নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: 03/07/2018
বাংলাদেশের রাজনীতি নিয়ে বরাবরই তৎপর ভারত ও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র। তাদের এই তৎপরতা এখনো অব্যাহত আছে। আর নতুন করে এতে যুক্ত হয়েছে চীন ও পাকিস্তান। চীন এখন এশিয়া মহাদেশের অন্যতম উন্নয়ন অংশীদার। বাংলাদেশেরও অনেক প্রকল্পে অর্থায়ন করছে চীন। আর এর ওপর ভরসা করেই বিএনপি নেতারা চীনকে দিয়ে সরকারের ওপর চাপ প্রয়োগের চেষ্টা করছেন। আর হঠাৎ করেই চীনের রাষ্ট্রদূত ও কূটনীতিকরা বাংলাদেশের বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের সঙ্গে কথাবার্তা বলা শুরু করেছেন। বাংলাদেশের রাজনীতিতে চীনকে সংশ্লিষ্ট করার ক্ষেত্রে পাকিস্তান দূতাবাসের হাত আছে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
গত রোববার রাজধানীতে অবস্থিত চীনের দূতাবাসের কর্মকর্তাদের সঙ্গে পাকিস্তান দূতাবাসের কর্মকর্তারা বৈঠক করেছেন। এই বৈঠকে বিএনপি স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. আব্দুল মঈন খান ও আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী উপস্থিত ছিলেন। বিএনপির ওই দুই নেতা দলটির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার মুক্তি এবং আগামী নির্বাচন কীভাবে অংশগ্রহণমূলক করা যায়, তা নিয়ে আলোচনা করেন।
সম্প্রতি চীনের রাষ্ট্রদূত আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরের সঙ্গে দেখা করেছেন। বলা হচ্ছে, চীনের অর্থায়নে বিভিন্ন প্রকল্প নিয়ে তাঁদের মধ্যে কথা হয়েছে। তবে বিভিন্ন সূত্রে জানা গেছে, ওই বৈঠকে ওবায়দুল কাদেরের সঙ্গে আগামী নির্বাচন নিয়েও কথা বলেছেন চীনা রাষ্ট্রদূত।
ঐতিহ্যগত ভাবেই চীন সাধারণত অন্যদেশের সঙ্গে অর্থনৈতিক কূটনীতি নিয়েই কাজ করে। কোনো রাজনৈতিক বিষয় নিয়ে তাদের আগ্রহ কম। তবে সাম্প্রতিক সময়ে বিশ্ব রাজনীতিতে আগ্রহী হয়ে উঠছে চীন। উত্তর কোরিয়াসহ বিশ্ব রাজনীতির বিভিন্ন ইস্যুতেই সম্প্রতি চীনকে বেশ তৎপর দেখা গেছে। এরই ধারাবাহিকতায় পাকিস্তানের প্ররোচনায় বাংলাদেশের রাজনীতিতে চীনের আগমন বলে মত বিশেষজ্ঞরা।
তবে, চীন ও পাকিস্তানের সঙ্গে বিএনপির যোগাযোগ ও বোঝাপড়াকে ভালোভাবে নিচ্ছে না ভারত। সম্প্রতি ভারত সফরের মধ্যে দিয়ে দেশটির সঙ্গে কিছু বিষয়ে সমঝোতায় আসার চেষ্টা করেন বিএনপি নেতারা। ওই সফরের পর বেগম জিয়ার মুক্তি ও আগামী জাতীয় নির্বাচন নিয়ে বিএনপির প্রতি কিছুটা দুর্বলতা দেখা যায় ভারতের। তবে চীন ও পাকিস্তানের সঙ্গে বিএনপি যোগের পর দলটির প্রতি ভারতের ওই দুর্বলতাও কেটে গেছে বলে মনে করেন রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা।
ভৌগলিক ভাবেই উপমহাদেশের রাজনীতিতে প্রভাব নিয়ে চীন ও ভারতের মধ্যে দ্বন্দ্ব প্রকট। বাংলাদেশের রাজনীতি নিয়ে চীনের হস্তক্ষেপের পর ভারতের এ বিষয়ে আরও আগ্রহী হয়ে ওঠাই স্বাভাবিক। জানা গেছে, বিএনপির সঙ্গে সমঝোতার বিষয়টি নিয়েও নতুন করে ভাবতে বসেছে ভারত।
বিশ্লেষকদের মতে, জাতীয় নির্বাচনের আগে বাংলাদেশের রাজনীতিতে এখন বিদেশি কূটনীতিকদের বড় লড়াই শুরু হয়েছে। বিএনপি মাঠের রাজনীতিতে না থাকলেও, কোনো কর্মসূচি না দিলেও কূটনীতিদের কাছে তাদের তোড়জোড় চলছেই। একটি বিষয় স্পষ্ট যে ভারত, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও চীনের অবস্থান একরকম নয়।
কূটনৈতিক মেরুকরণের পূর্ব ইতিহাস বলে, ভারত ও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রকে একসময় এক হয়ে যায়। অপরদিকে এক হতে দেখা যায় পাকিস্তান ও চীনকে। কিন্তু ড. ইউনূসসহ আওয়ামী লীগের কিছু বিষয় নিয়ে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের কূটনীতিকদের মধ্যে বিরূপ মনোভাব দেখা যায়। এখন মাঠের কূটনীতিতে শেষ পর্যন্ত কী হয় সেটাই দেখার বিষয়।
বাংলা ইনসাইডার/জেডএ
প্রধান সম্পাদকঃ সৈয়দ বোরহান কবীর
ক্রিয়েটিভ মিডিয়া লিমিটেডের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান
বার্তা এবং বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ ২/৩ , ব্লক - ডি , লালমাটিয়া , ঢাকা -১২০৭
নিবন্ধিত ঠিকানাঃ বাড়ি# ৪৩ (লেভেল-৫) , রোড#১৬ নতুন (পুরাতন ২৭) , ধানমন্ডি , ঢাকা- ১২০৯
ফোনঃ +৮৮-০২৯১২৩৬৭৭