ইনসাইড পলিটিক্স

‘আমি তো আপনার পিএস নই’

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশ: 03/05/2018


Thumbnail

বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর তারেক জিয়াকে বললেন, ‘আমি তো আপনার পিএস (একান্ত সচিব) নই। আমি দলের মহাসচিব। এভাবে আমাকে ডিক্টেট করলে তো আমি দল চালাতে পারবো না।’ আজ দুপুরে তারেক জিয়ার টেলিফোনে নির্দেশনার এভাবেই জবাব দেন মির্জা ফখরুল।

ঘটনার সূত্রপাত, গতকাল বুধবার প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সংবাদ সম্মেলন নিয়ে। সংবাদ সম্মেলনের পরই লন্ডন থেকে তারেক জিয়া টেলিফোন করেন বিএনপি মহাসচিবকে। প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্যের প্রতিবাদ করতে বলেন। সে অনুযায়ী তারেক জিয়ার নেতৃত্ব নিয়ে প্রেস ব্রিফ করেন বিএনপি মহাসচিব। বলেন, ‘গঠনতন্ত্র অনুযায়ী তারেক জিয়া দলের নেতা হয়েছেন। মির্জা ফখরুল এও জানিয়ে দেন যে, ‘তারেক জিয়া তাঁর যোগ্যতার জন্য কাউন্সিলে নেতা নির্বাচিত হয়েছেন।’ সংবাদ ব্রিফিং এ তারেক জিয়ার দেশে ফেরা প্রসঙ্গেও কথা বলেন বিএনপি মহাসচিব। কিন্তু লন্ডনে পলাতক বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক জিয়ার মনো:পুত হয়নি ঐ বক্তব্য। দুপুরে আবার টেলিফোন করেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরকে। টেলিফোনে ক্ষুব্ধ তারেক সংবাদ ব্রিফিংয়ে মির্জা ফখরুলের ব্রিফিং এর সমালোচনা করেন। তাঁকে আরও আক্রমণাত্মক বক্তব্য রাখতে বলেন। এক পর্যায়ে বলেন, ‘আপনি নোট নেন।’ এরপর তারেক জিয়া বক্তব্যের বিভিন্ন পয়েন্ট নিয়ে কথা বলতে শুরু করেন। এ সময় বিরক্ত বিএনপি মহাসচিব ঐ মন্তব্য করেন। তিনি বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রীর অধিকাংশ বক্তব্যই পুরোনো। এসবের জবাব আমরা প্রতিনিয়তই দিচ্ছি। এসব বক্তব্যের জবাব নতুন করে দেওয়ার নেই। অবশ্য নাছোড়বান্দা তারেক পরে বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভীকে দিয়ে আরেকটা সংবাদ সম্মেলন করান।

বিএনপির মহাসচিব নন, অধিকাংশ বিএনপির সিনিয়র নেতাদের কাছে ‘তারেক জিয়া’ হলো বিরক্তির নাম। নাম প্রকাশ না করার শর্তে বিএনপির একজন সিনিয়র নেতা বলেন, তারেক সাহেব মানুষকে সম্মান দিতে জানেন না। প্রায়ই তুচ্ছ তাচ্ছিল্য করে কথা বলেন। কারও মতামতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল নন। তিনি যা বোঝেন তা-ই দলের উপর চাপিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করেন। এভাবে তো দল চলতে পারে না।’

অন্য একজন নেতা বলেন, ‘উনি শুধু ব্যস্ত তাঁর নিজের বিভিন্ন ইস্যু নিয়ে। তাঁর পাসপোর্ট, তাঁর মামলা ইত্যাদি নিয়েই সারাদিন নির্দেশ দিতে থাকেন। তিনি ছাড়া তাঁর কাছে আর কোনো কিছুই মুখ্য নয়।’

এর আগেও তাঁর সঙ্গে ব্যারিস্টার মওদুদ আহমেদ এবং লে. জেনারেল (অব.) মাহাবুবুর রহমানের কথা কাটাকাটি হয়েছিল। ক্রমশ সিনিয়র নেতারা তাঁকে এড়িয়ে যাওয়া শুরু করেছে। সিনিয়র নেতাদের একজন বলেছেন, ‘তারেক সাহেব আমাদের সঙ্গে কথা বলেন, চাকর বাকরের মতো। প্রায়ই তিনি এমন সব শব্দ ব্যবহার করেন যা অশোভন। তাঁর চরিত্রের এই সব দিক পরিবর্তন না হলে, তার সঙ্গে রাজনীতি করা কঠিন হয়ে পরবে।’

বিএনপির কিছু তরুণের মধ্যে অবশ্য তারেক জিয়া এখনো অনেক জনপ্রিয়। বিশেষ করে অঙ্গসংগঠন গুলোতে তারেকের প্রভাব একচ্ছত্র। সিনিয়র নেতারা এখন এটাও ভয় পান। তারেকের সঙ্গে যুক্তি দিয়ে কেউ কথা বললেই দু-একদিন পরই তাঁর উপর চড়াও হন বিএনপির তরুণ তুর্কীরা। বেগম জিয়া গ্রেপ্তার হওয়ার পর এরকম অন্তত তিনজন নেতা দলের অঙ্গসংগঠনের কর্মীদের হাতে নাজেহাল হয়েছেন। মির্জা ফখরুলের ভাগ্যেও কি সেরকম লাঞ্ছনা অপেক্ষা করছে? আজকের ঘটনার পর এনিয়ে বিএনপিতে চলছে নানা মুখরোচক আলোচনা।




Read in English- https://bit.ly/2HSb64O


বাংলা ইনসাইডার/জেডএ

 



প্রধান সম্পাদকঃ সৈয়দ বোরহান কবীর
ক্রিয়েটিভ মিডিয়া লিমিটেডের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান

বার্তা এবং বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ ২/৩ , ব্লক - ডি , লালমাটিয়া , ঢাকা -১২০৭
নিবন্ধিত ঠিকানাঃ বাড়ি# ৪৩ (লেভেল-৫) , রোড#১৬ নতুন (পুরাতন ২৭) , ধানমন্ডি , ঢাকা- ১২০৯
ফোনঃ +৮৮-০২৯১২৩৬৭৭