ইনসাইড পলিটিক্স

তিন সিটি নির্বাচন বর্জন করবে বিএনপি?

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশ: 06/06/2018


Thumbnail

গাজীপুর সিটি নির্বাচনে খুলনার মতো পরিস্থিতি হলে পরের তিনটি সিটি নির্বাচন বর্জন করবে বিএনপি। বিএনপির শীর্ষস্থানীয় নেতারা এই তথ্য জানিয়েছেন। আগামী ২৬ জুন গাজীপুর সিটি করপোরেশন নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবার কথা। নির্বাচন কমিশন আগামী ৩০ জুলাই সিলেট, রাজশাহী এবং বরিশাল সিটি নির্বাচনের তারিখ নির্ধারণ করেছে।

বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন বলেছেন, ‘গাজীপুর নির্বাচন দেখে আমরা ওই তিন সিটির ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নেব।’ তাঁর মতে, ‘খুলনা স্টাইলে যদি গাজীপুর নির্বাচন হয়, তাহলে এই সরকারের অধীনে কোনো নির্বাচন নয়, সেই পথেই হয়তো আমাদের হাঁটতে হবে।’ ‘খুলনা স্টাইলে’ নির্বাচন কি জানতে চাওয়া হলে, বিএনপির এই সিনিয়র নেতা বলেছেন, ‘প্রথমত পুলিশ এবং প্রশাসন নিয়ে ত্রাস ও ভীতি সৃষ্টি হয়েছে। দ্বিতীয়ত, সুনির্দিষ্ট কয়েকটি কেন্দ্রে নজিরবিহীন কারচুপি হয়েছে। তৃতীয়ত, কিছু কিছু ভোট কেন্দ্রের সামনে আওয়ামী লীগের লোকজন এমন ভাবে অবস্থান নিয়েছে যে, ভোটের দিন অনেক ভোটার ভোট কেন্দ্রে যায়নি।’ তাঁর মতে, ‘অথচ বাইরে লোক দেখানো হয়েছে নির্বিঘ্নে ভোট হচ্ছে।’ শুধু ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন নয়, বিএনপির অনেক নেতাই বলছেন, ‘খুলনায় কারচুপির নতুন মডেল চালু হয়েছে।’ তাঁদের আশঙ্কা গাজীপুরেও একই ফর্মুলা অনুসরণ করা হবে।

গাজীপুরে বিএনপির মেয়র প্রার্থী হাসানউদ্দিন সরকার বলেছেন, ‘ইতিমধ্যে আমাদের লোকজনকে ধরপাকড় শুরু করা হয়েছে। লোকজন তাঁদের বাসা-বাড়িতে থাকতে পারছে না। নানারকম মামলা দিয়ে তাঁদের হয়রানি করা হচ্ছে।’

তবে, গাজীপুরে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, সেখানে বিএনপির মূল সমস্যা হলো অভ্যন্তরীণ কোন্দল। বর্তমান মেয়র অধ্যাপক আবদুল মান্নানের কর্মীরা এখন প্রকাশ্যেই জাহাঙ্গীর আলমের পক্ষে কাজ করছে।

আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেছেন, ‘খুলনা নির্বাচনে কারচুপির কথা যাঁরা বলে তাঁরা অর্বাচীন। কারণ, নির্বাচন পর্যবেক্ষকরা বলেছেন, নির্বাচন অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ হয়েছে।’ তিনি বলেন, ‘এখন দেশে উন্নয়নের পক্ষে জোয়ার এসেছে। তাই ভোটাররা আওয়ামী লীগকেই ভোট দিচ্ছে।’ ওবায়দুল কাদের আশাবাদ ব্যক্ত করে বলেন, ‘গাজীপুরে খুলনার চেয়ে বেশি ভরাডুবি হবে বিএনপির। এজন্য তাঁরা এখন থেকেই নানা অজুহাত খুঁজছে।’ আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, ‘বিএনপি হারলেই কারচুপির অভিযোগ করে, এটাই তাদের স্বভাব।’

বিএনপির অন্য একটি সূত্র বলছে, অভ্যন্তরীণ কোন্দল এবং জামাতের অনড় অবস্থানের কারণেই তিন সিটিতে বিকল্প খুঁজছে বিএনপি। রাজশাহী, সিলেট এবং বরিশালেই বিএনপির মেয়র পদ নিয়ে মতবিরোধ এখন প্রকাশ্য রূপ পেয়েছে। আবার রাজশাহী এবং সিলেটের যেকোনো একটি সিটি করপোরেশন মেয়র পদ চাইছে জামাত। জামাতের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, গাজীপুরে সরে গেলেও এই দুটি থেকে তারা কোনো অবস্থাতেই সরবে না। 

বিএনপির একজন নেতা বলেছেন, ঈদের পর থেকে যদি আমরা বড় আন্দোলন করতে চাই, তাহলে, তিন সিটি বর্জনের কোনো বিকল্প নেই। কারণ এই তিন সিটি নির্বাচন নিয়ে সরকার সারাদেশে একটি নির্বাচনী আবহ আনতে চায়।’ বিএনপির অন্য একজন নেতা বলেছেন, ‘সরকারি দল যে যেকোনো ভাবেই চার সিটিতে জিততে চাইবে। তাই এই নির্বাচনে অংশ নেওয়া অর্থহীন।’ বিএনপিতে ক্রমশ সিটি নির্বাচন বর্জনের পাল্লা ভারী হচ্ছে। তবে তিন সিটিতে বিএনপি কি করবে, তা বোঝা যাবে গাজীপুর সিটি নির্বাচনের পর।

Read in English- https://bit.ly/2sCKsr9

বাংলা ইনসাইডার/জেডএ



প্রধান সম্পাদকঃ সৈয়দ বোরহান কবীর
ক্রিয়েটিভ মিডিয়া লিমিটেডের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান

বার্তা এবং বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ ২/৩ , ব্লক - ডি , লালমাটিয়া , ঢাকা -১২০৭
নিবন্ধিত ঠিকানাঃ বাড়ি# ৪৩ (লেভেল-৫) , রোড#১৬ নতুন (পুরাতন ২৭) , ধানমন্ডি , ঢাকা- ১২০৯
ফোনঃ +৮৮-০২৯১২৩৬৭৭