কালার ইনসাইড

মহানায়কের প্রয়াণ দিবস আজ

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশ: 24/07/2018


Thumbnail

পুরো বাংলায় যাকে মহানায়ক বলি আমরা, তার আসল নাম কিন্তু অরুণ কুমার চ্যাটার্জী। আর আমরা তাকে চিনি এবং জানি উত্তম কুমার হিসেবে। হ্যাঁ, তিনিই আমাদের মহানায়ক উত্তম কুমার। আজ ২৪ জুলাই, মহানায়কের ৩৮ তম মহাপ্রয়ান দিবস। সেলুলয়েড জগতে তাঁর বিশাল ক্ষমতা আর প্রাপ্তির জন্য এই তারকা আজও সবার মনে জ্বলজ্বল করে জ্বলছে।

১৯২৬ সালের ৩ সেপ্টেম্বর কলকাতায় জন্মগ্রহণ করেন উত্তম কুমার। ক্ষণজন্মা এই নায়ক ১৯৮০ সালের আজকের দিনে মাত্র ৫৪ বছর বয়সেই বিদায় নেন। ‘ওগো বধূ সুন্দরী’ ছবির সেটে আকস্মিক হৃদযন্ত্রের ক্রিয়া বন্ধ হয়ে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন। বাংলা চলচ্চিত্র যেন হঠাৎ করেই কেমন স্থবির হয়ে যায়। আজও তাঁর জায়গা নিতে পারেনি কেউ।

বাংলা চলচ্চিত্রের কিংবদন্তি হয়ে ওঠাটা খুব সহজ ছিল না। অখ্যাত কলকাতা পোর্টে একজন সাধারণ কেরানি হিসেবে চাকরি শুরু করেন উত্তম কুমার। আর ধীরে ধীরে উত্তম পরিণত হন এক বিস্ময়ে। আজও তাঁর চলচ্চিত্রগুলো এতটুকু জনপ্রিয়তা হারায়নি।

‘মায়াডোর’ নামের ছবিতে অভিনয়ের মধ্য দিয়ে ক্যারিয়ারের সূচনা করেন মহানায়ক। কিন্তু নানা জটিলতার মুখে শেষ পর্যন্ত ছবিটি রিলিজ হয়নি। কিন্তু যার রক্তে মিশে আছে অভিনয়ের নেশা, সে তো হেরে যাবেন না। এরপর তিনি অভিনয় করেন ‘দৃষ্টিদান’ ছবিতে। নিতীন বসু পরিচালিত এ ছবিই প্রথমবারের মতো দর্শকের সামনে তুলে ধরে উত্তম কুমার। আর ‘বসু পরিবার’ ছবিটির মাধ্যমে একেবারে লাইমলাইটে চলে আসেন তিনি।

উত্তম কুমারের নাম আসলে তার সঙ্গে আসে তার অনবদ্য জুটি, সুচিত্রা সেনের নাম। তখনকার অখ্যাত সুচিত্রা বা রমার সঙ্গে ১৯৫২ সালে ‘সাড়ে চুয়াত্তর’ চলচ্চিত্রে অভিনয় করে বক্স অফিস কাপিয়ে দেন। সারাদেশে ছড়িয়ে যায় এই জুটির নাম।  আর এই চলচ্চিত্রের মাধ্যমেই মহানায়িকা সুচিত্রা সেন উত্তমের হাত ধরেই উঠে এলেন পর্দায়। পঞ্চাশ এবং ষাটের দশকে বহু ব্যবসাসফল চলচ্চিত্রে জুটিবদ্ধ হয়ে অভিনয় করেন তারা। হারানো সুর, পথে হল দেরি, সপ্তপদী, চাওয়া পাওয়া, বিপাশা, জীবন তৃষ্ণা এবং সাগরিকা’র মতো অসংখ্য কালজয়ী চলচ্চিত্রে অভিনয় করে আজও সৃতিতে অম্লান হয়ে আছেন এই মহানায়ক উত্তম কুমার। ১৯৫৭ সালে অজয় কর নির্মিত ‘হারানো সুর’ ছবিটি পুরো ভারতের দর্শককে মাতিয়ে তোলে, অর্জন করে রাষ্ট্রপতির সার্টিফিকেট অব মেরিট পুরস্কার। মজার তথ্য হচ্ছে, ছবির প্রযোজক ছিলেন উত্তম কুমার নিজেই।

সত্যজিৎ রায়ের ‘নায়ক’ এবং ‘চিড়িয়াখানা’ অভিনয় করে তাঁর তারকাজীবন আরও সমৃদ্ধ হয়। ‘চিড়িয়াখানা’ ছবিতে অভিনয়ের জন্য ভারতের জাতীয় পুরস্কার লাভ করেন তিনি। ‘নায়ক’ ছবিটিও ব্যাপক সমাদৃত হয়।

ব্যক্তি জীবনে এই মহানায়ক বেশ রোমাঞ্চ প্রিয় ছিলেন। সুচিত্রা সেন এবং সাবিত্রির সঙ্গে প্রেমের টানাপোড়েনে স্ত্রী অভিনেত্রী সুপ্রিয়া দেবীর সঙ্গে বিবাহ বিচ্ছেদ তার জীবনের আলোচিত ঘটনা। সুচিত্রা আর উত্তমের প্রেম নিয়ে আজও কম কথা হয়না। সুচিত্রার মোট ৬৩ টি ছবির মধ্যে ৩২ টির নায়ক ছিল উত্তম কুমার। হিন্দি চলচ্চিত্রও করেছেন বেশকিছু।

এই উপমহাদেশে তাঁর সৃষ্টি, তাঁর সেই চাহনি অঅর অমলিন হাসি আজও আমাদের মনে গেঁথে আছে। আজকের দিনে তার প্রতি আমাদের গভীর শ্রদ্ধাঞ্জলি।


বাংলা ইনসাইডার/এসএইচ 



প্রধান সম্পাদকঃ সৈয়দ বোরহান কবীর
ক্রিয়েটিভ মিডিয়া লিমিটেডের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান

বার্তা এবং বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ ২/৩ , ব্লক - ডি , লালমাটিয়া , ঢাকা -১২০৭
নিবন্ধিত ঠিকানাঃ বাড়ি# ৪৩ (লেভেল-৫) , রোড#১৬ নতুন (পুরাতন ২৭) , ধানমন্ডি , ঢাকা- ১২০৯
ফোনঃ +৮৮-০২৯১২৩৬৭৭