ওয়ার্ল্ড ইনসাইড

কুয়াশা চাষেই আশার আলো

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশ: 05/07/2018


Thumbnail

চিলির কোকুইম্বো এলাকার ১৭৮টি কৃষিভিত্তিক সমিতির একটি লস টমস। এর প্রায় ২ হাজার ৮০০ হেক্টর (৭০০০ একর) এলাকাজুড়ে গম চাষ আর গবাদিপশু পালন করা হতো। কিন্তু দীর্ঘ একযুগের অনাবৃষ্টি আর খরার কারণে সেখানকার জলাধারগুলো শুকিয়ে গেছে এবং চাষাবাদ অসম্ভব হয়ে পড়েছে। যে কারণে জীবিকার সন্ধানে সেখানকার অধিকাংশ মানুষ অন্যত্র স্থায়ী হয়েছে। অনেকে শহরে অথবা পাশের তামার খনিতে কাজ নিয়েছে।

লস টমসের মানুষের জন্য আশার আলো হয়ে এসেছে পাহাড়চূড়ায় টাঙানো ৬০ স্কয়ার মিটার (৬৪৬ স্কয়ার ফুট) দীর্ঘ নেট। ৪ কিলোমিটার দূরের সাগর থেকে আসা কুয়াশা এসব নেটে বাধাপ্রাপ্ত হয়ে ফোঁটায় ফোঁটায় পাইপ দিয়ে পাহাড়ের পাদদেশে জমা হয়। আর এই পানিই গবাদিপশুর তৃষ্ণা মেটানোর একমাত্র উপায়। ব্যানারের মত এসব নেট থেকে দিনে প্রায় ৬৫০ লিটার (১৪০ গ্যালন) পানি সংগ্রহ করা যায়।

১৯৫০ এর দশক থেকেই চিলি কুয়াশা থেকে পানি সংগ্রহ করার জন্য গবেষণা করে আসছে।

হামবোল্ডট প্রবাহ থেকে সৃষ্টি হওয়া এই ঘনকুয়াশাকে ‘কামাঞ্চাকা’ বলা হয়, যা উপকুলীয় পর্বতমালা ও জোরালো বাতাসের কারণে আটকে রাখা সম্ভব হয়। ১৯৯০ সালে লস টমসের উত্তরের চুংগুঙ্গো গ্রামে এরকম নেট দিয়ে দিনে প্রায় ৮০০০ লিটার পানি সংগ্রহ করা সম্ভব হয়।

লস টমসের উত্তরের মাজাদা ব্লাংকায় ১৫০ স্কয়ার মিটারের কুয়াশাধারক দিয়ে জলপাইয়ের চাষ শুরু হয়েছে, যা মাজদা ব্লাংকায় ধূসর প্রান্তরের মাঝে একঝলক সবুজের মতোই উঁকি দিচ্ছে। জলপাই গাছগুলো বড় হলে সেগুলো থেকে বছরে ৭৫০ লিটার তেল উৎপাদন  করা সম্ভব হবে, যা প্রায় ১২০০০ ডলারে বিক্রি করা যাবে। পেনা ব্ল্যাংকার একটি ব্যক্তিমালিকানাধীন বিয়ার কারখানা এই কুয়াশার চাহিদা বুঝতে পেরে তাদের বিয়ারে এই পানি ব্যবহার করা শুরু করেছে, যার নাম এ্যট্রাপ্যানিব্লা।

কুয়াশাচাষের প্রকল্প যথেষ্ট লাভজনক হলেও প্রাথমিক পর্যায়ে সরকারি ভর্তুকির দরকার হয়। মাজাদা ব্লাংকায় সরকারি উন্নয়ন তহবিল থেকে ৫.৬ মিলিয়ন পেসো বরাদ্দ করা হয়েছে এসব নেট স্থাপনের জন্য, ব্যবহার অনুপযোগী হয়ে গেলে স্থানীয়দের ১লক্ষ পেসো খরচ করতে হবে এর প্রতিস্থাপনের জন্য। কোকুইম্বোতে এধরনের প্রকল্প স্থাপনের উপযোগী প্রায় ৪০ হাজার হেক্টর ভূমি আছে। যথাযথভাবে ব্যবহার করা গেলে সেখান থেকে সেকেন্ডে প্রায় ১৪০০ লিটার পানি সংগ্রহ করা সম্ভব, যা ওই এলাকার খাবার পানির চাহিদা মেটানোর জন্য যথেষ্ট।

চিলির পেরাল ওজো দে আগুয়া গ্রামে একটি কৃষিভিত্তিক সমিতির মাধ্যমে মানবসৃষ্ট কুয়াশাধারক বানানো হয়েছে যা দিয়ে আধা শুকনো অভয়ারণ্যে পানি সেচ দেওয়া হচ্ছে। এসব নেট পর্যটকদেরও আকর্ষণ করছে। কুয়াশাচাষ চিলিকে আশার আলোই দেখিয়েছে।


সূত্রঃ  দি ইকোনোমিস্ট

বাংলা ইনসাইডার/এএইচসি/জেডএ 



প্রধান সম্পাদকঃ সৈয়দ বোরহান কবীর
ক্রিয়েটিভ মিডিয়া লিমিটেডের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান

বার্তা এবং বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ ২/৩ , ব্লক - ডি , লালমাটিয়া , ঢাকা -১২০৭
নিবন্ধিত ঠিকানাঃ বাড়ি# ৪৩ (লেভেল-৫) , রোড#১৬ নতুন (পুরাতন ২৭) , ধানমন্ডি , ঢাকা- ১২০৯
ফোনঃ +৮৮-০২৯১২৩৬৭৭