ইনসাইড বাংলাদেশ

কী ঘটেছিল হামলার দিন?

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশ: 21/08/2018


Thumbnail

২০০৪ সালের ২১ আগস্টের দুপুর। অন্যসব দিনের মতোই কর্মচঞ্চল দিন। রাজধানীর কয়েকজন মানুষও নিজেদের ওপর অর্পিত একটি দায়িত্ব নিয়ে খুব ব্যস্ত। কিছুক্ষণ পরই যে গ্রেনেড হামলা করে হত্যা করতে হবে বঙ্গবন্ধু কন্যা আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনাকে!

সেই বর্বরোচিত হামলার দিন দুপুরে মামলার অন্যতম আসামি মুফতি হান্নানের মেরুল বাড্ডার আস্তানায় জমায়েত হন হামলা পরিকল্পনার দায়িত্বে থাকা জঙ্গিরা। সেদিন সেখানে প্রায় ২০ জন জঙ্গি উপস্থিত ছিলেন। এদের নিয়ে মুফতি হান্নান, মাওলানা আবু সাইদ ওরফে জাফর, জাহাঙ্গীর আলম ওরফে জাহাঙ্গীর বদর ও হাফেজ আবু তাহেরসহ আরও কয়েকজন বৈঠক করেন। বৈঠকে আওয়ামী লীগ ও শেখ হাসিনাকে ইসলাম ধর্মের শত্রু আখ্যায়িত করে জঙ্গিদের হামলা করতে উদ্বুদ্ধ করা হয়। এসব তথ্য ২০০৫ সালের ১ অক্টোবর টিএফআই (টাস্কফোর্স ফর ইন্টারোগেশন) সেলে মুফতি হান্নানের দেওয়া জবানবন্দি থেকে জানা গেছে।

বৈঠকের এক পর্যায়ে দাড়ি নেই এমন ১২ জনকে আক্রমণের জন্য চূড়ান্তভাবে নির্বাচন করে তাঁদের ১৫টি আর্জেস গ্রেনেড দেওয়া হয়। মঞ্চে আক্রমণের মূল দায়িত্ব দেওয়া হয় জান্দাল, কাজল, বুলবুল ও লিটনের সমন্বয়ে গঠিত দলটিকে। হামলার সময় মঞ্চের দক্ষিণ-পশ্চিম পাশে পেট্রল পাম্পের মোড়ের কাছে অবস্থান নেয় দলটি। জান্দালই মঞ্চ লক্ষ্য করে প্রথম গ্রেনেড ছোড়ে।

দ্বিতীয় দলে ছিলেন সবুজ, জাহাঙ্গীর আলম, মাসুদ ও উজ্জ্বল নামের চারজন জঙ্গি। এই দলটির ওপর মঞ্চের পশ্চিম দিকে অবস্থান নিয়ে জনতার ওপর আক্রমণ করার দায়িত্ব ছিল। আর তৃতীয় দলে ছিলেন মুত্তাকিন, মুরসালিন, আরিফ হাসান ও ইকবালের নামের চারজন জঙ্গি। তাঁদের ওপর পশ্চিম-উত্তর দিকে অবস্থান নিয়ে জনতার ওপর আক্রমণ করার দায়িত্ব দেওয়া হয়েছিল। জনতার ওপর আক্রমণ করলে নেতাকর্মীরা শেখ হাসিনাকে বাঁচানোর চেষ্টা করতে পারবেন না এমন উদ্দেশ্য নিয়েই জনতার ওপর হামলা করার পরিকল্পনা করা হয়।

আসরের নামাজের আগে আগে এই ১২ জঙ্গি গোলাপ শাহ মাজারে একত্রিত হন। সেখান থেকে সমাবেশমুখী মিছিলের সঙ্গে মিশে আওয়ামী লীগের সমাবেশে হাজির হন তাঁরা। এই ১২ জন সমাবেশে অংশ নিতে চলে গেলেও সেখানে তৎকালীন উপমন্ত্রী আবদুস সালাম পিন্টুর পাঠানো কয়েকজন যুবক ব্যাক আপ হিসেবে অবস্থান নেন।

জঙ্গিরা শেখ হাসিনার ভাষণ শেষ হওয়া পর্যন্ত অপেক্ষা করেন। এরপরই ৫টা ২২ মিনিটে শেখ হাসিনাকে লক্ষ্য করে মঞ্চে প্রথম হামলা চালানো হয়। মাত্র দেড় মিনিটের মধ্যে বিস্ফোরিত হয় ১১টি শক্তিশালী গ্রেনেড যাতে মৃত্যুবরণ করেন ২৪ জন।

পরিকল্পনা ছিল, জঙ্গি বুলবুল সরাসরি শেখ হাসিনার ওপর গ্রেনেড ছুড়বেন। কিন্তু প্রথম গ্রেনেড বিস্ফোরনের পরই ঊর্ধ্বশ্বাসে ছোটাছুটি করতে শুরু করে মানুষ। এই ধাক্কাধাক্কিতে জঙ্গি বুলবুল পড়ে যাওয়ায় আর গ্রেনেড ছোড়ার সু্যোগ পাননি। এসময় আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা মানববর্ম তৈরি করে শেখ হাসিনাকে নিরাপদে সরিয়ে আনেন। এভাবেই নস্যাৎ হয়ে যায় শেখ হাসিনাকে হত্যার ষড়যন্ত্র।

বাংলা ইনসাইডার/এসএইচটি/জেডএ  



প্রধান সম্পাদকঃ সৈয়দ বোরহান কবীর
ক্রিয়েটিভ মিডিয়া লিমিটেডের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান

বার্তা এবং বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ ২/৩ , ব্লক - ডি , লালমাটিয়া , ঢাকা -১২০৭
নিবন্ধিত ঠিকানাঃ বাড়ি# ৪৩ (লেভেল-৫) , রোড#১৬ নতুন (পুরাতন ২৭) , ধানমন্ডি , ঢাকা- ১২০৯
ফোনঃ +৮৮-০২৯১২৩৬৭৭