ইনসাইড থট

প্ল্যাকার্ডের ভাষা

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশ: 02/08/2018


Thumbnail

রমিজউদ্দিন স্কুলের ছাত্রী মীম ও রাজীব জাবালে নূর পরিবহনের গাড়ির নীচে পিষ্ট হয়ে নিহত হওয়াকে কেন্দ্র করে ছাত্র বিক্ষোভে সারা ঢাকা অচল প্রায় হয়ে গিয়েছে। মৃত্যুর খবরের প্রতিক্রিয়া জানাতে গিয়ে সাংবাদিকের ক্যামেরার সামনে নৌ মন্ত্রী শাজাহান খানের হাসি মুখের ‘অবিবেচনাপ্রসূত’ জবাব সবাইকে আহত করেছে। এটাকেই কি কাজে লাগান হয়েছে শিশুদের ঢাল হিসেবে ব্যবহার করে!  প্রথম দিনের কিংবা তার পরের দিনেরএই ছাত্র বিক্ষোভ অস্বাভাবিক ছিল না। সমর্থন পেয়েছে বাবা-মা। ভাই-বোনদের সবার এবং তা দল মত নির্বিশেষে। বিক্ষোভের ভয়াবহতা দেখে মন্ত্রী শাহজাহান খান ক্ষমা চান। সবশেষে বুধবার নৌ পরিবহন মন্ত্রী শাহজাহান খান নিহতের বাড়ি গিয়ে ক্ষমা চয়ে এসেছেন। কারণ তার উপরেই ক্ষোভটা বেশি ছিল সবার, নানা কারণে। শিক্ষা মন্ত্রণালয় ঘোষণা দিয়েরাজধানীর সব শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বৃহস্পতিবার বন্ধ ঘোষণা করেছে যাতে আর এটা নিয়ে বেশি পানি ঘোলা না করতে পারে কেউ। কিন্তু ইতিমধ্যে খুব অবাক করা কিছু ঘটনা ঘটেছে। প্রথমে দলমত নির্বিশেষে সবাই বলেছেন এটি খুব শান্তিপূর্ণ আন্দোলন। কিন্তু তার পরেও কেন গত দুই দিন বেশুমার গাড়ি ভাঙা হয়েছে, কারা ভেঙ্গেছে, কেন ভেঙ্গেছে!    

অনলাইন পোর্টাল ছাড়াও প্রথম আলো পত্রিকায় খবর বেরিয়েছে ভিন্ন। প্রথম আলো পত্রিকার ভিডিওটি ভিন্ন কথা বলে। হবিগঞ্জ থেকে এসেছে সেই ছাত্র নামধারী তাগড়া যুবক, তার ছাত্র হবার কথা না। সে কি একাই এসেছে? নাকি আরও কাউকে সাথে নিয়ে এসেছে, দলেবলে! নগরীর বিভিন্ন পয়েন্টে পোশাকপরা ছাত্র-ছাত্রীদের পাশাপাশি পাশাপাশি ভিন্ন পোশাকের মানুষ দেখা গেছে। তারা টেলিভিশনের ক্যামের দেখলে একটু দুরে সরে যাচ্ছিল আবার ক্যামেরা না থাকলে সামনে, তাদের উদ্দেশ্য ভিন্ন। দুপুর ২টার দিকে বনানী ফ্লাইওভারের কাছে যারা গাড়ি আটকিয়েছিল তাদের অধিকাংশই ছাত্র না এর ঘন্টাখানেক পরে আবার তারা উধাও হয়ে যায় বলে একাধিক প্রতক্ষ্যদর্শী জানিয়েছেন বিভিন্ন মাধ্যমে।   

ছাত্র ছাত্রীদের হাতের প্ল্যাকার্ডের ভাষা সোশ্যাল মিডিয়ায় লক্ষ্য করেছেন অনেকেই। একাধিক শিশু-কিশোরী মেয়ে আর শিশু-কিশোর ছেলে যে ভাষার প্ল্যাকার্ড বহন করেছে তা তাদের লেখা হতে পারে না। এত কদর্য ভাষায় পুলিশকে বা অন্যদের গালিগালাজ করাহয়েছে যে, তা এখানে লেখা সম্ভব না। তাহলে এটা কাদের লেখা? স্কলাস্টিকা  স্কুলের ছেলে মেয়েরা নেমেছে রাস্তায়! যাদের প্রায় নব্বই শতাংশই জীবনে বাসে চড়েনি, চড়ে না। এই স্কুলের মালিক কে? তার মূল শিকড় কোথাকার?এই প্রশ্ন আসতো না যদি কদর্য ভাষাতেপ্ল্যাকার্ড নিয়ে কোমলমতি  শিশুরা রাস্তায় না দাঁড়াতো। তাহলে কি এই সুযোগ্যা অন্য কিছু করার ইচ্ছা নিয়ে বা এজেন্ডা নিয়ে কোন গোষ্ঠী মাঠে নেমেছিল গত বুধবার!  কেন তাদের হাতে এমন কদর্য ভাষার প্ল্যাকার্ড। 

পুলিশদের সম্পর্কে বলতে গিয়ে লাঠি প্রয়োগে  প্ল্যাকার্ডে ‘প’ বর্ণের সহযোগে যে বাক্য গঠন করা হয়েছে এবং যে শিশু ওটা ধরে আছে তার হাতের লেখা ওটা না। একটি ৯/১০ বছরের মেয়ে শিশুটি যে ভাষার প্ল্যাকার্ড বহন করছে তা ‘চ’ বর্ণ দিয়ে রচিত।এটা তার করার কথানা, তার হাতের লেখা এমন হতে পারে না। প্রশাসনকে ‘চ’ বর্ণ আর ‘ব’ বরণ দিয়ে বাক্য গঠন করে গালি দেওয়া হয়েছে। এগুলো তাদের কাজ তা মেনে নেওয়া যায় না। একজন শিশু তার বুকের সাথে একটা কাগজে লখেছে, আম্মু বলেছে গুলি না খেয়ে ফিরবি না, এটা কোনমা কখনো বলতে পারে? এমন অনেক কিছুই সোশ্যাল মিডিয়ায় ঘুরছে। ঐসব শিশুদের বাবা মা কি তা দেখছেন না! তাহলে কি এটা ধরে নিতে হবে যে, ঐসব শিশুদের বাবা মায়েরা তাদের শিশু বলি দিয়ে তাদের প্রত্যাশা হাসিলের চেষ্টা করছে, না আহাম্মকী, তা অচিরেইবুঝতে পারা যাবেই যাবে।

রাতের অন্ধকারের কোন কিছুর আবছা রূপ দীর্ঘস্থায়ী হয় না, দিনের আলোয় তাঁর স্বরূপ প্রকাশ পায়। সত্য প্রকাশিত হবে। হবিগঞ্জের ঐ ছেলের মোবাইল পরীক্ষা করলে, যারা প্ল্যাকার্ড বহন করেছে তাদের আদর করে জিজ্ঞাসা করলেই। তোমরা মিথ্যা বলবে না।  উল্টাপাল্টা স্ট্যাটাস দেওয়া সেলিব্রেটি বা গুণীজনদের পিছনের ইতিহাস ঘাঁটলেই বুঝা যাবে কোনটা ক্ষোভ আর কোনটা যড়যন্ত্র। আমদের আর অল্প কিছুটা সময় অপেক্ষা করতে হবে মনে হয়।

লেখক: উন্নয়ন কর্মী ও কলামিস্ট 



প্রধান সম্পাদকঃ সৈয়দ বোরহান কবীর
ক্রিয়েটিভ মিডিয়া লিমিটেডের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান

বার্তা এবং বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ ২/৩ , ব্লক - ডি , লালমাটিয়া , ঢাকা -১২০৭
নিবন্ধিত ঠিকানাঃ বাড়ি# ৪৩ (লেভেল-৫) , রোড#১৬ নতুন (পুরাতন ২৭) , ধানমন্ডি , ঢাকা- ১২০৯
ফোনঃ +৮৮-০২৯১২৩৬৭৭