‘ভাইয়া ঢাকা খাইছে, এখন লন্ডন খাইতাছে’

লন্ডনে বিএনপি নেতা কর্মীদের উপর চড়াও হয়েছে ব্রিটিশ পুলিশ। আজ সারাদিনে বিএনপির অন্তত দুই ডজন নেতাকর্মীকে লন্ডন পুলিশ জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আটক করেছে। যুক্তরাজ্যে যারা বিএনপি করে তাঁদের মধ্যে এখন ভয় এবং আতঙ্ক বিরাজ করছে। আর এরা সবাই ক্ষেপেছে লন্ডনে অবস্থানরত বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক জিয়ার উপর। বিএনপি করেন, এরকম একজন লন্ডনে অবস্থানকারী শিক্ষার্থী বলেছেন,‘ভাইয়া ঢাকা খাইছে, এখন লন্ডন খাইতাছে।’

যুক্তরাজ্য শাখা বিএনপির একজন অন্যতম নেতা জানালেন, ‘বাংলাদেশে রাজনীতি আর যুক্তরাজ্য রাজনীতি সম্পূর্ণ ভিন্ন। এখানে আমরা পদ-পদবির জন্য রাজনীতি করি না। রাজনীতি করি প্রাণের টানে। সমমনাদের সঙ্গে দেখা সাক্ষাৎ করার জন্য।  দেশে রাজনীতি হয় অন্যের টাকায়। আর এখানে রাজনীতি করি নিজের পকেটের পয়সায়।’ তিনি বলেন, ‘এতদিন আওয়ামী লীগ-বিএনপি পাশাপাশি বসে রাজনীতি করতাম। আমাদের সামাজিক যোগাযোগ ছিল, আত্নীয়তা ছিল। একে অন্যের কর্মসূচিতে বাধা দিতাম না। শান্তিপূর্ণ কর্মসূচি করতাম। কিন্তু তারেক সাহেব এসে যেটা শুরু করেছেন, সেটা হলো বিদ্বেষ, সন্ত্রাস। এসব যুক্তরাজ্যে ছিল না। এসব হামলা তারেক সাহেব আমদানি করেছেন।’

লন্ডনে একজন হোটেল ব্যবসায়ী বিএনপি নেতা। আজ দুপুরে অলগেটে তাঁর হোটেলে পুলিশ রেইড করেছে। রোববার সংঘর্ষে ভিডিও ফুটেছে তাঁর ছবি ছিল। পরে তিনি থানায় গিয়ে মুচলেকা দিয়ে জামিন নিয়েছেন। তারেক জিয়ার উপর ক্ষুব্ধ এই বিএনপি নেতা বলেন, ‘শুধুমাত্র শান্তি আর নিরাপত্তার আশায় দেশের মায়া ত্যাগ করে এখানে পাড়ি জমিয়েছি। জিয়াউর রহমানকে পছন্দ করতাম জন্যই এখানে বিএনপির সঙ্গে জড়িয়ে ছিলাম। বাঙালিদের গেট টুগেদার হতো এখন তারেক এসে লন্ডনে পরিবেশকেও দুষিত করছে। তিনি কিছু ছেলেপেলেকে মাঠে নামিয়েছেন যারা এসব করে। এখন আমাদের রেপুটেশন নষ্ট হচ্ছে। তিনি বলেন, ‘আমার হোটেলে পুলিশ গেছে, এতে হোটেলের ইমেজ প্রবলেম হবে।’            

লন্ডনে চাকরি করেন একজন। মালিক ব্রিটিশ। ওই বাংলাদেশি প্রধানমন্ত্রীকে দেখতে হোটেলের সামনে গিয়েছিলেন। তারেক জিয়ার ক্যাডারদের তাণ্ডব শুরু হলে সে কিছু বুঝে উঠতে পারেনি। পুলিশ ভিডিও ফুটেজে তাঁর ছবি দেখে আজ সকালে তাঁর অফিসে গেছে। জিজ্ঞাসাবাদ করেছে। ওই প্রতিষ্ঠান আজই তাঁকে বাধ্যতামূলক ছুটি দিয়েছে। ওই তরুণ ক্ষুব্ধ হয়ে বলল- তারেক লন্ডনে বাংলাদেশের ভাবমূর্তি নষ্ট করছে। তার নিজস্ব ক্যাডাররা এখানে নান অপকর্ম করছে, আর বদনাম হচ্ছে বাংলাদেশিদের।’ তিনি বলেন, ‘লন্ডনে বাঙালিরা ছিল আইনের প্রতি সবচেয়ে শ্রদ্ধাশীল। তারেক আসার পর, কেউ কেউ নানা অপরাধে জড়াচ্ছে। এক সময় ব্রিটিশ সরকার এরকম সহিংসতার জন্য পাকিস্তানিদের ভিসা দেওয়া সীমিত করেছিল। ওরা কাজও সহজে পায় না। এখন তারেক যা করছে, এতে বাংলাদেশিদেরও একই অবস্থা হবে। দেশে মানুষের সর্বনাশ করে তারেক এখন প্রবাসীদের সর্বনাশ করছে।’

বিএনপির একজন নেতা বললেন, ‘লন্ডনে এসব করে তারেক কি প্রমাণ করতে চাইছেন, তিনি গডফাদার না ডন? সাহস থাকলে দেশে যেয়ে এসব করুক।’

সোমবার দিনভর লন্ডন পুলিশ ভিডিও ফুটেজ দেখে রোববার বিকেলে ঘটনার সঙ্গে জড়িতদের শনাক্ত করছে। এর ফলে যুক্তরাজ্য বিএনপিও বিপদে পড়েছে। কর্মীরা আতঙ্কে রয়েছে। এখন যুক্তরাজ্য বিএনপি ক্ষেপেছে তারেকরে ওপর।




Read In English: https://bit.ly/2Hmm4nb

বাংলা ইনসাইডার/জেডএ