল-৫) , রোড#১৬ নতুন (পুরাতন ২৭) , ধানমন্ডি , ঢাকা- ১২০৯
ফোনঃ +৮৮-০২৯১২৩৬৭৭