ইনসাইড বাংলাদেশ

তারেক মাসুদ ও মিশুক মুনীরের ৭ম মৃত্যুবার্ষিকী আজ

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশ: 13/08/2018


Thumbnail

বাংলাদেশের সড়কগুলো প্রচণ্ড রক্তপিপাসু। প্রতিদিন সড়ক দুর্ঘটনায় এদেশে শত শত লোকের মৃত্যু হয়। মৃত্যু হয় তাঁদের স্বপ্ন ও সম্ভাবনার। তেমনি এক মর্মান্তিক সড়ক দুর্ঘটনায় আজ থেকে ৭ বছর আগে নিহত হন আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন চলচ্চিত্রকার তারেক মাসুদ ও এটিএন নিউজের প্রধান নির্বাহী ক্যামেরা ডিরেক্টর মিশুক মুনীর। বাংলাদেশকে আরও অনেক কিছুই দেওয়ার ছিল তাঁদের। কিন্তু হঠাৎ করেই যবনিকাপাত ঘটে দুজনের কর্মময় জীবনের।

তারেক মাসুদ তাঁর নতুন ছবি ‘কাগজের ফুল’-এর জন্য লোকেশন দেখতে স্ত্রী ক্যাথরিন মাসুদ, মিশুক মুনীরসহ নয় সদস্যের একটি দল নিয়ে মানিকগঞ্জ গিয়েছিলেন। মানিকগঞ্জের শিবালয় উপজেলার ইছামতি নদীর তীর ঘেঁষে শেখ একিম উদ্দিনের বাড়িটি নিজের ছবির জন্য পছন্দ হয় তারেকের। কিন্তু সেই ছবি আর করা হয়ে ওঠেনি। ঢাকা ফেরার পথে ২০১১ সালের ১৩ আগস্ট মানিকগঞ্জের ঘিওর উপজেলার জোকা এলাকায় তাঁদের বহনকারী মাইক্রো বাসের সঙ্গে চুয়াডাঙ্গা ডিলাক্স পরিবহনের একটি বাসের মুখোমুখি সংঘর্ষ হয়। এই দুর্ঘটনায় মৃত্যু হয় তারেক মাসুদ ও মিশুক মুনীরের। তারেক মাসুদ ও মিশুক মুনীর ছাড়াও চালক মুস্তাফিজ, তারেক মাসুদের  প্রোডাকশন ম্যানেজার ওয়াসিম ও কর্মী জামাল এই দুর্ঘটনায় মৃত্যু বরণ করেন।

মৃত্যুর পরের বছর ২০১২ সালে বাংলাদেশ সরকার তারেক মাসুদ ও মিশুক মুনীরকে মরণোত্তর একুশে পদকে ভূষিত করে নিজ নিজ ক্ষেত্রে তাঁদের অবদানকে সম্মান জানায়।

পরিচালক তারেক মাসুদ ছিলেন বিশ্ব দরবারে বাংলা চলচ্চিত্রের অন্যতম মুখপাত্র। তারেক মাসুদের প্রথম পূর্ণদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্র ‘মাটির ময়না’ দেশে ও বিদেশে সমানভাবে সমাদৃত। এছাড়া বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে নির্মিত প্রামাণ্যচিত্র ‘মুক্তির গান’ ও ‘মুক্তির কথা’ এবং চিত্রশিল্পী এস এম সুলতানকে নিয়ে নির্মিত ‘আদম সুরত’ এর কারণেও স্মরণীয় হয়ে থাকবেন তিনি।

শহীদ বুদ্ধিজীবি মুনীর চৌধুরীর ছেলে আশফাক মিশুক মুনীরও ক্যামেরা ডিরেক্টর হিসেবে আন্তর্জাতিক অঙ্গনে খ্যাতিমান ছিলেন। মিশুক মুনীর নামেই পরিচিত ছিলেন তিনি। দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার বিভিন্ন দেশে বিবিসির ভিডিও গ্রাহক হিসেবে দীর্ঘদিন কাজ করা মিশুক ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগে শিক্ষকতাও করেছেন। তারেক মাসুদের ছবি ‘রানওয়ে’র প্রধান চিত্রগ্রাহক হিসেবে কাজ করেন তিনি।

বাংলাদেশের সংস্কৃতি অঙ্গনের এই দুই প্রতিভাবান ব্যক্তির মৃত্যুর সাড়ে পাঁচ বছর পর ঘাতক বাসটির  চালক জামির হোসেনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডে দণ্ডিত করে আদালত। এছাড়া গত ৩ ডিসেম্বর হাইকোর্ট এক রায়ে চালক, বাস মালিক ও বীমা কোম্পানিকে তিন মাসের মধ্যে তারেক মাসুদের পরিবারকে চার কোটি ৬১ লাখ ৪৫২ টাকা ক্ষতিপূরণ দিতে নির্দেশ দেন। কিন্তু ওই রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করে সংশ্নিষ্ট বাস মালিক, চালক ও বীমা কোম্পানী কর্তৃপক্ষ যার নিষ্পত্তি এখনো হয়নি।

বাংলা ইনসাইডার/এসএইচটি

 



প্রধান সম্পাদকঃ সৈয়দ বোরহান কবীর
ক্রিয়েটিভ মিডিয়া লিমিটেডের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান

বার্তা এবং বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ ২/৩ , ব্লক - ডি , লালমাটিয়া , ঢাকা -১২০৭
নিবন্ধিত ঠিকানাঃ বাড়ি# ৪৩ (লেভেল-৫) , রোড#১৬ নতুন (পুরাতন ২৭) , ধানমন্ডি , ঢাকা- ১২০৯
ফোনঃ +৮৮-০২৯১২৩৬৭৭