কালার ইনসাইড

সড়ক দূর্ঘটনায় যেসব তারকা প্রাণ হারিয়েছেন

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশ: 31/07/2018


Thumbnail

সড়ক দূর্ঘটনা কেড়ে নিতে পারে তারকারও দীপ্তি। পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে সড়ক দূর্ঘটনায় প্রান হারিয়েছেন তারকারা। বাংলাদেশের শোবিজ অঙ্গনেরও বিখ্যাত কয়েকজন ব্যক্তি সড়ক দূর্ঘটনায় প্রান হারিয়েছেন। সেসব তারকাদের মনে করা হল:

তারেক মাসুদ- মিশুক মনির

সড়ক দুর্ঘটনায় চলচ্চিত্রকার তারেক মাসুদ ও গণমাধ‌্যম ব‌্যক্তিত্ব মিশুক মুনীরসহ পাঁচজন নিহতের ঘটনায় বাসচালক জামির হোসেনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছে আদালত। বাংলাদেশকে নাড়িয়ে দেওয়া সেই দুর্ঘটনার ছয় বছর পর মানিকগঞ্জের অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ আল-মাহমুদ ফায়জুল কবীর এই রায় ঘোষণা করেন। ২০১১ সালের ১৩ আগষ্ট মানিকগঞ্জে এক ভয়াবহ সড়ক দুর্ঘটনায় এ দুজনসহ পাঁচজন প্রাণ হারান। নতুন চলচ্চিত্র কাগজের ফুল-এর শুটিংয়ের স্থান দেখতে তারেক মাসুদ ও মিশুক মুনীর সহকর্মীদের নিয়ে মানিকগঞ্জে যান। ফেরার পথে মানিকগঞ্জেই সড়ক দুর্ঘটনায় প্রাণ হারান তাঁরা।

আলমগীর কবির

ঠিক যে সময়ে তাকে বেশি দরকার ছিল চলচ্চিত্রে নবজাগরণের নেতৃত্ব দেওয়ার জন্য, ঠিক সেসময়েই তিনি চলে যান না ফেরার দেশে। ১৯৮৯ সালে বগুড়ায় একটা চলচ্চিত্র বিষয়ক অনুষ্ঠান শেষে ফেরার সময় নগরবাড়ি ফেরিঘাটে এক ট্রাকের ধাক্কায় গাড়ি সহ নদীতে পড়ে মারা যান এই কৃতি পরিচালক। কাকতালীয় ব্যাপার হলো, তার প্রিয় ছাত্র ছিলেন চিত্র পরিচালক তারেক মাসুদ। তিনিও তো সড়ক দুর্ঘটনাতেই প্রাণ হারান।

আলমগীর কবির মূলত একটি চলচ্চিত্র আন্দোলনের সূত্রপাত ঘটিয়ে দিয়ে গিয়েছিলেন। যার ধারা পরবর্তীতে অব্যাহত রেখেছেন তার ছাত্ররা, যেমন- তানভীর মোকাম্মেল, তারেক মাসুদ, মোরশেদুল ইসলাম প্রমুখ। এরা সকলেই আলমগীর কবিরের গড়া ‘ঢাকা ফিল্ম ইনস্টিটিউট’ ও ‘বাংলাদেশ ফিল্ম আর্কাইভ’- এর ‘ফিল্ম অ্যাপ্রিসিয়েশন’ কোর্সের ছাত্র ছিলেন। সবার মাঝেই তাই তিনি পরিচিত ‘চলচ্চিত্রাচার্য’ হিসেবে।

পল ওয়াকার

পল ওয়াকার ১৯৯৯ সালে ব্যবসা সফল চলচ্চিত্র ভার্সিটি ব্লুস-এ অভিনয়ের জন্য বিশেষভাবে পরিচিত হয়ে ওঠেন। চারদিকে তার খ্যাতি ছড়িয়ে পড়ে ফাস্ট অ্যান্ড ফিউরিয়াস চলচ্চিত্রে ব্রায়ান ও’কনার চরিত্রে অভিনয়ের জন্য। ২০১৩ সালের ৩০ নভেম্বর ওয়াকার এবং তার বন্ধু রজার রোডস গাড়ি দুর্ঘটনায় আক্রান্ত হন ভ্যালেন্সিয়া, সান্তা ক্লারিটা, ক্যালিফোর্নিয়ায়। ফিলিপাইনে হাইয়ান দুর্গতদের জন্য ওয়াকারের নিজস্ব সংস্থা ‘রিচ আউট ওয়ার্ল্ড ওয়াইড’ থেকে ফিরে আসার সময় এ দুর্ঘটনা ঘটে। আরোহী হিসেবে তিনি যে গাড়িতে অবস্থান করছিলেন হঠাৎ তার ব্রেক ফেল হয়। এমন সময় চালক নিয়ন্ত্রণ হারালে গাড়িটি রাস্তার পাশের লাইট পোস্ট ও গাছের সঙ্গে সজোরে আঘাত করে। সঙ্গে সঙ্গে গাড়িতে আগুন ধরে যায়। এতে তাদের দুজনেরই মৃত্যু হয়। তার বয়স হয়েছিল ৪১ বছর। ‘ফাস্ট অ্যান্ড ফিউরিয়াস’ সিনেমার জন্যও তিনি বিখ্যাত ছিলেন।

কালিকা প্রসাদ ভট্টাচার্য

সড়ক দুর্ঘটনায় মারা গেছেন জনপ্রিয় লোক সঙ্গীতশিল্পী ও কলকাতার দোহার ব্যান্ডের গায়ক কালিকা প্রসাদ ভট্টাচার্য। সঙ্গীতশিল্পী হিসেবে কলকাতার পাশাপাশি বাংলাদেশেও কালিকা প্রসাদের জনপ্রিয়তা রয়েছে। বাংলাদেশের মুক্তিপ্রাপ্ত ‘ভুবন মাঝি’ ছবিতে ‘আমি তোমারি তোমারি তোমারি নাম গাই’ নামের একটি গানে কণ্ঠ দিয়েছেন। তিনি ২০১৭এর ৭ই মার্চে হুগলী জেলার গুরাপ গ্রামের কাছে এক সড়ক দুর্ঘটনায় মারা যান।

পীযূষ গঙ্গোপাধ্যায়

ভারতীয় টিভি চ্যানেল স্টার জলসা ও জি বাংলার কল্যাণে তিনি হয়ে ওঠেছিলেন পরিবারের খুব কাছের এক মানুষ। পশ্চিমবঙ্গের সেই অভিনেতা ২০১৫ সালের ২৪ অক্টোবর মারা যান। সড়ক দুর্ঘটনায় আহত হয়ে তার ডান হাত, ডান পা এবং বুকের ডানদিকের পাঁচটি পাঁজর ভেঙে গিয়েছিল। মারাত্মক চোট ছিল মুখের দু’ পাশে ও কপালে। প্রচুর রক্তক্ষরণ হওয়ায় এবং হাড় ভেঙে অস্থিমজ্জা রক্তে মিশে যাওয়ায় রক্তে সংক্রমণ বাড়ছিল। হসপিটালে চারদিন জীবন-মরন যুদ্ধে হেরে বিদায় নেন পৃথিবী থেকে।

এছাড়াও প্রিন্সেস ডায়ানা (ব্রিটিশ রাজবধূ), স্টিভ প্রিফন্টাইনি (খেলোয়াড়), জেনি ম্যান্সফিল্ড (অভিনেত্রী), আদ্রে লিন্ডভাল (বিশ্বখ্যাত মডেল), গ্রেস কেলি (অভিনেত্রী), জেমস ডিন (অভিনেতা), লিসা লোপস (সংগীতশিল্পী), জ্যাক জনসন (বক্সার)- এর মতো তারকারা গাড়ী দূর্ঘটনায় মারা যান। অবাক করা বিষয়, তারা প্রত্যেকেই খুব অল্প বয়সে পৃথিবী ছেড়ে চলে যান।




বাংলা ইনসাইডার/এমআরএইচ

 

 



প্রধান সম্পাদকঃ সৈয়দ বোরহান কবীর
ক্রিয়েটিভ মিডিয়া লিমিটেডের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান

বার্তা এবং বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ ২/৩ , ব্লক - ডি , লালমাটিয়া , ঢাকা -১২০৭
নিবন্ধিত ঠিকানাঃ বাড়ি# ৪৩ (লেভেল-৫) , রোড#১৬ নতুন (পুরাতন ২৭) , ধানমন্ডি , ঢাকা- ১২০৯
ফোনঃ +৮৮-০২৯১২৩৬৭৭