কালার ইনসাইড

‘এই ছবিতে আমি ন্যাকামি করিনি’

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশ: 31/07/2018


Thumbnail

বর্তমান সময়ের জনপ্রিয় নায়িকা মাহিয়া মাহি। নিজের সংসারের প্রয়োজনে মাঝে বেশ খানিকটা সময় বিরতি নিয়েছিলেন তিনি। আবার ফিরেছেন শুটিংয়ে। ব্যস্ত আছেন নতুন সিনেমার প্রচারণায়। বর্তমান সময়ের গল্প নিয়ে মুখোমুখি হয়েছেন বাংলা ইনসাইডারের।

বাংলা ইনসাইডার: ঈদে কয়টি সিনেমা মুক্তি পাবে?

মাহি: তিন বছর পর আমার কোন ছবি ঈদে মুক্তি পাচ্ছে। ‘জান্নাত’ ও ‘মনে রেখ’ দুইটা তো এখন পর্যন্ত কনফার্ম শুনছি।

‘জান্নাত’ কেমন হলো?

আমার জীবনের অন্যতম সেরা কাজটি করলাম। এর আগে আমি নিজের কোন সিনেমা দেখে এত সন্তুষ্ঠ হইনি। এই ছবিটা দেখে আমার মনে হয়েছে জীবনে প্রথম কোন অভিনয় করলাম, যেখানে আমি ন্যাকামি করিনি। আর এই প্রথম কোন সিনেমা আমি হলে পরিবার ও শ্বশুড় বাড়ির মানুষদের নিয়ে যাবো। আমার মনে হয় সবাই সিনেমাটি দেখতে পারবে।

পরিচালকের সঙ্গে কাজের অভিজ্ঞতা কী?

মোস্তাফিজুর রহমান মানিকের সঙ্গে প্রথম কাজ। ওনার কাজ করতে গিয়ে আমার নিজেরই প্রেশার ফিল হত। উনি একদমই আমাকে কিছু বলতেন না। সকালে কল টাইম দেয় না। একদম আমার মতো করে ফ্রি করে দিয়েছেন। আমি যেন আমার কমফোর্ট জোন দিয়ে আমার সেরাটা দিতে পারি। আমি সকালবেলা ঘুম থেকে উঠে স্পটে হজির হতাম। আরেকটা ব্যাপার, এই পরিচালকের এর আগের ছয়টি ছবিতে শাবনুর আপু অভিনয় করেছেন। সাত নাম্বার ছবিতে আমি। শাবনুর আপুর জায়গা তো কখনোই নিতে পারবো না। তিনি তো লিজেন্ড। কিন্তু আমি চেষ্টা করেছি পরিচালকের মান রাখতে। যেন শাবনুর আপুর সঙ্গে কাজ করে যে কমফোর্ট তিনি পেতেন। সেটা যেন আমি দিতে পারি। সবকিছু মিলিয়ে অদ্ভূত মেধাবী একজন মানুষের সঙ্গে কাজ করেছি।

সাইমনের সঙ্গে কাজের অভিজ্ঞতা কী?

সাইমনের সঙ্গে এর আগেও অনেক কাজ হয়েছে। সত্যি বলতে এত বন্ডিং এর আগে হয়নি। তখন দুজনেই নতুন ছিলাম। যে যার মতো কাজ করতাম। এই সিনেমায় আমরা একে অপরের সেরাটা যেন বের করতে পারে। সেই চেষ্টা করেছি। এটা পুরো ইউনিটের একটি সিনেমা। আর সাইমন ড্রামাটিক্যাল অভিনয়ে সেরা। যেকোন সিরিয়াস দৃশ্যে ও অনেক বেশি পরিপক্কতা দেখায়। যা আমি ওর কাছ থেকে শেখার চেষ্টা করেছি।

সিনেমাটি কেন দেখবে দর্শক?

সব সময় মাথায় একটা প্রেশার থাকে। চিন্তা হয়, আমার ছবি কেউ দেখবে না। কিনা হলে গিয়ে কান্নাকাটি করতে হয়। দেখা গেল, কেউ এলো না আমার ছবি দেখতে। প্রত্যেকটা ছবি রিলিজের আগেই মনে হয় হয়তো আমি পরিচালক আর কলাকুশলিরা শুধু হলে থাকবো। আর কেউ নেই আশেপাশে।

এটা কী এমন কিছু হতে যাচ্ছে?

আমি দর্শক হিসেবে বলবো ছবিটা খুব ভালো হয়েছে। এ ধরনের ছবি আমাদের দেশের সিনেমার অস্তিত্ব। এই ধরনের সিনেমাই মানুষ দেখতে চায়। দর্শক হিসেবে নিজের ভালো লেগেছে। ছবিটা হিট করবে কিনা ফ্লপ করবে। এটা দর্শক জানে। কিন্তু ফ্লপ হলেও দু:খ নেই। কারণ, এটা একটা ভালো ছবি। ছবিটা করে আমি তৃপ্ত। যেখানে আমি অভিনয়টা করতে পেরেছি। নিজেকে শতভাগ উজাড় করে দিতে পেরেছি। আমি বিশ্বাস করি, মানুষ যদি সিনেমাটি দেখে। তাদেও ভালো লাগবে। সবাই তার সিনেমাকে ভালো বলে। আমি কিন্তু খারাপও বলি। সেক্ষেত্রে বলবো সিনেমাটি দেখা উচিত সিনেমাপ্রেমীদের।

সিনেমায় চরিত্রটা কেমন?

আমি ছটফটে টাইপের মেয়ে। সেটা যারা আমার আশেপাশে থাকে, তারা জানে। আমার ক্যারেক্টারটা এমন হবে। অমন হবে। এমন কথা আমি সাধারণত বলি না। কিন্তু ‘জান্নাত’ চরিত্রটার কথা বলবো। এখন পর্যন্ত যত সিনেমা করেছি। সবগুলো থেকে ভিন্ন। মেয়েটা হিজাব পড়ে। খুব ধার্মিক একটি মেয়ে। খুব কম কথা বলে। যতটকু শান্ত ওই সিনেমায় দেখানো হয়েছে। বাস্তবে এর পুরোটাই আলাদা। আমি এত ধীরে সুস্থে থাকতে বা কথা বলতে পারি না। এটা সমস্যা। সেখান থেকে নিজের একদম বিপরীতে গিয়ে অভিনয়টা করতে হয়েছে। ’

শাকিব খানের সিনেমাও আসবে এবার ঈদে। সেখানে মাহি- সাইমনের সিনেমার আকর্ষণ কতটা থাকবে দর্শকের কাছে?

আমি বলবো এই সিনেমাটি একবার কেউ দেখলে সে আরেকবার দেখতে চাইবে। তার বন্ধু কিংবা পরিবারকে নিয়ে সে সিনেমাটি দেখার আগ্রহ প্রকাশ করবে। আর আমি বলবো দরকার হয় শাকিব ভাইয়ের সিনেমা আগে দেখুন। তারপর আমাদেরটা দেখুন। ঈদ তো একদিন না। উৎসবে সব ধরনের সিনেমাই দেখুন। আর অনেকদিন পর আমার আর সাইমনের সিনেমা আসছে। আমার আর সাইমনের যারা দর্শক আছে। তাদেও জন্য ঈদের উপহার। তাঁেদর দেখা উচিত।  সিনেমাটি ঠিক ‘পোড়ামন’ না হলেও ওইটার অরেকটা ধার ঘেষে গেছে। আমরা তো আসলে মেসেজ পেতে সিনেমা দেখতে যাই না। বিনোদন পেতে যাই। তবু বলবো সিনেমাটি অনেক মেসেজ দিবে।’

‘জান্নাত’ সিনেমার সঙ্গে মুক্তি পাবে ‘মনে রেখ’ সিনেমাটিও। সেটা নিয়েও কী বলবেন?

এই প্রথম হার্টবিট প্রযোজনা প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে কাজ করলাম। হার্টবিট হলো অনেক বড় প্রডাকশন হাউজ। আমি প্রথম থেকেই সিনেমাটির সঙ্গে কাজ করতে চাইতাম। তখন শুনতাম তারা শুধু শাকিব খানকে নিয়েই সিনেমা নির্মাণ করে। ফাস্ট টাইম তারা শাকিব খানকে ছাড়া আমার উপর নির্ভর করে সিনেমাটি বানিয়েছেন। এর জন্যই আমি গর্বিত। সিনেমাটি করার সময় অনেক ভালো লাগার ব্যাপার আছে। অনেক স্মৃতি আছে। কিন্তু আমি বলবো হার্টবিটের সঙ্গে কাজ করতে পারলাম। এটাই আমার জন্য অনেক বড় ব্যাপার।

সিনেমায় জুটি একটি ব্যাপার। সেক্ষেত্রে নিয়মিতই নতুনদের সঙ্গে কাজ করতে দেখা যাচ্ছে। সেখানে কী সফল আপনি?

প্রথমত এটা পরিচালক ও প্রযোজকরা নেন। আমার কোন হাত নেই। তবে এখন আমি চিন্তা করেছি, একটু বেছে পুরাতনদের সঙ্গে কাজ করার চেষ্টা করবো। কারণ, দর্শকের এমন চাওয়াটা আমার কানেও নিয়মিত আসে। তাছাড়া নতুনদেও নিয়ে কাজ করতে গেলে। পুরান যে আছে। কোন খারাপ কিছু হলে দায়ভারটা তার উপরই পরে।

নিজের প্রযোজনার খবর কী ?

ওইটা আসলে আমি যখন জাজে ছিলাম। তখন ঘোষণা দিয়েছিলাম। কারণ, তখন তারা আমার মাথার উপর ছিল। আমার খুব বেশি টেনশন ছিল না। কিন্তু এখন ওই ভাবনাটা নেই হয়ে গেছে। নিজের একার কিছু করতে হলে আরও পরিপক্কতা দরকার।  

সংসার জীবন কেমন চলছে?

এইতো গতকালও ঝগড়া হলো। আজ আবার মিটে গেল। এমনটা নিয়মিত হতে থাকে। তবে অপুর সহ্য শক্তি বেশ। আমাকে সহ্য করতে পারে।

সামনে কী সিনেমা আসছে?

মুক্তির অপেক্ষায় আছে ‘তুই শুধু আমার’, ‘পবিত্র ভালবাসা’, ‘অন্ধকার জগৎ’ সিনেমাগুলো। আর শুটিংয়ে ব্যস্ত ‘ও মাই লাভ’, ‘অবতার’ সিনেমা নিয়ে।




বাংলা ইনসাইডার/এমআরএইচ

 



প্রধান সম্পাদকঃ সৈয়দ বোরহান কবীর
ক্রিয়েটিভ মিডিয়া লিমিটেডের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান

বার্তা এবং বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ ২/৩ , ব্লক - ডি , লালমাটিয়া , ঢাকা -১২০৭
নিবন্ধিত ঠিকানাঃ বাড়ি# ৪৩ (লেভেল-৫) , রোড#১৬ নতুন (পুরাতন ২৭) , ধানমন্ডি , ঢাকা- ১২০৯
ফোনঃ +৮৮-০২৯১২৩৬৭৭