নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: 21/04/2018
একটা সময় ছিল মানুষ স্বপ্ন দেখতো তারা আকাশে উড়তে পারবে। আকাশে ওড়ার চেষ্টায় কত মানুষই না প্রাণ হারিয়েছে। আর আজ মানুষ স্বপ্নকে বাস্তবের রূপ দিয়েছে, উড়তে শিখেছে। এখন যাতায়াতের নিরাপদতম মাধ্যম বলা হয় বিমানকে। অবশ্য এই বিমান নিয়ে ষড়যন্ত্র তত্ত্বেরও শেষ নেই। তারপও এমন সব তত্ত্ব রয়েছে যা হাস্যকর। আবার অনেকগুলো ষড়যন্ত্রমূলক। আজ বিমান নিয়ে অদ্ভুত সব ষড়যন্ত্র তত্ত্ব সম্পর্কে জানাবো।
১। মেঘের মতো পথ
আমরা সচারাচরই দেখে বিমান উড়ে গেলে আকাশে একটা পথ রেখার সৃষ্টি হয়। এই রেখাকেই ষড়যন্ত্রের হাতিয়ার হিসেবে তুলে নেওয়া হয়েছিল। বলা হয়েছিল বিমান উড়ে জাওয়া সময় এক ধরনের রাসায়নিক পদার্থ ছড়িয়ে দেয়। এতেই এই রেখার সৃষ্টি হয়। সরকার পরিবেশ আর মানুষের মন নিয়ন্ত্রণে রাসায়নিক পদার্থ বিমান থেকে ছড়িয়ে দিচ্ছে। এই অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে ৭৭ জন বিজ্ঞানীর একটি দল গঠন করা হয়েছিল। অবশ্য ৯৮ শতাংশ বিজ্ঞানী এমন অভিযোগের কোনো প্রমাণ পাননি।
২। অক্সিজেন মাস্কে নেশার উপাদান
বলা হয়েছিল বিমানের অক্সিজেন মাস্কে নেশার উপাদান মেশানো থাকে। এবং ইচ্ছা করে বিমানের ভেতর বাতাসের চাপ কমিয়ে দিয়ে যাত্রীদের অক্সিজেন মাস্ক ব্যবহারে বাধ্য করা হয়। সত্য ঘটনা হলে বিমানের ভেতর বাতাসের চাপে তারতম্য ঘটতেই পারে। তখন অবশ্যই অক্সিজেন মাস্ক ব্যবহার করতে হবে। আর এতে কোনো নেশার উপাদান থাকে না। মাত্র কয়েক মিনিটের ব্যবধানে পাইলট বাতাসের চাপের তারতম্যকে স্বাভাবিক অবস্থানে আনতে পারেন। তাই বলে অক্সিজেন মাস্ক খুলে পরীক্ষা করতে যাবেন না। এতে মৃত্যু পর্যন্ত হতে পারে।
৩। বিমান বন্দরে এলিয়েনদের জন্য সুড়ঙ্গ
১৯৯৫ সালে ডেনভার আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর এক অদ্ভুত সুড়ঙ্গ বিশিষ্ট মালামাল ব্যবস্থা চালু করেছিল। কিন্তু এই ব্যবস্থা ব্যর্থ হয়। তারপরও বিমান বন্দর কর্তৃপক্ষ এর উন্নয়নে লাখ লাখ মার্কিন ডলার ব্যয় করে এই ব্যবস্থা টিকিয়ে রাখার জন্য। তখন গুজব ছড়িয়ে পড়েছিল এই সুরঙ্গে ভিনগ্রহ প্রাণী এলিয়েনদের আশ্রয় দেওয়া হয়। আর তাই এত অর্থ ব্যয় করা হচ্ছে এই ব্যবস্থা উন্নয়নে।
৪। ঘোরার মূর্তিতে প্রাণ সঞ্চার
ডেনভার আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে একটি নীল বর্ণের ঘোরার মূর্তি তৈরি করা হচ্ছিল। গুজব রটানো হয় এই মূর্তিতে নাকি প্রাণ সঞ্চার হবে। পৃথিবী ধ্বংসের সময় জীবন্ত হয়ে উঠবে মূর্তিটি। সেই সঙ্গে রটে যায় এই মূর্তিতে খারাপ কোনো শক্তি রয়েছে। আর এর জের ধরে মূর্তির কাজ চলার সময়ই এর ভাস্কর লুই জিমেনেজকে হত্যা করা হয়।
৫। দুর্ঘটনায় মৃত্যু ফাঁদ
বিমান দুর্ঘটনায় পড়লে একটি বিশেষ কায়দায় বসতে বলা হয়। একে বলা হয় ব্রেইস পজিশন। এই পজিশনে আরোহীকে দুই পা বিমানের মেঝেতে রেখে সামনের সিটে মাথা ঠেকিয়ে বসতে হয়। বলা হয়েছিল এই ভাবে বসলে সামনের সিটের আঘাতে যাত্রীদের ঘাড় মটকে যাবে। তখন আহত কিংবা নিহত যাত্রীদের পরিবার ইনস্যুরেন্সের টাকা পাবে না বলেও রটিয়ে দেওয়া হয়। পরে ১৯৮৯ সালের এক ভয়ংকর বিমান দুর্ঘটনার পর গবেষকরা বলেন সামনের সিটে মাথা ঠেকিয়ে রাখলে দুর্ঘটনায় মস্তিষ্ক কম ক্ষতিগ্রস্ত হয়।
৬। এলিয়েনরা বিমান ডুবিয়ে দিচ্ছে
এক দশকের মধ্যে আটলান্টিক মহাসাগরের বার্মুডা ট্রায়াঙ্গলে কয়েক ডজন নৌকা ও বিমান রহস্যজনক ভাবে হারিয়ে যায়। এর মধ্যে যুক্তরাষ্ট্রের নেভির পাঁচটি স্কোয়াড্রনও ছিল। তখন মনে করা হতো কোন অতি প্রাকৃতিক শক্তির কবলে পড়ে এগুলো সাগরে ডুবে গেছে। তাই এগুলোর কোন অস্তিত্ব খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না। এর পরিপ্রেক্ষিতে বলা হয় এলিয়েনরা বিমানগুলো ডুবিয়ে দিয়েছে।
৭। মালয়েশিয়া ফ্লাইট ৩৭০ সম্পর্কে পিটবুলের ধারণা
২০১৪ সালের মার্চে মালয়েশিয়ার ফ্লাইট ৩৭০ রহস্যজনক ২৩৯ জন যাত্রী নিয়ে উধাও হয়ে যায়। উদ্ধারকারী দল ভারত মহাসাগরে ওই বিমানের মাত্র ৩টি টুকরা খুঁজে পেয়েছিল। পিটবুল ও শাকিরার
গান ‘গেট ইট স্টার্টেড’ এ এই বিমান হারিয়ে যাওয়ার সংকেত ছিল। এছাড়া আরেকটি দল বলেছিল ভিন গ্রহের প্রাণীরা বিমানটিকে টেনে নিয়ে গেছে।
৮। আপনাকে শুষে নিতে পারে বিমানের টয়লেট
একবার বলা হলো বিমানের টয়লেটে ফ্লাশ করবেন না। এতে বিমানের টয়লেট আপনাকে শুষে বিমান থেকে বাইরে ফেলে দিতে পারে। অনেকে বিশ্বাসও করেছিল। কিন্তু এমন ঘটনা কখনো ঘটেনি। আর ঘটবেই কীভাবে। এটা অসম্ভব।
৯। এমেলি ইয়ারহার্ট রহস্য
বিমান যোগে বিশ্ব ভ্রমণে গিয়ে এমেলি ইয়ারহার্ট রহস্যজনক ভবে হারিয়ে গেলেন। জনমনে তখন একটাই প্রশ্ন এমেলি কোথায়? তখন গুজব ছড়িয়ে পড়ে বিমান দুর্ঘটনায় পড়লেও তিনি বেঁচে আছেন। জাপানে তিনি দিন অতিবাহিত করছেন। তাঁর স্বামী পরে তদন্ত করে জানেন বিমানের ফুয়েল শেষ হয়ে জাওয়ায় এমিলির বিমানটি বিধ্বস্ত হয়।
১০। জুনিয়র কেনেডির বিমান দুর্ঘটনার মূল হোতা হিলারি
১৯৯৯ সালে এক বিমান দুর্ঘটনায় জন এফ. কেনেডি জুনিয়রের মর্মান্তিক মৃত্যু হয়। এই সুযোগে ষড়যন্ত্রকারীরা রটিয়ে দিল এই বিমান দুর্ঘটনার পেছনে কল কাঠি নেড়েছে হিলারি ক্লিনটন স্বয়ং। দুই জনই নিউ ইয়র্কের সিনেটের সিটের জন্য লড়ছিলেন। পর তদন্তে এই দুর্ঘটনার সঙ্গে হিলারির কোনো সম্পৃক্ততা পাওয়া যায়নি।
বাংলা ইনসাইডার/ডিজি/জেডএ
প্রধান সম্পাদকঃ সৈয়দ বোরহান কবীর
ক্রিয়েটিভ মিডিয়া লিমিটেডের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান
বার্তা এবং বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ ২/৩ , ব্লক - ডি , লালমাটিয়া , ঢাকা -১২০৭
নিবন্ধিত ঠিকানাঃ বাড়ি# ৪৩ (লেভেল-৫) , রোড#১৬ নতুন (পুরাতন ২৭) , ধানমন্ডি , ঢাকা- ১২০৯
ফোনঃ +৮৮-০২৯১২৩৬৭৭