ইনসাইড থট

ই-পাসপোর্ট যুগে বাংলাদেশ

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশ: 22/07/2018


Thumbnail

বাংলাদেশের জন্য আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ দিন ছিল গত ১৯ জুলাই। হাতে লেখা পাসপোর্ট যুগ থেকে বেরিয়ে গত ৮ বছর ধরে আমরা সন্তুষ্ট ছিলাম মেশিন রিডেবল পাসপোর্ট (এমআরপি) নিয়েই। অনেকটা বাধ্য হয়েই শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন সরকার ২০০৮ সালে ক্ষমতায় এসে তড়িঘড়ি করে এমআরপি পাসপোর্ট চালু করে।

কারণ ইতিমধ্যে হাতে লেখা পাসপোর্ট থাকায় একাধিক দেশ বাংলাদেশীদের ভিসা দেওয়া বন্ধ করে দেয়। অনেক দেশ ভিসা দিলেও সেদেশের ইমিগ্রেশন তা মানতে রাজী হয়নি। ফলে ভিসা পেয়ে টিকিট কেটে বিদেশের অনেক বিমানবন্দর থেকে ফিরে আসার ঘটনাও ঘটে। বিদেশের অনেক শ্রমবাজার বন্ধ হয়ে যাওয়ার উপক্রম হয়। এ অবস্থায় ২০১০ সালে এমআরপি পাসপোর্ট চালু হয়।

আর এর ৮ বছর পর বাংলাদেশ ও জার্মান সরকারের জিটুজি চুক্তির আওতায় গত ১৯ জুলাই ই-পাসপোর্ট যুগে প্রবেশ করে বাংলাদেশ। বিশ্বের ১১৯তম দেশ হিসাবে বাংলাদেশের নাম উঠে সর্বাধুনিক পাসপোর্ট প্রযুক্তির কাতারে। চলতি বছরের ডিসেম্বর মাস থেকে সর্বাধুনিক প্রযুক্তির এ পাসপোর্ট বই হাতে পাওয়া যাবে। যা সংক্ষেপে ই-পাসপোর্ট, পূর্ণ নাম হচ্ছে ইলেক্ট্রনিক পাসপোর্ট।

এই বইয়ে থাকবে একটা চিপস। যাতে পাসপোর্টধারীর সব তথ্য জমা থাকবে। থাকবে তিন প্রকারের ছবিসহ পাসপোর্টধারীর দশ আঙুলের ছাপ, চোখের মণির ছবি ও ৪২টি নিরাপত্তা বৈশিষ্ট্য। এতে  থাকা পলিকার্বনেটেড ডেটা যা জাল করা সম্ভব হবে না। ২০০৮ সাল থেকেই যুক্তরাষ্ট্র, ইংল্যান্ড ও কানাডাসহ ১১৮টি দেশে ই-পাসপোর্ট চালু করেছে। 

বিশ্বের অনেক দেশে মেশিন রিডেবল পাসপোর্ট (এমআরপি) সাপোর্ট করে না।  ফলে সংশ্লিষ্ট দেশের ইমিগ্রেশনে বাংলাদেশি নাগরিকদের হয়রানির শিকার হতে হয়। বহিঃবিশ্বের সঙ্গে তাল মিলিয়ে আমাদের পাসপোর্টের নিরাপত্তা বাড়ানো ও সময়োপযোগী করা, ইমিগ্রেশন চেকপোস্টে বাংলাদেশ ও আগত বিদেশি নাগরিকদের যাওয়া-আসা সহজ ও সুষ্ঠু করার জন্য এ এক যুগান্তকারী  সিদ্ধান্ত সরকারের। ই-গেট (ইলেক্ট্রিক প্রবেশপথ) দিয়ে ইমিগ্রেশন চেক হলে পাসপোর্টধারীর সময় বাঁচবে ও হয়রানি কম হবে। ই-গেট ব্যবহার করে লাইনে না দাঁড়িয়েই ইমিগ্রেশন শেষ করা সম্ভব হবে ই-পাসপোর্টধারীদের।

জার্মান সরকারের সঙ্গে বাংলাদেশ সরকারের জিটুজি (সরকার টু সরকার) চুক্তির মাধ্যমে প্রকল্পের মাধ্যমে এ কাজ সম্পাদিত হচ্ছে। ই-পাসপোর্টের বাহক কোনো দেশের দূতাবাসে ভিসার আবেদন করলে কর্তৃপক্ষ স্বয়ংক্রিয়ভাবে আবেদনকারীর তথ্যের সঙ্গে ‘পাবলিক কি ডাইরেক্টরি (পিকেডি)’-তে সংরক্ষিত তথ্য যাচাই করে নেবে এবং আবেদন গ্রহণ করে ভিসা সিল লাগিয়ে দেবে বা জাল হলে বা সন্দেহ হলে বাতিল সিল দেবে। স্থল ও বিমানবন্দর ইমিগ্রেশন কর্তৃপক্ষ একই পদ্ধতি ব্যবহার করবেন। বয়সভেদে পাঁচ ও দশ বছর মেয়াদি পাসপোর্ট দেওয়া হবে। ছোট শিশুদের চেহারার দ্রুত পরিবর্তন হওয়ার কারণে তাদের ই-পাসেপার্ট ৫ বছর পর পর নবায়ন করত হবে।

ই-পাসপোর্ট বাংলাদেশের অগ্রযাত্রায় যুক্ত করল নতুন পালক। যা আন্তর্জাতিক পরিমন্ডলে বাংলাদেশকে সম্মানিত করবে, বাংলাদেশি নাগরিকরা হয়রানিমুক্ত হয়ে বিদেশ ভ্রমণ করতে পারবেন। বাংলাদেশের জন্য এটি একটি বড় অর্জন।

লেখক: সাংবাদিক

বাংলা ইনসাইডার



প্রধান সম্পাদকঃ সৈয়দ বোরহান কবীর
ক্রিয়েটিভ মিডিয়া লিমিটেডের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান

বার্তা এবং বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ ২/৩ , ব্লক - ডি , লালমাটিয়া , ঢাকা -১২০৭
নিবন্ধিত ঠিকানাঃ বাড়ি# ৪৩ (লেভেল-৫) , রোড#১৬ নতুন (পুরাতন ২৭) , ধানমন্ডি , ঢাকা- ১২০৯
ফোনঃ +৮৮-০২৯১২৩৬৭৭