ইনসাইড বাংলাদেশ

‘বিএনপি আমার পৈতৃক সম্পত্তি’

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশ: 25/04/2018


Thumbnail

বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক জিয়াকে দলের পদে রাখা না রাখা প্রশ্ন তিন ভাগে বিভক্ত হয়ে গেছে দলটির সিনিয়র নেতারা। দলের একাংশ মনে করছে, যেহেতু তিনি এখন রিফিউজি এবং দলে থাকায় তাঁর বিদেশে অবস্থান ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে পড়ছে, তাই এই মুহূর্তে দলের সব পদ থেকে তাঁর আনুষ্ঠানিক ভাবে সরে যাওয়া উচিত। এটা তাঁর এবং দলের জন্য মঙ্গল হবে। অন্যদিকে, অন্য অংশ মনে করছে এই মুহূর্তে দলীয় পদ ছাড়লে, তারেক সম্পর্কে সরকার যা বলছে, তাই প্রতিষ্ঠিত হবে। লন্ডনে পলাতক তারেক জিয়াও পদ ছাড়ার বিপক্ষে। তিনি দলের নেতাদের স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছেন, ‘বিএনপি আমার পৈতৃক সম্পত্তি। জিয়া পরিবার ছাড়া বিএনপির কোনো অস্তিত্ব নেই।’ জাতীয় ও আন্তর্জাতিক ভাবে প্রচণ্ড চাপ থাকা সত্ত্বেও তারেক জিয়ার পদ আঁকড়ে থাকায় বিএনপি কোনো সিদ্ধান্ত নিতে পারছে না বলে অভিযোগ করেছেন বিএনপির সিনিয়র নেতারা।

বিএনপির যেসব নেতা এখন তারেক জিয়াকে আড়ালে রাখতে চাইছেন তাদের মধ্যে রয়েছেন স্থায়ী কমিটির সদস্য ব্যারিস্টার মওদুদ আহমেদ, লে. জেনারেলর (অব.) মাহাবুবুর রহমান, ড. মঈন খান, অসুস্থ তরিকুল ইসলাম। স্থায়ী কমিটির বাইরেও মেজর (অব.) হাফিজউদ্দিন, এয়ার ভাইস মার্শাল (অব.) আলতাফ হোসেন চৌধুরীসহ আরও কয়েকজন। এদের মূল বক্তব্য হচ্ছে, তারেক জিয়া বিদেশে অবস্থান করছেন। একটি রাজনৈতিক দলের নেতৃত্ব দেওয়া সার্বক্ষণিক কাজ। সেটি তিনি করতে পারছেন না। তাছাড়া বেগম জিয়া কারান্তরীণ থাকায় তারই সামনে থেকে নেতৃত্ব দেওয়ার কথা, কিন্তু সেটা সম্ভব হচ্ছে না। তারেককে বাদ দেওয়ার পক্ষে নেতাদের দ্বিতীয় যুক্তি হলো, তারেক ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান হবার কারণে তাঁকে দেশে ফিরিয়ে আনার জন্য সরকার সব চেষ্টা করছে। অথচ পদে না থাকলে সরকার এ বিষয়টিকে গুরুত্ব দিতো না। এখন বেগম জিয়া জেলে, তারেক জিয়াকেও যদি দেশে ফিরিয়ে আনা হয় তাহলে বিএনপির রাজনীতি অস্তিত্বের সংকটে পরবে। তাঁদের তৃতীয় যুক্তি হলো, তারেক জিয়া এখন উদ্বাস্তু। এখন উদ্বাস্তু একটা দলের প্রধান হতে পারে না। এ ব্যাপারে তাঁদের শেষ যুক্তি হলো, আন্তর্জাতিক ভাবে তারেক জিয়াকে নিয়ে অনেক বিতর্ক রয়েছে। এজন্য আন্তর্জাতিক মহলের সমর্থন আদায়ের স্বার্থে আপাতত তারেক জিয়ার পদ থেকে সরে যাওয়া প্রয়োজন। এনিয়ে ব্যারিস্টার মওদুদ আহমেদ গতকাল তারেক জিয়ার সঙ্গে কথাও বলেছেন। এই মতদের বিএনপি নেতৃবৃন্দ বলছেন, পদ থেকে সরে যাওয়া মানেই বিএনপির কর্তৃত্ব হাতছাড়া নয়। 

কিন্তু এই মত মানতে রাজি নন মির্জা আব্বাস, গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরীর মত নেতারা। তারা মনে করছেন, জিয়া পরিবারকে রাজনীতি থেকে বিদায় করতেই এসব আয়োজন। বেগম জিয়াও তারেক জিয়ার জন্য বিএনপি এখনো ঐক্যবদ্ধ বলে এই নেতারা বিশ্বাস করেন। তাদের মতে, বেগম জিয়া ও তারেক জিয়ার জন্যই কর্মীরা এত ত্যাগ স্বীকার এখনো বিএনপির সঙ্গে রয়েছে। এই নেতাদের বক্তব্য হলো বেগম জিয়াকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে, এখন যদি তারেক জিয়াও পদে না থাকেন তাহলে বিএনপি দুর্বল হয়ে পড়বে। তারেক জিয়ার থাকা না থাকা প্রশ্নে নীরবতা পালন করছেন স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন, নজরুল ইসলাম খান এবং বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। তারা মনে করছেন, দলের মধ্যে ভাঙন সৃষ্টির জন্য সরকার এসব বিতর্ক উস্কে দিচ্ছে। গতরাতে গুলশানে দলীয় নেতাদের বলেছেন, এখন এসব নিয়ে কথা বলার সময় নয়। এই তিন নেতা এখন নীরবে প্রস্তুতি নিয়ে নির্বাচনে সরকারকে চমকে দেওয়ার কৌশল চূড়ান্ত করতে ব্যস্ত। মির্জা ফখরুল দলের নেতাদের বলেছেন, ‘বেগম জিয়া জেলে থাকুক, তারেক সাহেব বিদেশে থাকুক। আমরা ঐক্যবদ্ধ থেকে নির্বাচন করলে অবশ্যই জয়ী হবো।’ প্রশ্ন এসেছে এটাই কি বিএনপির তাহলে মূলধারা?



Read in English- https://bit.ly/2vNfYH3

বাংলা ইনসাইডার



প্রধান সম্পাদকঃ সৈয়দ বোরহান কবীর
ক্রিয়েটিভ মিডিয়া লিমিটেডের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান

বার্তা এবং বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ ২/৩ , ব্লক - ডি , লালমাটিয়া , ঢাকা -১২০৭
নিবন্ধিত ঠিকানাঃ বাড়ি# ৪৩ (লেভেল-৫) , রোড#১৬ নতুন (পুরাতন ২৭) , ধানমন্ডি , ঢাকা- ১২০৯
ফোনঃ +৮৮-০২৯১২৩৬৭৭