ইনসাইড পলিটিক্স

১৫ আগস্টের সম্প্রসারণই ২১ আগস্ট

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশ: 20/08/2018


Thumbnail

বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনা বাংলাদেশে ফেরার পর থেকেই তাঁকে হত্যা করার জন্য উঠেপড়ে লাগে দেশবিরোধী, স্বাধীনতা বিরোধী চক্র। এরই ধারাবাহিকতায় ২০০৪ সালের ২১ আগস্ট শেখ হাসিনাকে হত্যার উদ্দেশ্যে ঢাকায় আওয়ামী লীগের এক জনসভায় গ্রেনেড হামলা করা হয়। সে হামলায় দৈবিকভাবে তৎকালীন বিরোধী দলীয় নেত্রী শেখ হাসিনা বেঁচে গেলেও ২৪ জন নিহত হন।

তিন দশক আগে শেখ হাসিনার পিতা জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকেও দেশ বিরোধীদের আক্রোশের শিকার হতে হয়েছিল। শেখ হাসিনা বারবার বেঁচে গেলেও বাঁচতে পারেননি বঙ্গবন্ধু। ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট দেশবিরোধী, বাংলাদেশের স্বাধীনতায় অবিশ্বাসী চক্রের হাতে নিহত হন স্বাধীনতার অবিসংবাদিত নায়ক। বস্তুত, ’৭৫ এর ১৫ আগস্টের সম্প্রসারণই ছিল ২০০৪ এর ২১ আগস্ট।

বঙ্গবন্ধু হত্যার উদ্দেশ্য কেবল একজন ব্যক্তিকে হত্যা করাই ছিল না, এই হত্যাকাণ্ডের মূল উদ্দেশ্য ছিল বাংলাদেশকে পুনরায় পাকিস্তানে পরিণত করা। বাংলাদেশকে ব্যর্থ, অকার্যকর রাষ্ট্র বানানোর গভীর দুরভিসন্ধি থেকেই বাঙালি জাতীয়তাবাদে বিশ্বাসী বঙ্গবন্ধুকে হত্যা করা হয়। আর এই হত্যাকাণ্ডের পেছনে দায়ী ’৭১ এর পরাজিত শক্তি।

সাধারণত জামাত-শিবিরকেই কেবল ’৭১ এর পরাজিত শক্তি হিসেবে বিবেচনা করা হয়। কিন্তু বাস্তবতা হচ্ছে, বাংলাদেশের অন্যতম প্রধান রাজনৈতিক দল বিএনপিও মুক্তিযুদ্ধের পরাজিত শক্তির প্রতিনিধি। বিএনপি গঠিত হয়েছে একাত্তরের পরাজিত শক্তিদের সংঘবদ্ধ করেই। বাংলাদেশ বিদ্বেষ আর পাকিস্তানের মৌলবাদী চরিত্র আত্তীকরণের প্রক্রিয়া দেখেই তা নিশ্চিত হওয়া যায়। ` ৭৫ এর মূল সুবিধাভোগীও বিএনপি আর বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমান। জিয়াউর রহমান বঙ্গবন্ধু হত্যায় পরোক্ষভাবে জড়িত ছিলেন। বঙ্গবন্ধু হত্যার মাত্র ১০ দিন পর জিয়াউর রহমান সেনাপ্রধান হন। বঙ্গবন্ধু হত্যার পথ ধরেই জিয়াউর রহমানের রাষ্ট্র ক্ষমতা দখলের পথ উন্মুক্ত হয়। রাষ্ট্র ক্ষমতা দখলের পর জিয়াউর রহমান পুরোপুরি পাকিস্তানি ভাবাদর্শে বাংলাদেশকে পরিচালিত করতে শুরু করেন।

অবসরে যাবার আগ পর্যন্ত ১৯৭৮ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত সশস্ত্র বাহিনীতে একের পর এক মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের সেনা কর্মকর্তাদের হত্যা করা হয়। এই জিয়াই পুরস্কৃত করেন বঙ্গবন্ধুর হত্যাকারীদের।

জেনারেল জিয়াউর রহমান, যিনি মেজর জিয়া নামেই সমধিক খ্যাত, ১৯৭৫ সালের ৩১ ডিসেম্বর সামরিক অধ্যাদেশ জারি করে যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের জন্য বঙ্গবন্ধু সরকার কর্তৃক প্রণীত দালাল আইন বাতিল করেন। সংবিধানের পঞ্চম সংশোধনীর মাধ্যমে সংবিধান হতে ধর্মনিরপেক্ষতা ও সমাজতন্ত্র মুছে দেন জিয়া। সংবিধানের ৩৮ অনুচ্ছেদের শর্তাদি বাতিল করে ধর্মভিত্তিক রাজনীতির অনুমতিও প্রদান করেন তিনি। যুদ্ধাপরাধী গোলাম আযমের বাংলাদেশের নাগরিকত্ব ফিরে পাওয়া ও রাজনীতিতে অংশগ্রহণ জিয়ার নির্দেশেই সম্ভব হয়।

মেজর জিয়ার মৃত্যুর পরও বিএনপি তাঁদের পাকিস্তানপন্থী রাজনীতি থেকে সরে আসেনি। মেজর জিয়া বঙ্গবন্ধুর খুনিদের কূটনীতিকের মর্যাদা দেন, পুরস্কার স্বরূপ তাঁদের বিভিন্ন দেশে রাষ্ট্রদূত করে পাঠান। পরবর্তীতে তাঁর স্ত্রী ও বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া এই খুনিদের পদন্নোতি করেন। মেজর জিয়া যুদ্ধাপরাধীদের বাংলাদেশে পুনর্বাসন করেছিলেন, তাঁদের রাজনীতি করার সুযোগ দিয়েছিলেন। আর বেগম জিয়া এই যুদ্ধাপরাধীদের মন্ত্রী বানিয়েছেন, এমপি বানিয়েছেন। যুদ্ধাপরাধীদের গাড়িতে বাংলাদেশের জাতীয় পতাকা তুলে দিয়েছিলেন বেগম জিয়া।

বঙ্গবন্ধুর মৃত্যুর পর দীর্ঘ ছয় বছর বাংলাদেশে আসতে পারেননি শেখ হাসিনা। অবশেষে ১৯৮১ সালের ১৭ মে বঙ্গবন্ধু কন্যা সামরিক শাসকদের রক্তচক্ষু উপেক্ষা করে দেশে ফিরে আসেন। বঙ্গবন্ধুর স্বপ্ন ছিল একটি সমৃদ্ধ, গণতান্ত্রিক, আধুনিক ও উন্নত বাংলাদেশ গড়ে তোলা। শেখ হাসিনা দেশে ফিরে আসেন বঙ্গবন্ধুর অসম্পূর্ণ স্বপ্ন পূরণ করার লক্ষ্যেই। বাংলাদেশে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করা ও বাংলাদেশকে মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় গড়ে তোলাই ছিল তাঁর লক্ষ্য। বঙ্গবন্ধু কন্যার হাত ধরে জাতির পিতার স্বপ্নের বাংলাদেশ গড়ার সম্ভাবনায় একাত্তরের পরাজিত শক্তি আতংকিত হয়ে পড়ে৷ সেই আতংকের ফলস্বরূপ শেখ হাসিনা দেশে আসার পর থেকেই তাঁকে একের পর এক হত্যা চেষ্টা করা হয়।

দেশে ফেরার বছরই ১৯৮১ সালে শেখ হাসিনাকে হত্যা চেষ্টা চালায় ফ্রিডম পার্টির সন্ত্রাসীরা।

শেখ হাসিনার ওপর দ্বিতীয় হামলা হয় ১৯৮৮ সালের ২৪ জানুয়ারিতে, চট্টগ্রামে। সেদিন লালদীঘি ময়দানে আট দলীয় জোটের সমাবেশ ছিল। চট্টগ্রাম বিমানবন্দর থেকে মিছিল করে জনসভাস্থলে যাওয়ার পথে শেখ হাসিনার ট্রাক মিছিলে সশস্ত্র হামলা হয়।

এর পরের বছর ১৯৮৯ এর ১১ আগস্ট রাতে ফ্রিডম পার্টির সন্ত্রাসী কাজল ও কবিরের নেতৃত্বে শেখ হাসিনাকে হত্যার উদ্দেশ্যে একদল সশস্ত্র সন্ত্রাসী বঙ্গবন্ধুর ধানমণ্ডিস্থ ৩২ নম্বরের বাসভবনে গুলি বর্ষণ করে ও গ্রেনেড হামলা চালায়।

১৯৯১ এর  ১১ সেপ্টেম্বর গ্রিনরোডে পরিবার পরিকল্পনা কেন্দ্রে ভোটের পরিস্থিতি দেখতে যান শেখ হাসিনা। গাড়ি থেকে নামার সঙ্গে সঙ্গেই বঙ্গবন্ধু কন্যাকে লক্ষ্য করে বিএনপির কর্মীরা গুলিবর্ষণ করে ও বোমা বিস্ফোরণ ঘটনায়।

১৯৯৪ সালের ২৩ সেপ্টেম্বর ঈশ্বরদী ও নাটোর রেল স্টেশনে প্রবেশের মুখে শেখ হাসিনাকে বহনকারী রেল গাড়ি লক্ষ্য করে গুলি ছোঁড়া হয়।

এর পরের বছর ১৯৯৫ এর ৭ ডিসেম্বর  শেখ রাসেল স্কয়ারের নিকট সমাবেশে ভাষণ দেওয়ার সময় শেখ হাসিনার উপর গুলি বর্ষণ করা হয়।

শেখ হাসিনাকে আরেকবার হত্যার চেষ্টা চালানো হয় ১৯৯৬ এর ৭ মার্চ সন্ধ্যায়। বঙ্গবন্ধু অ্যাভিনিউতে আওয়ামী লীগের সমাবেশে শেখ হাসিনার বক্তৃতার পর হঠাৎ একটি মাইক্রোবাস থেকে সভামঞ্চ লক্ষ্য করে গুলিবর্ষণ ও বোমা নিক্ষেপ করা হয়। এ ঘটনায় ২০ জন আহত হয়।

১৯৯৭ সালে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও তার পুত্রকন্যাসহ ৩১ জনকে হত্যার জন্য পুরস্কারের ঘোষণা সংবলিত ইমেইল আদান-প্রদানের খবর পাওয়া যায়। এই ই-মেইলের হোতা ছিলেন ইন্টার এশিয়া টিভির মালিক শোয়েব চৌধুরী।

২০০০ সালের ২০ জুলাই গোপালগঞ্জের কোটালীপাড়ার শেখ লুত্ফুর রহমান ডিগ্রি কলেজ মাঠের এক সভায় প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্য রাখার কথা ছিল। শেখ হাসিনাকে হত্যার উদ্দেশ্যে কলেজের পাশে ৭৬ কেজি ও তিনদিন পর ২৩ জুলাই হেলিপ্যাডের কাছ থেকে ৪০ কেজি ওজনের দুটি শক্তিশালী পুঁতে রাখা হয়। সেনাবাহিনীর বিস্ফোরক বিশেষজ্ঞরা এই দুটি বোমা উদ্ধার করে।

পরের বছরও বঙ্গবন্ধু কন্যাকে হত্যার চেষ্টা চালানো হয়। ২০০১ সালের ২৯ মে খুলনার রূপসা সেতুর কাজ উদ্বোধন করতে যাওয়ার কথা ছিল তত্কালীন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার। জঙ্গিরা সেখানে বোমা পুঁতে রাখে যা গোয়েন্দা পুলিশ উদ্ধার করে।

২০০১ সালের ২৫ সেপ্টেম্বরে শেখ হাসিনা নির্বাচনী প্রচারণার উদ্দেশ্যে সিলেট গেলে তাঁকে হত্যার চেষ্টা করে হুজি। কিন্তু শেখ হাসিনার জনসভাস্থল থেকে ৫০০ গজ দূরে রাত ৮ টার দিকে একটি বাড়িতে বোমা বিস্ফোরিত হলে ঘটনাস্থলেই দুই জঙ্গি নিহত হওয়ায় এই ষড়যন্ত্র সফল হয়নি।

বিএনপি-জামাত জোট সরকার গঠন করার পরের বছরই তৎকালীন বিরোধী দলীয় নেত্রী শেখ হাসিনার ওপর তিন তিনবার প্রাণঘাতী হামলা করা হয়। প্রথমবার হামলা করা হয় ২০০২ সালের ৪ মার্চ। সেদিন নওগাঁয় বিএমসি সরকারি মহিলা কলেজের সামনে শেখ হাসিনার গাড়ি বহরে হামলা চালানো হয়।

এরপর ২০০২ সালেরই ২৯ সেপ্টেম্বর বিএনপি-জামাতের নেতাকর্মীরা সাতক্ষীরার কলারোয়ার রাস্তায় ব্যারিকেড দিয়ে শেখ হাসিনার ওপর হামলা চালায়।

শেখ হাসিনার ওপর পরবর্তী হামলা চালানো হয় ২০০২ সালের ৩০ আগস্ট।  কলারোয়া উপজেলার চন্দনপুর ইউনিয়নের হিজলি গ্রামের এক মুক্তিযোদ্ধার ধর্ষিতা স্ত্রীকে দেখতে সাতক্ষীরা সদর হাসপাতালে গিয়েছিলেন শেখ হাসিনা। সেখান থেকে যশোরে ফিরে যাওয়ার পথে বিএনপি অফিসের সামনে রাস্তার ওপর একটি যাত্রীবাহী বাস আড়াআড়ি ফেলে রেখে বিএনপি ও যুবদলের নেতাকর্মীরা শেখ হাসিনার গাড়ি বহরে হামলা চালায়। হামলায় জেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি প্রকৌশলী শেখ মুজিবুর রহমান ও সাংবাদিকসহ দলীয় অনেক নেতাকর্মী আহত হন। ওই হামলার নির্দেশ দিয়েছিলেন জেলা বিএনপির সভাপতি ও তৎকালীন সাংসদ হাবিবুল ইসলামের হাবিব ও বিএনপি নেতা রঞ্জু।

২০০৪ সালের ২ এপ্রিল গৌরনদীতে শেখ হাসিনার গাড়ি বহরে গুলিবর্ষণ করে বিএনপি-জামাত।

সে বছরই বিএনপি-জামাত জোট সরকার শেখ হাসিনাকে হত্যার উদ্দেশ্যে এক ন্যাক্কারজনক হামলা চালায়। ২০০৪ সালের ২১ আগস্ট আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে জনসভায় গ্রেনেড হামলা চালানো হয়। সেই ঘটনায় শেখ হাসিনা সৌভাগ্যক্রমে বেঁচে গেলেও আওয়ামী লীগের মহিলা বিষয়ক সম্পাদক ও প্রয়াত রাষ্ট্রপতি জিল্লুর রহমানের স্ত্রী আইভি রহমানসহ ২৪ জন নিহত হয়। গ্রেনেডের স্প্লিন্টারের আঘাতে আহত হন কয়েক শতাধিক।

২০০৭ সালের ১৬ জুলাই এক-এগারোর অবৈধ তত্ত্বাবধায়ক সরকার শেখ হাসিনাকে গ্রেপ্তার করে। জাতীয় সংসদ ভবন এলাকার বিশেষ সাব-জেলে বন্দী থাকাকালীন শেখ হাসিনার খাবারে ক্রমাগত বিষ মিশিয়ে তাঁকে মেরে ফেলার চেষ্টা করা হয়।

২০১১ সালে শেখ হাসিনাকে হত্যার উদ্দেশ্যে শ্রীলংকার একটি সন্ত্রাসবাদী গ্রুপের সঙ্গে বাংলাদেশের শত্রু রাষ্ট্র এবং আন্তর্জাতিক সন্ত্রাসী চক্র সুইসাইড স্কোয়াড গঠন করে। কিন্তু আততায়ীদের দল গাড়ি করে কলকাতা বিমানবন্দরে যাবার পথে সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত হলে ভেস্তে যায় শেখ হাসিনাকে হত্যার পরিকল্পনাটি।

২০১৪ সালে প্রশিক্ষিত নারী জঙ্গিদের মাধ্যমে মানববোমায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে হত্যার পরিকল্পনা করা হয়। পরিকল্পনা বাস্তবায়নে ১৫০জন নারী ও ১৫০ জন যুবককে বিশেষ প্রশিক্ষণ দেওয়া হলেও প্রশিক্ষণরত অবস্থায়ই পশ্চিমবঙ্গের বর্ধমানে বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটলে ওই ষড়যন্ত্র নস্যাৎ হয়ে যায়।

পরের বছর ২০১৫ এর ৭ মার্চ সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে যাওয়ার সময়ে কাওরানবাজারে শেখ হাসিনার গাড়িবহরে বোমা হামলা চালানোর চেষ্টা করে জঙ্গি দল জেএমবি।

২০১৬ সালের ২৮ নভেম্বর বিমানের যান্ত্রিক ত্রুটির কারণে প্রাণ সংশয়ে পড়েন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। ওই দিন প্রধানমন্ত্রীবাহী বিমানের ইঞ্জিনে অয়েল (লুব্রিকেন্ট) সিস্টেমের একটি নাট-বোল্ট অর্ধেক খোলা ছিল যা করাচির আকাশসীমা পার হওয়ার পর সবাই খেয়াল করে। এতে ওই বিমানের ইঞ্জিন তেলশূন্য হয়ে যাওয়ায় প্রধানমন্ত্রীর বড় দুর্ঘটনার সম্মুখে পড়েন। এই দুর্ঘটনার পেছনে বিমান কর্তৃপক্ষের কিছু কর্মীর হাত রয়েছে বলে ধারণা করা হয়।

সর্বশেষ ২০১৭ সালের ১৫ আগস্ট বঙ্গবন্ধুর মৃত্যুবার্ষিকীতে ধানমণ্ডি ৩২ এ শেখ হাসিনাকে লক্ষ্য করে আগস্টের মিছিলে জঙ্গি গোষ্ঠী আত্মঘাতী বোমা হামলার চেষ্টা চালায়। যদিও পুলিশি বাধায় তা আর সফল হয়নি।

`৭৫ এ যারা বঙ্গবন্ধুকে হত্যা করেছে তাঁদেরই অপভ্রংশ ২০০৪ এ শেখ হাসিনাকে হত্যা করার চেষ্টা করে। ২০০৪ এর অপরাধীরা `৭৫ এর অপরাধীদেরই রাজনৈতিক উত্তরাধিকার। তবে ‘৭৫ এর তুলনায় ২০০৪ এর চক্রান্ত ছিল আরও বেশি গভীর। কারণ ওই ঘটনায় একজন ব্যক্তিকে হত্যা করতে পুরো রাষ্ট্রযন্ত্র সংযুক্ত হয়েছিল। কোনো ব্যক্তিবিশেষকে হত্যা করতে রাষ্ট্রযন্ত্রের এমন ন্যাক্কারজনক ষড়যন্ত্রের নজির পুরো পৃথিবীর ইতিহাসেই সম্ভবত নেই। এখন যারা সংলাপের কথা বলে তাঁরা এই ঘটনাগুলো বেমালুম ভুলে গেছে বা ভুলে যাওয়ায় ভান করছে৷ যে সুশীল সমাজকে শেখ হাসিনাকে বারবার বিএনপির সঙ্গে সংলাপে বসার তাগিদ দেয় তাঁদের কাছে প্রশ্ন, আপনারা কি পারবেন আপনার পিতার খুনির সঙ্গে এক টেবিলে বসে সংলাপ করতে? আপনারা কি পারবেন আপনার পুরো পরিবারের হত্যাকারীদের সঙ্গে সংলাপে বসতে? আপনারা কি পারবেন আপনাকে ২১ বার হত্যাচেষ্টা চালানো কারো সঙ্গে সংলাপে বসতে?

`৭৫ এর ১৫ আগস্ট বাংলাদেশের রাজনীতিতে যে বিভক্তির রেখা সৃষ্টি হয় তা বাড়তে বাড়তে চূড়ান্ত রূপ ধারণ করে ২০০৪ এর ২১ আগস্টে। বিএনপির মতো একটি ঐতিহ্যবাহী হত্যাকারী দল, একটি সন্ত্রাস-জঙ্গিবাদে বিশ্বাসী দলের সঙ্গে আসলেই ঐক্য করা সম্ভব কী না তা আওয়ামী লীগের সামনে একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন হয়ে দাঁড়িয়েছে।


বাংলা ইনসাইডার/এসএইচটি/জেডএ



প্রধান সম্পাদকঃ সৈয়দ বোরহান কবীর
ক্রিয়েটিভ মিডিয়া লিমিটেডের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান

বার্তা এবং বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ ২/৩ , ব্লক - ডি , লালমাটিয়া , ঢাকা -১২০৭
নিবন্ধিত ঠিকানাঃ বাড়ি# ৪৩ (লেভেল-৫) , রোড#১৬ নতুন (পুরাতন ২৭) , ধানমন্ডি , ঢাকা- ১২০৯
ফোনঃ +৮৮-০২৯১২৩৬৭৭