ইনসাইড বাংলাদেশ

`আমাদের সন্তান ত্বকী হত্যার বিচার চাই’

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশ: 22/05/2018


Thumbnail

নারায়ণগঞ্জের আলোচিত মেয়র ডা. সেলিনা হায়াৎ আইভী। নগরের উন্নয়নসহ রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডে বরাবরই সরব তিনি। অতি সম্প্রতি হকার উচ্ছেদে পদক্ষেপ নিয়ে আলোচিত হয়েছে। আলোচিত এই নারী নেত্রী সম্প্রতি মুখোমুখি হয়েছিলেন বাংলা ইনসাইডারের।

প্রশ্নঃ আপনি দেশের প্রথম নারী মেয়র। একজন নারী হিসেবে এই দায়িত্ব পালন করতে গিয়ে কি কোনো বাধার মুখে পড়তে হয়েছে?

ডা. সেলিনা হায়াৎ আইভী: ২০০৩ সাল থেকে আমি দায়িত্ব পালন করছি। এই চেয়ারে বসে দায়িত্ব পালন করার সময় আমি নিজেকে কোনদিন নারী হিসেবে ভাবি নাই। হ্যাঁ, আমাদের পুরুষ শাসিত সমাজে নানা চড়াই উৎরাই মেনে নিয়েই আমাদের কাজ করতে হয়। অনেকবার সমস্যার সম্মুখীন হয়েছি, সেগুলো আমাকে ফেস করতে হয়েছে দিনের পর দিন। কখনও নারী হিসেবে একটু বেশি অসুবিধা হয়েছে আবার কোন সময় নারী হওয়ার কারণে আবার সুবিধাও পেয়েছি।

নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনে আপনি মেয়র হিসেবে কি ধরনের উন্নয়নমূলক কাজ করছেন?

আপনি যদি নারায়ণগঞ্জ শহর ঘুরে দেখেন তাহলে বুঝতে পারবেন। প্রচুর উন্নয়নমূলক কাজ হচ্ছে বিগত পাঁচ বছর ধরে। আমার তিনটি অঞ্চলের মধ্যে কদমরসুল ও সিদ্ধিরগঞ্জের অবস্থা খুবই খারাপ ছিল। ১৮/১৯ থেকে এই অঞ্চলের কোনো কাজ হয় নাই। যার কারণে আমার উন্নয়নের মূল ফোকাসটা ওইদিকেই দিতে হচ্ছে। এই দুই অঞ্চলের মানুষের চাহিদাও ছিল যে তাদেরকে ড্রেন এবং রাস্তাঘাট করে দিতে হবে। জলাবদ্ধতা নারায়ণগঞ্জের একটা বড় সমস্যা ছিল। এখনও একটু বৃষ্টি হলেই নারায়ণগঞ্জের রাস্তাঘাটে পানি জমে যায়। এই পানিতে নামতে আধা ঘন্টা থেকে এক ঘণ্টা সময় লাগে। বৃষ্টি হবার পর কত দ্রুত এই পানি শহর থেকে নিষ্কাশন করা যায় আমরা এখন সেই বিষয় নিয়ে ভাবছি।

আমরা ইতিমধ্যে শেখ রাসেল নগর পার্ক করেছি। আলি আহমেদ চুনকা মিলনায়তনটি পুনসংস্কার করেছি। অনেকগুলো খেলার মাঠের উন্নয়ন কাজে হাত দিয়েছি। নদীর ওই পারে কদমরসুল জোনেও আমরা মাঠ করে দিচ্ছি। আমরা একটি নভোথিয়েটার করার উদ্যোগে নিয়েছি। প্রতি ওয়ার্ডে না হোক অন্তত ২/৩ ওয়ার্ড মিলে একটি মাঠ খেলার উপযোগী করে গড়ে তোলার চেষ্টা করছি।

শহরের মাঝখান দিয়ে প্রবাহিত একটি খাল দীর্ঘ ৩০ বছর ধরে বন্ধ ছিল। সেই খালের একটি অংশ আমরা খনন করেছি। একশ ছেষট্টি কোটি টাকা ব্যয়ে ওয়ার্ল্ড ব্যাংকের সহযোগিতায় এই খালের আরও সাতটি অংশ খননের কাজ চলমান আছে। আমাদের প্রধান উদ্দেশ্যই হচ্ছে, পুকুর-খাল, গাছপালার সমন্বয়ে নারায়ণগঞ্জকে সবুজায়ন করা।

কিছুদিন আগে আপনি ফুটপাত দখলমুক্ত করতে গিয়ে কিছু সমস্যার সম্মুখীন হয়েছিলেন। সেই ঘটনায় আপনি আহতও হন। বর্তমানে আপনার শহরের ফুটপাতের কি অবস্থা?

ফুটপাতে মানুষের হাঁটাচলার অধিকার আছে। সাধারণ মানুষের সে অধিকার ফিরিয়ে দিতে গিয়ে আমার সাথে এই সমস্যা হয়েছিল। আমি ২০০৭ সালে হকার্সদের জন্য হকার্স মার্কেট করে দিয়েছি, সেইখানে সেই সময় ৬০০ থেকে ৭০০ হকার্সদের স্থান করে দিয়েছি। নারায়নগঞ্জের দশটি রোডে প্রায় তিন হাজার হকার বসে, প্রশাসন ও হকার্সদের কাছে আমার অনুরোধ ছিল অন্তত বঙ্গবন্ধু রোডে যেন কোন হকার্স না বসে। হকার্সদের জন্য বহুতল ভবন নির্মানের জন্য আমরা মন্ত্রনালয়ে প্রস্তাবনা দিয়েছি। হকার্সদের কিভাবে সহযোগিতা করা যায় আমি সেই চেষ্টা করছি।

নারায়ণগঞ্জের আলোচিত ৭ খুন ও ত্বকী হত্যা হয়েছে। নারাগঞ্জের মেয়র হিসেবে আপনি বিষয়গুলোকে কিভাবে দেখেন?

ইতিমধ্যে সেভেন মার্ডারের রায় হয়েছে। বর্তমানে উচ্চ আদালতে এই মামলা বিচারাধীন। ত্বকী হত্যা মামলাও উচ্চ আদালতে চলমান আছে। আমি মনে করি যেহেতু ত্বকী হত্যা একটি আলোচিত হত্যাকাণ্ড, তাই এই ঘটনার বিচার হওয়া উচিৎ। আর বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার আমলে বিচার বিভাগ স্বাধীনভাবে কাজ করছে তাই আমরা নারায়গঞ্জবাসীও আমাদের সন্তান ত্বকী হত্যার বিচার চাই।

নারায়নগঞ্জ দলীয় কোন্দলের কারণে প্রায় সময়ই আলোচিত হয়ে থাকে। সামনে জাতীয় নির্বাচনে এই কোন্দল কতটুকু প্রভাব ফেলবে বলে আপনি মনে করেন?

ডাঃ সেলিনা হায়াৎ আইভী: প্রায় প্রতিটা জেলায় আওয়ামী লীগের মত বড় একটি দলে এমন সমস্যা একটু থাকেই। নেতৃত্বের প্রতিযোগিতার কারণে এমনটি হয়। তবে জাতীয় নির্বাচনে তার কোন প্রভাব পড়বে না। ওই সময় তৃনমূল নেতা কর্মীদের চাপে অন্য নেতারাও ঠিক হয়ে যায়। যেহেতু জাতীয় নির্বাচন তাই আমাদের লক্ষ একটাই মাননীয় প্রধানমন্ত্রীকে পুণরায় প্রধানমন্ত্রী বানানো। দেশে উন্নয়নের ধারাবাহিকতা অব্যাহত রাখার জন্যই এই সরকারকে আবার প্রয়োজন। সুতরাং এইসব ছোটখাট সমস্যা ধোপে টিকবেনা।




বাংলা ইনসাইডার/আরকে/জেডএ



প্রধান সম্পাদকঃ সৈয়দ বোরহান কবীর
ক্রিয়েটিভ মিডিয়া লিমিটেডের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান

বার্তা এবং বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ ২/৩ , ব্লক - ডি , লালমাটিয়া , ঢাকা -১২০৭
নিবন্ধিত ঠিকানাঃ বাড়ি# ৪৩ (লেভেল-৫) , রোড#১৬ নতুন (পুরাতন ২৭) , ধানমন্ডি , ঢাকা- ১২০৯
ফোনঃ +৮৮-০২৯১২৩৬৭৭