ইনসাইড বাংলাদেশ

বীরশ্রেষ্ঠ মতিউর রহমানের শাহাদাত বার্ষিকী আজ

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশ: 20/08/2018


Thumbnail

বীরশ্রেষ্ঠ ফ্লাইট লেফটেন্যান্ট মতিউর রহমানের ৪৭তম শাহাদাত বার্ষিকী আজ। ১৯৭১ সালের এই দিনে পাকিস্তানের থাট্টায় উড়োজাহাজ বিধ্বস্ত হয়ে শাহাদাতবরণ করেন তিনি।

 দেশের এই মহান সন্তান জন্মেছিলেন ২৯ নভেম্বর ১৯৪১ সালে ঢাকার আগাসাদেক রোডের পৈতৃক বাড়িতে। প্রাথমিক পড়ালেখা শুরু হয় ঢাকার কলেজিয়েট স্কুলে। এরপর ভর্তি হন সারগোদায় বিমানবাহিনী পাবলিক স্কুলে। ডিস্টিংশনসহ প্রথম বিভাগে ম্যাট্রিক পাস করার পর তিনি বিমানবাহিনী একাডেমিতে যোগ দেন। ১৯৬৩ সালের জুন মাসে পাইলট হিসেবে কমিশন লাভ করেন। পাকিস্তান সফররত ইরানের রানী ফারাহ দিবার সম্মানে যে বিমান মহড়া অনুষ্ঠিত হয়, তাতে তিনিই একমাত্র বাঙালি পাইলট ছিলেন। পরবর্তীতে তিনি জেট ফ্লাইং ইনস্ট্রাক্টর হিসাবে করাচির বিমানঘাঁটিতে বদলি হয়ে আসেন। মুক্তিযুদ্ধের সময় তিনি ফ্লাইট লেফটেন্যান্ট পদে উন্নীত হন। ১৯৭১ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে ছুটিতে এসে পারিবারিক বাধার মুখে মুক্তিযুদ্ধে যেতে পারেননি মতিউর রহমান। স্ত্রী ও দুই কন্যাকে সাথে নিয়ে আবার করাচির কর্মস্থলে যোগ দিলেন তিনি। সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন যেকোনোভাবে জঙ্গিবিমান হাইজ্যাক করে সেটা নিয়ে মুক্তিযুদ্ধে যোগ দেবেন। এরপর ২০ আগস্টের দিন দুর্দান্ত সাহসী মতিউর করাচির মসরুর বিমানঘাঁটি থেকে তাঁর ছাত্র রাশেদ মিনহাজকে অজ্ঞান করে টি-৩৩ জঙ্গিবিমানটি হাইজ্যাক করে নীল দিগন্তে উড়াল দিলেন। 

ভারতের কাছাকাছি সীমান্তে রাশেদ মিনহাজ জ্ঞান ফিরে পান এবং বিমানটির নিয়ন্ত্রন নিতে চেষ্টা করেন। এ সময় রাশেদের সাথে মতিউরের ধ্বস্তাধস্তি চলতে থাকে এবং এক পর্যায়ে রাশেদ ইজেক্ট সুইচ চাপলে মতিউর বিমান থেকে ছিটকে পড়েন। বিমানটি কম উচ্চতায় উড্ডয়ন করার ফলে একসময় রাশেদ সহ বিমানটি ভারতীয় সীমান্ত থেকে মাত্র ৩৫ মাইল দূরে থাট্টা এলাকায় বিধ্বস্ত হয়। মতিউর রহমানের সাথে প্যারাসুট না থাকাতে তিনি নিহত হন। তাঁর মৃতদেহ ঘটনাস্থল হতে প্রায় আধ মাইল দূরে পাওয়া যায়।

২০ই আগস্ট, ১৯৭১ এ মতিউর রহমান এবং রাশেদ মিনহাজ স্ব স্ব দেশের জন্য মৃত্যুবরণ করেন। বাংলাদেশ সরকার মতিউর রহমান কে তাঁর সাহসী ভূমিকার জন্য ‘বীরশ্রেষ্ঠ’ উপাধিতে ভূষিত করে এবং রাশেদ মিনহাজ কে পাকিস্তান সরকার সম্মানসূচক খেতাব দান করে। একই ঘটনায় দুই বিপরীত ভূমিকার জন্য দুইজনকে তাদের দেশের সর্বোচ্চ সম্মানসূচক খেতাব প্রদানের এমন ঘটনা বিরল।

পাকিস্তান সরকার মতিউর রহমানের মৃতদেহ করাচির মাসরুর বেসের চতুর্থ শ্রেণির কবরস্থানে সমাহিত করে। পরবর্তীতে বাংলাদেশ স্বাধীন হয়ার পর, ২০০৬ সালের ২৪ জুন মতিউর রহমানের দেহাবশেষ পাকিস্তান হতে বাংলাদেশে ফিরিয়ে আনা হয় এবং তাঁকে পূর্ণ মর্যাদায় ২৫শে জুন শহীদ বুদ্ধিজীবী গোরস্থানে পুনরায় দাফন করা হয়।

বীরশ্রেষ্ঠ মতিউর রহমানের স্মৃতি রক্ষার্থে তাঁর নামে বাংলাদেশ বিমান বাহিনীর যশোর বিমান ঘাটি নামকরণ করা হয়েছে। সেইসঙ্গে বিমান বাহিনী তাঁর নামে একটি ট্রফি চালু করেছে। বিমান প্রশিক্ষনে সেরা কৃতিত্ব প্রদর্শনকারীকে এই ট্রফি প্রদান করা হয়।

বাংলা ইনসাইডার/বিকে

 



প্রধান সম্পাদকঃ সৈয়দ বোরহান কবীর
ক্রিয়েটিভ মিডিয়া লিমিটেডের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান

বার্তা এবং বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ ২/৩ , ব্লক - ডি , লালমাটিয়া , ঢাকা -১২০৭
নিবন্ধিত ঠিকানাঃ বাড়ি# ৪৩ (লেভেল-৫) , রোড#১৬ নতুন (পুরাতন ২৭) , ধানমন্ডি , ঢাকা- ১২০৯
ফোনঃ +৮৮-০২৯১২৩৬৭৭