ইনসাইড পলিটিক্স

নির্বাচন নিয়ে কি কথা হলো হাসিনা-মোদির?

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশ: 26/05/2018


Thumbnail

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির কি কথা হয়েছে? প্রধানমন্ত্রীর ভারত সফরে সবকিছু ছাপিয়ে এই প্রশ্নটিই এখন বড় হয়ে উঠেছে। শান্তিনিকেতনে শুক্রবার ‘বাংলাদেশ ভবন’ উদ্বোধনের অনুষ্ঠানিকতার পর, দুই নেতার একান্ত বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। জানা গেছে, দুই নেতা একান্তে ৩০ মিনিটেরও বেশি সময় কথা বলেন। এ সময় দুই দেশের অন্যকোনো প্রতিনিধি ছিলেন না। এই বৈঠক নিয়ে আনুষ্ঠানিক কোনো ব্রিফিং হয়নি। পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলম বলেছেন, ‘দ্বিপাক্ষিক স্বার্থ সংশ্লিষ্ট বিষয় এবং নিরাপত্তা প্রসঙ্গে বৈঠকে আলোচনা হয়েছে।’ তবে পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী নিজেই ঐ বৈঠকে অনুপস্থিত ছিলেন। প্রধানমন্ত্রীর ভারত সফরের আগে, এক প্রেস ব্রিফিং করেন পররাষ্ট্র মন্ত্রী। তাতে তিনি স্পষ্ট করেই বলেছিলেন, ‘নরেন্দ্র মোদি চাইলে নির্বাচন নিয়ে আলোচনা হতে পারে।’

বাংলাদেশে চলতি বছরের শেষ নাগাদ একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। নির্বাচন কমিশন ইতিমধ্যেই জানিয়ে দিয়েছে যে, আগামী অক্টোবরে তারা জাতীয় সংসদ নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করবে। জাতীয় নির্বাচনের ছয় মাস আগেও এই নির্বাচনে বিএনপির অংশগ্রহণ নিশ্চিত নয়। তার চেয়েও অনিশ্চিত, নির্বাচনের আগে বিএনপির চেয়ারপারসন বেগম জিয়ার মুক্তি। বেগম জিয়া ওই নির্বাচনে অংশগ্রহণ করতে পারবেন কি না তাও নিশ্চিত নয়। সরকারের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, নির্বাচনে বিএনপি অংশগ্রহণ করবে কিনা তা বিএনপির নিজস্ব বিষয়। আওয়ামী লীগ সভাপতি বেশ স্পষ্ট করেই বলেছেন বিএনপিকে নির্বাচনে আনার জন্য আওয়ামী লীগ কোনো উদ্যোগ নেবে না। অন্যদিকে, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রসহ পশ্চিমা দেশের পক্ষ থেকে, আগামী নির্বাচনে সকল দলের অংশগ্রহণ, অবাধ ও সুষ্ঠু করার চাপ আছে। ২০১৪ তেও পশ্চিমা দেশগুলো অংশগ্রহণমূলক নির্বাচনের উদ্যোগে নিয়েছিল। সে সময় জাতিসংঘের মধ্যস্থতার চেষ্টাও ছিল। কিন্তু এসব উদ্যোগে এবং চেষ্টার পরও বিএনপিসহ অধিকাংশ বিরোধী দল নির্বাচন বর্জন করে। জাতীয় পার্টিও অর্ধেক বর্জন করে দশম জাতীয় সংসদ। ১৫৪ টি আসনে ভোট ছাড়াই এমপি হন ক্ষমতাসীন ও বিরোধী দলের প্রার্থীরা। কিন্তু এতসব কিছুর পরও ভারত সরকার ঐ নির্বাচন মেনে নেয়। ভারতের পাশাপাশি রাশিয়াও বাংলাদেশের বর্তমান সরকারকে বৈধতা দেয়। ফলে ত্রুটিপূর্ণ নির্বাচন হবার পরও দশম জাতীয় সংসদ মেয়াদ পূর্ণ করতে যাচ্ছে। এবারও নির্বাচনকে প্রশ্নবিদ্ধ করতে বিএনপি চেষ্টা করবে বলেই মনে করছে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ। তাই দুটি বিষয়ে আওয়ামী লীগ ভারতের সহযোগিতা চাইতে পারে বলে মনে করছে রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা। প্রথমত, বিএনপি যেন বেগম খালেদা জিয়া এবং সহায়ক সরকারের ইস্যু ছাড়া নির্বাচনে আসে। এজন্য ভারত বিএনপির ওপর মনস্তাত্ত্বিক চাপ সৃষ্টি করতে পারে। বাংলাদেশের রাজনীতিতে ভারতীয় প্রভাব এখন ওপেন সিক্রেট। দ্বিতীয়ত, শেষ পর্যন্ত যদি বিএনপি নির্বাচনে অংশ না নেয় সেই নির্বাচন যেন গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের প্রত্যয়ন পত্র পায়, সেজন্য ভারতের সহযোগিতা। তাহলে বিএনপি ছাড়াও একটি নির্বাচন সরকার ও নির্বাচন কমিশন করতে পারে।

২০১৪ তে নির্বাচনের সময় ছিল কংগ্রেস সরকার, যারা আওয়ামী লীগের দীর্ঘদিনের বন্ধু দল। বিজেপির সঙ্গে অতীতে আওয়ামী লীগের সম্পর্ক ছিল না। কিন্তু মোদি দৃশ্যত বাংলাদেশ প্রশ্নে শেখ হাসিনার ওপর আস্থাশীল। মোদি-হাসিনা বৈঠকে অদৌ নির্বাচন ইস্যু নিয়ে আলোচনা হয়েছে কি না, কিংবা আগামী নির্বাচনে ভারতের ভূমিকা নিয়ে মোদির অবস্থান কি? তা দৃশ্যমান হবে কিছুদিনের মধ্যেই। তবে এটুক বলা যায়, বাংলাদেশের আগামী নির্বাচনের ব্যাপারে দুই নেতা কথা বলেছেন।  


বাংলা ইনসাইডার/জেডএ 



প্রধান সম্পাদকঃ সৈয়দ বোরহান কবীর
ক্রিয়েটিভ মিডিয়া লিমিটেডের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান

বার্তা এবং বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ ২/৩ , ব্লক - ডি , লালমাটিয়া , ঢাকা -১২০৭
নিবন্ধিত ঠিকানাঃ বাড়ি# ৪৩ (লেভেল-৫) , রোড#১৬ নতুন (পুরাতন ২৭) , ধানমন্ডি , ঢাকা- ১২০৯
ফোনঃ +৮৮-০২৯১২৩৬৭৭