ইনসাইড আর্টিকেল

বাবাদের জন্য একটি দিন

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশ: 17/06/2018


Thumbnail

সেই ছোটবেলায় হাঁটতে শেখা, তারপর শৈশবে নতুন খেলনার জন্য বায়না করা কিংবা কলেজে পড়তে দূরের শহরে এসে হাত খরচের জন্য ফোন করা – আমাদের জীবনের সবকিছুতেই যিনি আষ্টেপৃষ্ঠে জড়িয়ে থাকেন তিনি বাবা। জীবনের সকল দূর্যোগে যিনি আমাদের পরামর্শদাতার ভূমিকায় অবতীর্ণ হন, প্রত্যেকটি বিপদে-আপদে যিনি আমাদের মাথার উপর ছায়া হয়ে দাঁড়ান, আজ সেই বটবৃক্ষ বাবার জন্য উৎসর্গকৃত একটি দিন। আজ বিশ্ব বাবা দিবস।

প্রতি বছর জুন মাসের তৃতীয় রবিবার আন্তর্জাতিক বাবা দিবস পালিত হয়। আমেরিকার পশ্চিম ভার্জিনিয়ার ফেয়ারমন্টের এক গির্জায় ১৯০৮ সালের ৫ই জুলাই সর্বপ্রথম এই দিবসটি পালন করা হয়। এ দিবস পালনের কথা সর্বপ্রথম মাথায় আসে গ্রেস গোল্ডেন ক্লেটনের, ১৯০৭ সালে। সে বছর ডিসেম্বরে ভার্জিনিয়ার মোনোংয়াতে ভয়াবহ খনি বিস্ফোরণে সাড়ে তিনশোর বেশি পুরুষ প্রাণ হারান যারা বেশিরভাগই ছিলেন সন্তানের বাবা। এ ঘটনায় এক হাজার শিশু পিতৃহীন হয়। এই পিতৃহীন শিশুদের বেদনায় কাতর হয়ে ক্লেটন স্থানীয় মেথোডিস্ট গির্জার যাজককে খনি বিস্ফোরণে শহীদ বাবাদের সম্মানে নিজের বাবার মৃত্যুদিবসের সাথে মিল রেখে ১৯০৮ সালের ৫  জুলাই (রোববার) বাবা দিবস হিসেবে উৎসর্গ করার অনুরোধ জানান।  অন্যদিকে, ভার্জিনিয়ার এই বাবা দিবসের কথা না জেনেই ওয়াশিংটনের আরেক ভদ্র মহিলা সম্পূর্ণ নিজ উদ্যোগে ১৯১০ সালের ১৯ জুন বাবা দিবস পালন করেন। সনোরা স্মার্ট ডড নামের এই নারী গির্জার এক পুরোহিতকে একদিন মা সম্পর্কে প্রশংসা করতে শুনে তাঁর মনে হয় বাবাদের জন্যও কিছু করা উচিত। এই বোধ থেকে তিনি বাবা দিবস পালনের উদ্যোগ নেন।

বাংলাদেশে বাবা দিবস উদযাপনের ইতিহাস বেশি পুরনো নয়। বিশ্বায়নের যুগে পশ্চিমে উদযাপিত নানা দিবসের সাথে সাথে এই দিবসটিও বাংলাদেশে প্রবেশ করেছে মাত্রই কয়েক বছর আগে। তবে বাঙালি শিক্ষিত মধ্যবিত্ত শ্রেণি এই বাবা দিবসকে সাদরে গ্রহণ করেছে। প্রতি বছর নানা আয়োজনের মধ্য দিয়ে ছোট পরিসরে এই দিবস পালন করে থাকে অনেক পরিবার। এসব আয়োজনের মধ্যে থাকে বাবা দিবসের কেক কাটা, বাবাকে বিভিন্ন উপহার দেওয়া কিংবা বাবার সাথে কোথাও ঘুরতে যাওয়া। আপনিও বাবা দিবসে বাবাকে ছোটখাট উপহার দিতে পারেন। পাঞ্জাবি, মগ, মানিব্যাগ, ডায়েরি, বই এসবই হতে পারে বাবা দিবসের উপর। অর্থমূল্যে হয়তো খুব বেশি নয় কিন্তু এই ছোট ছোট উপহারগুলো পেয়েই আপনার বাবা কেমন খুশি হন সেটা আপনি নিজের চোখেই দেখবেই। কিংবা বাবাকে নিয়ে ঘুরতে চলে যেতে পারেন বাড়ির পাশেই কোথাও।

তবে বাবা দিবসের মূল কথা কিন্তু শুধু উপহার দেওয়া বা ঘুরে বেড়ানোই নয়। শরীরের রক্ত পানি করে আমাদের বড় করে তোলা আমাদের বাবাদের সাথে আমরা যেন কখনো খারাপ আচরণ না করি, কখনো তারা যাতে আমাদের দুর্ব্যবহারের শিকার না হন সেটা নিশ্চিত করতেও আমাদের প্রতিজ্ঞা করতে হবে।

পশ্চিমা সংস্কৃতির অনেক কিছুর মতো আমাদের দেশে ওল্ড হোম কালচারও প্রবেশ করেছে, যেখানে বসবাস করছেন অনেক বাবা। পশ্চিম থেকে আগত বাবা দিবস মহাসমারোহে উদযাপিত হোক কিন্তু পশ্চিমের ওল্ড হোম কালচার যাতে আমাদের দেশে গেঁড়ে বসতে না পারে সে ব্যাপারে আমাদের সচেষ্ট হওয়া উচিত। বছরের পর বছর আমাদের জন্য ত্যাগ স্বীকার করার পর ওল্ড হোমে একাকী বৃদ্ধ জীবন বাবাদের প্রাপ্য নয়। হুমায়ুন আহমেদ যথার্থই বলেছেন, পৃথিবীতে অনেক খারাপ পুরুষ আছে, কিন্তু একটিও খারাপ বাবা নেই।


বাংলা ইনসাইডার/ এসএইচটি/ জেডএ 



প্রধান সম্পাদকঃ সৈয়দ বোরহান কবীর
ক্রিয়েটিভ মিডিয়া লিমিটেডের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান

বার্তা এবং বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ ২/৩ , ব্লক - ডি , লালমাটিয়া , ঢাকা -১২০৭
নিবন্ধিত ঠিকানাঃ বাড়ি# ৪৩ (লেভেল-৫) , রোড#১৬ নতুন (পুরাতন ২৭) , ধানমন্ডি , ঢাকা- ১২০৯
ফোনঃ +৮৮-০২৯১২৩৬৭৭