লিভিং ইনসাইড

ওয়েট ট্রেনিং কেন?

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশ: 21/05/2018


Thumbnail

ফিটনেস ঠিক রাখতে ওয়েট ট্রেনিং অত্যন্ত কার্যকর। বিশেষ করে একজন ২০ বছর উর্ধ্বের নারীর জন্য। ৩০ বছর পেরোলেই ফিটনেস হরমোন বা হিউম্যান গ্রোথ হরমোন কমতে শুরু করে। ৩০–৫০ বছরের মধ্যেই প্রায় ১০ শতাংশ পেশী ক্ষয় হয়ে যায়। আর ৬০–৭০ বছর বয়সের মধ্যে পেশীর জোর কমে প্রায় ১৫ শতাংশ৷ পরের ১০ বছরে কমে ৩০ শতাংশ৷ এভাবে কমতেই থাকে।

আর নারীদের শরীরে পেশীর তুলনায় চর্বি বেশি থাকে৷ সেই পেশীক্ষয়ে গেলে ক্যালোরি খরচের হার কমে যায়, টানটান ভাব কমে। পেটে ও কোমরে জমে বেশি৷ অঅস্তে আস্তে ডায়াবেটিস, হাই কোলেস্টেরল, হৃদরোগ, ফ্যাটি লিভার, অস্টিওপোরোসিস রোগ বাড়তে থাকে। পেশীর জোর কমে যাওয়ায় পড়ে যাওয়া, হাড় ভাঙা, দৈনন্দিন কাজকর্মে ব্যাঘাত ঘটে, অবসাদ বাড়তে থাকে।

সমাধান কি

এই অবস্থায় নারীদের সমাধান হতে পারে ওয়েট ট্রেনিং এবং প্রোটিন সমৃদ্ধ খাবার৷ বয়স যতোই হোক না কেন, সঠিক ভাবে ওয়েট ট্রেনিং শুরু করুন। এর ফলে ৩–৪ মাসের মধ্যে পেশীর শক্তি ২–৩ গুণ হতে পারে, পেশীও বাড়তে পারে। সঙ্গে ক্যালোরি কমে যায়, ফ্যাট কমে, ভালো ঘুম হয়, মানসিক চাপ কমে।  

নারীরা ওয়েট ট্রেনিং করলে চেহারা পুরুষালী ও পেশীবহুল হয়ে যায়, এ কথা সর্বদা ঠিক নয়।  পেশী ফোলার মূল কারণ টেস্টোস্টেরন৷  যা নারীর শরীরে ছেলেদের তুলনায় ১০ ভাগের এক ভাগ থাকে। পাশাপাশি আপার বডি মাসল ফাইবারের মাপ ও তাদের ডিস্ট্রিবিউশনও কম থাকে৷ তাই মেয়েদের পেশী সে ভাবে ফোলে না৷ ওজন একটু বাড়তে পারে।

জিমে যাওয়ার সময় না থাকলে

বর্তমানে সময়ের তো অভাব, তাই জিমে না গিয়ে বডি ওয়েট ট্রেনিং করুন৷ ৫ মিনিট স্পট জগিং, স্টেপ জাম্প বা স্কিপিং করলে বা নাচলে, স্কোয়াট, পুশআপ, প্লাঙ্ক বা হিপ ব্রিজ, ক্রাঞ্চেস বা বেঞ্চ ডিপ, ওয়াকিং লাঞ্জেস, জাম্পিং জ্যাক, বক্স জাম্পিং করা যেতেই পারে। ৷ বাচ্চাকে কোলে নিয়ে হাঁটলে, দু’–হাতে ভারী ব্যাগ বইলে, সিঁড়ি ওঠানামা করলে, এমনকী জোরে হাঁটলেও কার্ডিও–র পাশাপাশি স্ট্রেচিং ও পেশীর ওয়ার্কআউট হয়৷ তবে সবকিছুর আগে দরকার যথাযথ প্রস্তুতি৷

ওয়ার্কআউটের প্রস্তুতি কেমন

১. জেনে নিন কোন ব্যায়াম করতে পারবেন আর কোনটা পারবেন না।  

২. প্রচুর পানি খাওয়ার অভ্যাস করুন।

৩. আঘাত পেলে থেমে যেতে হবে।

৪. ভালো করে ওয়ার্মআপ করতে হবে৷

৫. পার্সোনাল ট্রেনার না রাখলে নিজেকে পারদর্শী হতে হবে।

জিমে গেলে

কার্ডিও, স্ট্রেচিং ও স্ট্রেন্থ ট্রেনিংয়ের মাধ্যমে ওয়ার্কআউট রুটিন করে নিন৷ শরীরের প্রতিটি মেজর মাসল গ্রুপ, যেমন- পা, হিপ, পিঠ–কোমর, বুক, পেট, কাঁধ ও হাতের স্ট্রেন্থ ট্রেনিং করা উচিত সপ্তাহে অন্তত দু’বার৷  

যে বডি পার্টের স্ট্রেন্থ ট্রেনিং হবে, তাকে তারপর বিশ্রাম নেওয়ার জন্য ৪৮ ঘণ্টা সময় দিতে হবে৷ কারণ, ওজন নিয়ে ব্যায়াম করলে পেশীতে যে চাপ পড়ে তাতে সূক্ষ্মভাবে টিস্যু ছিঁড়ে যায়৷ রিকভারি ফেজে সে সব জোড়ার ফলেই একদিকে নতুন পেশী তৈরি হয়, অন্য দিকে প্রচুর ক্যালোরি খরচ হয়ে চর্বি গলতে শুরু করে৷ এ কাজে ৪৮ ঘণ্ঢার মতো সময় লাগে৷

ভালো ওয়ার্ক আউট

১. ৫–১০ মিনিট জোরে হেঁটে ওয়ার্ম আপ করুন৷ কুল ডাউন করুন স্ট্রেচিং করে৷

২. সঠিক পদ্ধতিতে ব্যায়াম করুন৷ প্রথম দিকে কম ওজন নিয়ে আস্তে আস্তে করুন৷

৩. এক একটি বডি পার্টের জন্য ২–৩টি ওয়েট ট্রেনিংই যথেষ্ট৷ খেয়াল রাখবেন যাতে এক ঘণ্টা বা বড়জোর দেড় ঘণ্টা মধ্যে ওয়ার্কআউট শেষ হয়৷

৪. ওজন তোলা–নামানোয় তাড়াহুড়ো করবেন না৷

৫. এমন ওজন তুলুন যাতে শেষ দুটো রিপিটেশনের সময় পেশী ক্লান্ত হয়,  কিন্তু তাও ওজনটা তোলা যায়৷

৬. শ্বাস–প্রশ্বাসের দিকে নজর দিন৷ রেজিস্ট্যান্সের বিপরীতে ওয়ার্কআউটের সময় জোরে শ্বাস ছাড়তে হবে৷

খাওয়া–দাওয়া

১. ব্যায়ামের আগে চিনি ছাড়া কালো কফি খান৷ ওয়ার্কআউটের ক্ষমতা প্রায় ৩০ শতাংশ বাড়বে৷

২. হেভি ওয়ার্কআউটের ৩০–৪৫ মিনিট আগে অল্প করে কমপ্লেক্স কার্বোহাইড্রেটজাতীয় খাবার ও প্রোটিন খেতে হবে৷

৩. ব্যায়াম শেষ করার পর যত তাড়াতাড়ি সম্ভব গ্লুকোজ, কলা বা টাটকা ফলের রস খেতে হবে।

৪. দিনে কমপক্ষে ছয়বার হাঁটবেন। প্রোটিনসমৃদ্ধ সুষম খাবার খাবেন, দ্রুত ডিনার করে নেবেন।

সূত্র: আনন্দবাজার

বাংলা ইনসাইডার/এসএইচ/জেডএ



প্রধান সম্পাদকঃ সৈয়দ বোরহান কবীর
ক্রিয়েটিভ মিডিয়া লিমিটেডের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান

বার্তা এবং বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ ২/৩ , ব্লক - ডি , লালমাটিয়া , ঢাকা -১২০৭
নিবন্ধিত ঠিকানাঃ বাড়ি# ৪৩ (লেভেল-৫) , রোড#১৬ নতুন (পুরাতন ২৭) , ধানমন্ডি , ঢাকা- ১২০৯
ফোনঃ +৮৮-০২৯১২৩৬৭৭