কালার ইনসাইড

কর্মহীন জীবন কাটে কেমন?

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশ: 18/07/2018


Thumbnail

এককথায়, বেকার জীবন কেমন কাটে? প্রচন্ড ব্যস্ততা। সকাল- বিকেল টানা শুটিং, কারো ফোন ধরারও নেই পর্যাপ্ত সময়। এমন দিনও তো কেটেছে তাঁদের। আজ দিন বদল হয়েছে। শুটিং নেই, কালেভদ্রে থাকলেও উল্লেখকরার মতো না অনেকের। অনেকে তো একদম বেকার জীবন যাপন করছেন। কেমন, কীভাবে কাটে সময়? সে খোঁজ নেয়া হলো তারকাদের কাছ থেকে…

সিমলা:

ভারতের মুম্বাইয়ে হিন্দি ছবির শুটিং শেষে কিছুদিন আগে ঢাকায় ফিরেছেন জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারপ্রাপ্ত চিত্রনায়িকা সিমলা। ছবির নাম ‘সফর’। সিমলার অংশের শুটিং শেষ, ডাবিংয়ের কাজ বাকি আছে। ছবিতে স্মৃতিশক্তি লোপ পাওয়া একটা মেয়ের চরিত্রে অভিনয় করেছেন। মেয়েটা কথা বলে কম, অভিব্যক্তি দিয়ে অনেক কিছু বোঝাতে হয়। অভিনয়ের অনেক সুযোগ ছিল। মেয়েটার ওপরই গল্প। সিমলাও চুটিয়ে অভিনয় করেছেন। দেশে এসে নাম লেখালেন ‘কাকন বিবি’ নামে একটি চলচ্চিত্রে। কিন্তু সিমলার এই দুই ছবির খবর হয়েছে অনেকদিন পরে। তাঁর সর্বশেষ মুক্তি পেয়েছে ‘নেকাব্বরের মহাপ্রয়াণ’। ২০১৪ সালে মুক্তি পেয়েছিল ছবিটি। তারপর হাতে গোনা দুয়েকটি ছবির শুটিং হয়েছে। বেশিরভাগ সময়ই বেকার কাটে এ অভিনেত্রীর। ‘এটা সত্যি মাঝেমধ্যে আমি যুক্তরাষ্ট্রে গিয়েছি। সেখানে স্থায়ীও হতে চেয়েছি। বিষন্ন সময় কাটে বলা যায়। আমরা তো অনেক স্বপ্ন নিয়ে সিনেমায় এসেছি। ভালো কাজ করবো, মানুষ প্রশংসা করবে। এমনটাই তো স্বপ্ন ছিল। কিন্তু ভাগ্য খারাপ যে কাজের খরায় ভুগতে হয়। জানি না। অনেক ভেবেছি, জানার চেষ্টা করেছি, কেন আমাকে কাজে নেওয়া হয় না। কোনো উত্তর খুঁজে পাইনি। আমার যেভাবে কাজ করার কথা, যে অবস্থানে থাকার কথা, সেখানে আমি নেই। একজন অভিনয়শিল্পী হিসেবে আমি কী করতে পেরেছি, যাঁরা আমার ছবি দেখেছেন, সেই দর্শকেরা তা ভালো বলতে পারবেন। কাজের ব্যাপারে আমি কতটা সিনসিয়ার, যে পরিচালকদের ছবিতে কাজ করেছি, তাঁরা খুব ভালো করেই জানেন। নামী কয়েকজন পরিচালকের সঙ্গে কাজ করার সৌভাগ্য আমার হয়েছে। তাঁরা বলতে পারেননি, আমি সিমলা কখনো নির্ধারিত সময়ের পরে সেটে গেছি। এগুলো ভেবেই সময় কাটে।

সাহারা

‘জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার ২০১৬’ অনুষ্ঠানে অংশ নিয়েছিলেন সাহারা। সেখানেই সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান পর্বে নেচে দর্শক মাত করেছেন। এর মানে কী তিনি আবার চলচ্চিত্রে ফিরতে চাচ্ছেন? এমন ইঙ্গিতই তিনি দিয়েছেন। ২০১৫ সালে ৭ মে প্রযোজক মনিরকে বিয়ে করেছিলেন এ চিত্রনায়িকা। এরপর স্বামী ও সংসার সামলাতে গিয়ে ছেড়ে দেন অভিনয়। চার বছর সংসারের পর সাহারা সিদ্ধান্ত নিয়েছেন, তিনি আবার চলচ্চিত্রে ফিরবেন। সেজন্য নিজেকে প্রস্তুত করছেন ‘প্রিয়া আমার প্রিয়া’ ছবির এই নায়িকা।

বিয়ের পরে শুধু সংসারই নয়। নিজের ব্যবসায় সময় দিতে গিয়ে শরীরের নিয়ন্ত্রণ হারিয়েছেন। অনেকটা মুটিয়ে গেছেন তিনি। খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, আবার নায়িকা হিসেবে কামব্যাক করতে চাচ্ছেন একসময়ের আলোচিত এই নায়িকা।

সেজন্য নিয়মিত জিমে যাচ্ছেন, ঘাম ঝড়াচ্ছেন আগের মতো আকর্ষণীয় ফিগার ফিরে পেতে। ‘সিনেমাকে তো মিস করতামই। কিন্তু সংসার নিয়ে ব্যস্ত ছিলাম। পাশাপাশি নিজের ব্যবসা প্রতিষ্ঠান নিয়ে ব্যস্ত হয়ে পড়ি। আমার সিনেমার ক্যারিয়ার যখন স্টপ করি। সত্যি বলতে তখন আমার অবস্থাও ভালো ছিল না। সেটা নানা রাজনীতির কারণে। এখন ভালো সিনেমা হচ্ছে। আমি আবার সিনেমায় ফিরতে চাই। ’

ইপশিতা শবনম শ্রাবন্তী

২০১০ সালের ২৯ অক্টোবর শিক্ষক খোরশেদ আলমের সঙ্গে বিয়ের কিছুদিন পর আমেরিকায় থিতু হন শ্রাবন্তী। দীর্ঘদিন পর সম্প্রতি দুই সন্তান রাবিয়াহ আলম ও আরিশা আলমকে নিয়ে দেশে ফিরেছেন তিনি। গত ৭ মে শ্রাবন্তীর ঠিকানায় বিচ্ছেদের নোটিস পাঠিয়েছেন তাঁর স্বামী। ভাঙনের মুখে থাকা সংসার নিয়ে তিনি খুব ‘বিষণ্ন’ তিনি। আর কি কখনো অভিনয়ে দেখা যাবে না? ২০১০ সালে নূরুল আলম আতিকের ‘ডালিম কুমার’ নাটকে শেষবারের মতো ছোটপর্দায় দেখা গেছে তাকে।

তিনি বলেন, ‘বাচ্চা রেখে কোথাও গিয়ে শ্যুটিং করতে ভালো লাগে না। আমি পারি না।.. কাজ করাটা কমিটমেন্টের ব্যাপার। কারও সঙ্গে ফাজলামি করতে পারব না। পরে দু’ একটা কাজ করতে পারি, তবে তা নিশ্চিত নয়।’

অভিনয় জীবনকে মিস করেন না? শ্রাবন্তী বলেন, ‘ওই রকম না। বাচ্চা-কাচ্চা নিয়েই বেশি ভালো থাকি। ওদেরকে রেখে কিছু করার মানসিকতা নেই।’

অবসরটা আমেরিকায় কেমন কাটতো? ‘সারাদিন বাচ্চাদের নিয়েই কাটতো। আমি যে কখনো সেলিব্রেটি ছিলাম। সেটা ভুলে গিয়ে একজন আদর্শ মায়ের মতো সময় কাটাতাম। আট দশজন সাধারণ মায়ের মতো আমার ঘুম ভাঙ্গতো। বাচ্চা- স্বামীর জন্য নাস্তা বানাতাম। স্কুলে নিয়ে যেতাম বড় মেয়েকে। অনেকে অনেক সময় এসে বলতেন আরে আপনি শ্রাবন্তী আপু না? অভিনয়ে দেখছি না অনেকদিন। আমেরিকার প্রবাসী বাঙালী তো জানতেনও না আমি বিয়ে করে থিতু হয়েছি। তাদের বুঝিয়ে বলতাম। এভাবেও কেটেছে অনেকদিন। আমার জীবনে যা হয়েছে, তা নিয়ে আমি খুশি। আমার ক্যারিয়ারের জন্য কোন দু:খ নেই’।

আঁচল

ঢালিউডের প্রথম সারির নায়িকা আঁচল আঁখি। অনেকদিন ধরেই চলচ্চিত্র থেকে দূরে সরে আছেন আঁচল। ইদানিং আবারও বিভিন্ন অনুষ্ঠানে দেখা যাচ্ছে তাকে। কাজহীন জীবন কেমন কাটে? ‘মাঝেমধ্যে প্রচন্ড হতাশায় ভুগেছি। অনেকদিন নতুন কোনও ছবিতেই চুক্তিবদ্ধ হতে পারিনি। যে ছবিগুলো হাতে ছিল, সেগুলোও হাতছাড়া হয়েছে। এমনও হয়েছে আমার ঢাকা ছাড়তে হয়েছে। বাসা ভাড়া দেওয়ার অবস্থাও নেই। ছোট ভাই এর পড়াশুনার খরচও মেটাতে পারছিলাম না। তাই মা ও ভাইকে নিয়ে গ্রামের বাড়ী গিয়েছিলাম। আমি ফিল্মের নোংরা রাজনীতির শিকার হয়েছি। একের পর এক ছবিতে চুক্তিবদ্ধ হয়েছি; কিন্তু শ্যুটিংয়ের আগেই খবর আসে, আমার জায়গায় অন্য কাউকে নেওয়া হয়েছে। ফেরত দিতে হয়েছে সাইনিং মানিও। ’ এসব কারণে একটা সময় বেশ হতাশায় ভুগেছেন এ নায়িকা। ভেবেছেন এই হয়তো শেষ ক্যারিয়ার। কিন্তু তিনি ঘুড়ে দাড়াতে চান। সামনে তাঁর ‘দাগ’ সিনেমা মুক্তির অপেক্ষায়।

শাবনুর

আমি ফ্রি কে বললো! আমার ছেলে যে পরিমাণ ব্যস্ত রাখে আমাকে। তা অবাক করার মতো। সে বাসায় নিজে একটা অফিসের মতো করেছে। সেখানে আমার কাজ করতে হয়। সে নিয়ম করে সেখানে যায়। আবার সেখানেই তার খেলাধুলা করে। ইস্কাটনে আমার বাসায় আসলে দেখতে পারবেন কি ব্যস্ত থাকি আমি। আর আমিও কাজে ফিরতে চাই। তবে সন্তান আর সংসার রেখে নিজের যত্ন নেয়া সম্ভব হয় না। ফলশ্রুতিতে ফেরাও হয় না। আর এখন ছেলেকে ঠিকমতো সময় দিয়ে বড় করতে চাই। ওর পড়াশুনার দিকে মনোযোগ দিতে চাই। ফিল্মে তো অনেক সময় দিলাম।



বাংলা ইনসাইডার/এমআরএইচ

 



প্রধান সম্পাদকঃ সৈয়দ বোরহান কবীর
ক্রিয়েটিভ মিডিয়া লিমিটেডের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান

বার্তা এবং বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ ২/৩ , ব্লক - ডি , লালমাটিয়া , ঢাকা -১২০৭
নিবন্ধিত ঠিকানাঃ বাড়ি# ৪৩ (লেভেল-৫) , রোড#১৬ নতুন (পুরাতন ২৭) , ধানমন্ডি , ঢাকা- ১২০৯
ফোনঃ +৮৮-০২৯১২৩৬৭৭