নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: 21/08/2018
ঈদ তো সবার কাছেই আনন্দের। ঈদকে আরও আনন্দময় আর নির্বিঘ্ন করে তুলতে আমাদের চেষ্টারও কোনো কমতি থাকে না। কিন্তু সেই আনন্দ মাটি হয়ে যেতে পারে যদি আপনি সুস্থ না থাকেন। সহজ করে বলি। কোরবানি ঈদের একটি বড় দিক হলো উদরপূর্তি করে খাওয়া-দাওয়া। এই ঈদে একটু বেহিসেবী হয়ে খাওয়া দাওয়া করলেই ঘটে যেতে পারে বিপদ। বিভিন্ন স্বাস্থ্যসমস্যা প্রকট থেকে আরও প্রকটাকার হয়ে যেতে পারে। কোরবানির ঈদে বিভিন্ন রোগবালাই সামলে সুস্থ থাকতে চাইলে আপনাকে মাথায় রাখতে হবে এই বিষয়গুলো-
উচ্চ রক্তচাপ সমস্যা
কোরবানির সময় অতিরিক্ত লাল মাংস আহারে রক্তচাপ বাড়তে পারে। যাদের উচ্চ রক্তচাপের সমস্যা আছে তাদের রক্তচাপ আরও বাড়তে পারে। তাই এ সময় পরিমিত খেতে হবে। এছাড়া যেকোনো ধরনের গুরুতর স্বাস্থ্য-সমস্যায় চিকিত্সকের পরামর্শ নেওয়া উচিত। এছাড়া গরুর মাংসে অ্যালার্জি থাকলে তাদের সতর্ক থাকতে হবে। মাংস খেলেও সেটা অবশ্যই একদম চর্বি ছাড়া। আর বেশি পরিমাণে তেল, ঘি বা ডালডা ব্যবহার করা ঠিক না।
হজমে সমস্যা
হজমে সমস্যা বা ইনডাইজেশন সাধারণত অতিরিক্ত খাবারের জন্য হতে পারে। তাই এই ঈদের সময় যাদের হজমের সমস্যা আছে তাদের একটু সতর্ক থাকতে হবে। এজন্য পরিমাণতো রান্না করা মাংস ও অন্যান্য খাবার বেশি হওয়া উচিৎ। এছাড়া যাদের অতিরিক্ত খাওয়া বা স্বাভাবিক কারণে হজমে সমস্যা বা বদহজম হয়, তাদের উপসর্গ অনুযায়ী চিকিত্সা নিতে হবে। ঢেঁকুর উঠলে বা পেটে গ্যাস হলে অ্যান্টাসিড জাতীয় ওষুধ সেবন করতে হবে। এ ছাড়া অধিক পানি পান এবং হজমে সহায়ক কিছু ওষুধ বা ডাইজেসিটভ মেডিসিনে উপকার পাওয়া যাবে।
ফুড পয়জনিং
সাধারণত বেশি খেয়ে ফেলা, বাইরের খাবার খাওয়া, স্বাস্থ্যসম্মত খাবার না খাওয়া, খাবারে জীবাণু, মেয়াদোত্তীর্ণ খাবার বা পঁচা-বাসি খাবারে খেলে ফুড পয়জনিং হতে পারে। ফুড পয়জনিং হলে আক্রান্ত ব্যক্তি বা শিশুর পেটে ব্যথা, বমি, পাতলা পায়খানা, সঙ্গে জ্বরও হতে পারে। ঈদে মাত্রাতিরিক্ত খাবার খাওয়া, বা মশলাযুক্ত খাবার বেশি খাওয়া, খাওয়ায় অনিয়মের ফলে এ কয়দিন বেশ সাবধানে থাকতে হয়। ফুড পয়জনিং হলে উপসর্গ অনুযায়ী চিকিত্সা নিন। সাধারণ ডায়রিয়া ও ফুড পয়জনিংয়ের পার্থক্য বুঝতে পারা যায় না। ফুড পয়জনিংয়ের রোগীদের সাধারণত পাতলা পায়খানা ও বমি হলে রোগীকে খাবার স্যালাইন পরামর্শ দেওয়া হয়। প্রয়োজনে জীবাণুনাশক বা অ্যান্টিবায়োটিকের প্রয়োজন হয়। চিকিত্সকের পরামর্শ ছাড়া অ্যান্টিবায়োটিক সেবন ঠিক নয়। এছাড়া জ্বর থাকলে শুধু প্যারাসিটামল খাওয়া যেতে পারে, এবং তা অবশ্যই ভরাপেটে। তবে ফুড পয়জনিংয়ের ক্ষেত্রে না জেনে অ্যান্টিস্পাসমোটিক জাতীয় ওষুধ খাওয়া যাবে না। আর যদি ডায়রিয়া, বমি নিয়ন্ত্রণে না থাকলে চিকিত্সকের পরামর্শে রোগীকে দ্রুত হাসপাতালে নিতে হবে।
অ্যালার্জি
অ্যালার্জি একটা বড় সমস্যা। যাদের গরুর মাংসে অ্যালার্জি আছে, তাদের এই ঈদে একটু সাবধানে থাকতেই হবে। বেশি পরিমাণে মাংস না খেয়ে চেষ্টা করুন কমিয়ে খেতে। খেয়াল করবেন যে অ্যালার্জির ফলে শ্বাসকষ্ট, গায়ে র্যাশ, হাঁচি হচ্ছে কিনা। তাহলে দিনে একবার মাংস খেতে পারেন। তবে অ্যালার্জির তীব্রতা মারাত্মক হলে বা আক্রান্ত স্থান ফুলে লাল হয়ে গেলে, চাকার মতো হলে এবং সাধারণ অ্যান্টিহিস্টামিন খান। তাতে ভালো না হলে চিকিত্সকের পরামর্শ নিতে হবে। চিকিত্সক রোগীর অবস্থা বুঝে স্টেরয়েড জাতীয় ওষুধ সেবন অথবা ইনজেকশন দেবেন। তবে কোনো অবস্থাতেই চিকিত্সকের পরামর্শ ছাড়া স্টেরয়েডজাতীয় ওষুধ খাওয়া যাবে না। কারণ স্টেরয়েড জাতীয় ওষুধের মারাত্মক পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া রয়েছে।
বুক জ্বালাপোড়া হলে
বুক জ্বালাপোড়া একটি জটিল সমস্যা। বিশেষ করে যাদের পেটের সমস্যার আছে তারা অধিক মসলাযুক্ত খাবার খেলে বুক জ্বালাপোড়া বা আলসার আরও বেড়ে যেতে পারে। এছাড়া অতিরিক্ত খাওয়ার ফলে পাকস্থলীর খাবার উপরের দিকে উঠে বুকে ব্যথা হতে পারে, যাকে বলা হয় হার্ট বার্ন। বুক জ্বালাপোড়া করলে অ্যান্টাসিড জাতীয় ওষুধ খেতে হবে। সমস্যা বেশি হলে চিকিৎসকের পরামর্শ নেবেন।
বাংলা ইনসাইডার/এসএইচ/জেডএ
প্রধান সম্পাদকঃ সৈয়দ বোরহান কবীর
ক্রিয়েটিভ মিডিয়া লিমিটেডের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান
বার্তা এবং বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ ২/৩ , ব্লক - ডি , লালমাটিয়া , ঢাকা -১২০৭
নিবন্ধিত ঠিকানাঃ বাড়ি# ৪৩ (লেভেল-৫) , রোড#১৬ নতুন (পুরাতন ২৭) , ধানমন্ডি , ঢাকা- ১২০৯
ফোনঃ +৮৮-০২৯১২৩৬৭৭