নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: 16/05/2018
আনুষ্ঠানিক ভাবে বিএনপি খুলনা সিটি নির্বাচনের ফলাফল প্রত্যাখ্যান করেছে। কিন্তু বিএনপির শীর্ষ নেতারা খুলনা নির্বাচন নিয়ে এখন আত্মসমালোচনা শুরু করেছেন। খুলনায় যেরকম নির্বাচন হয়েছে, সেই রকম নির্বাচন হয়েছে কুমিল্লায়। কিন্তু কুমিল্লায় জিতলেও খুলনায় বিএনপির রীতিমতো ভরাডুবি হয়েছে। বিএনপির স্থায়ী কমিটির নেতারা খুলনা নির্বাচনের পোস্টমর্টেমে ব্যস্ত। আর ব্যর্থতার জন্য মোটাদাগে বিএনপি ৫ টি কারণকে চিহ্নিত করেছে। এগুলো হলো:
এক. দলীয় কোন্দল। খুলনা বিপর্যয়ের জন্য বিএনপি প্রধান কারণ হিসেবে দেখছে দলীয় কোন্দলকে। মনোনয়ন বঞ্চিত সাবেক মেয়র মনিরুজ্জামান মনি এই নির্বাচনে নজরুল ইসলাম মঞ্জুর বিরুদ্ধে কাজ করেছে। শুধু মনি নয়, কমিশনার পদে মনোনয়ন বঞ্চিত অন্তত ৮ জন বিদ্রোহী প্রার্থী সরাসরি তালুকদার আব্দুল খালেকের পক্ষে কাজ করেছে। মনির সমর্থকদের বিরুদ্ধাচরণ খুলনায় ধানের শীষের পরাজয়ের প্রধান কারণ হিসেবে দেখছে বিএনপি।
দুই. ফল বিপর্যয়ের দ্বিতীয় কারণও সাবেক মেয়র মনিরুজ্জামান মনি। ২০১৩ থেকে এখন পর্যন্ত মেয়রের দায়িত্ব পালন করেছিলেন বিএনপির এই নেতা। কিন্তু এই পাঁচ বছরে খুলনা সিটি করপোরেশনে মনি কিছুই করতে পারেননি। বরং ২০০৮-২০১৩ তে খালেক যে উন্নয়নের জোয়ার এনেছিলেন, সেটিকেও মনি ধরে রাখতে পারেননি। তাই খুলনায় ভোটাররা বিএনপিকে ভোট দিয়ে খুলনাকে আবার উন্নয়ন বঞ্চিত করতে চায়নি।
তিন. খুলনায় বিএনপির বিপর্যয়ের একটি বড় কারণ হিসেবে বিএনপি দেখছে নেতৃত্বহীনতা। বেগম খালেদা জিয়া গ্রেপ্তার থাকায় নির্বাচন নিয়ে তিনি কোনো নির্দেশনা দিতে পারেননি। বিএনপির অধিকাংশ নেতাই মনে করেন, বেগম জিয়ার আলাদা একটা কারিশমা আছে, যা ভোটে বিএনপির প্লাস পয়েন্ট। খালেদা জিয়া ছাড়া অন্য কেউ যে বিএনপিতে জাতীয় নেতা নন এই নির্বাচনে সেটি প্রমাণিত হয়েছে।
চার. অর্থ সংকট। শুরু থেকেই এই নির্বাচনে অংশগ্রহণে রাজি ছিলেন না বিএনপি প্রার্থী নজরুল ইসলাম মঞ্জু। মূলতঃ অর্থনৈতিক কারণেই তিনি নির্বাচনে আগ্রহী ছিলেন না। বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক জিয়ার ব্যক্তিগত অনুরোধে নির্বাচনে রাজী হন মঞ্জু। সে সময় তাকে আশ্বাস দেওয়া হয়েছিল যে, টাকা দল দিবে। কিন্তু বিএনপি প্রার্থীর নির্বাচনী প্রচারণার বিভিন্ন পর্যায়ে অর্থনৈতিক সংকটের কারণে বন্ধ হয়ে যায়। এসময় টাকা চেয়েও তিনি পাননি।
পাঁচ. খুলনায় জামাতের বিশ্বাসঘাতকতা। খুলনা জামাত অধ্যুষিত এলাকা। জামাত দাবি করে খুলনা সিটিতে তাঁদের ৭০ হাজার ভোট আছে। কিন্তু প্রকৃত হিসেবে এই ভোট ৪০ হাজারের বেশি নয়। জামাত এবার নজরুল ইসলাম মঞ্জুকে ভোট দেয়নি। ভোটের দিন জামাতের কোনো প্রতিনিধিকেও পাওয়া যায়নি। জামাতের বিশ্বাসঘাতকতা খুলনার বিএনপির বিপর্যয়ের একটা বড় কারণ।
এই কারণগুলো আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনেও বিএনপির বিপর্যয়ের কারণ হতে পারে বলেই মনে করছেন বিএনপির শীর্ষ নেতারা।
বাংলা ইনসাইডার/জেডএ
প্রধান সম্পাদকঃ সৈয়দ বোরহান কবীর
ক্রিয়েটিভ মিডিয়া লিমিটেডের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান
বার্তা এবং বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ ২/৩ , ব্লক - ডি , লালমাটিয়া , ঢাকা -১২০৭
নিবন্ধিত ঠিকানাঃ বাড়ি# ৪৩ (লেভেল-৫) , রোড#১৬ নতুন (পুরাতন ২৭) , ধানমন্ডি , ঢাকা- ১২০৯
ফোনঃ +৮৮-০২৯১২৩৬৭৭