নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: 23/08/2018
মার্কিন অর্থনীতির সুখরে এই নভেম্বরের কংগ্রেস নির্বাচনে রিপাবলিকানদের প্রত্যাশা বাড়তেই পারে। যদিও সাম্প্রতি সমীক্ষাগুলো বলছে, ডেমোক্রেটরা কংগ্রেস নির্বাচেনর এক বা উভয় কক্ষই দখলে নিতে চাচ্ছে। যার অর্থ এটা দাঁড়ায় যে, অর্থনীতি যদি নির্বাচনকে প্রভাবিত নাও করে, নির্বাচন অর্থনীতিকে প্রভাবিত করবেই।
যুক্তরাষ্ট্রের ক্রমবর্ধমান অর্থনীতি ফেডারেল রিজার্ভের নির্ধারিত ২ শতাংশ মুদ্রাস্ফীতি কমানোর লক্ষ্য পূরণ করেছে। আফ্রিকান-আমেরিকান ও স্পেনীয়-আমেরিকানদের জন্য অন্য সময়ের তুলনায় বেকারত্ব কমেছে। প্রথমবারের মতো, যুক্তরাষ্ট্রের কোম্পানিগুলো বেকার জনসাধারণের জন্য আরও চাকরির সুযোগ তৈরি করে দিচ্ছে। আর এমন পরিস্থিতি পূর্বাভাস দেয় যে, যুক্তরাষ্ট্রের যেসব শ্রমিক অর্থনৈতিক সংকটে ছিল, তারা তাদের অবস্থার পরিবর্তন ঘটাতে পারবে। তারা বর্তমান অর্থণীতি থেকে উপকৃত হবে। যা মুদ্রস্ফীতি আরও কমিয়ে দেবে।
যুক্তরাষ্ট্রের নির্বাচনী মডেল অনুযায়ী দেখা যায়, একটি শক্তিশালী অর্থনীতি ক্ষমতাসীন দলকে সমর্থন করে ও একটি দুর্বল অর্থনীতি ক্ষমতাসীন দলের জন্য ক্ষতির কারণ হয়ে দাঁড়ায়। যুক্তরাষ্ট্রে প্রায় এক দশকের বেশি সময় ধরে বিশ্ব অর্থনীতিতে সেরা অবস্থানে রয়েছে। আর সেকারণেই মনে করা হচ্ছে, এই নভেম্বরের নির্বাচনে ডেমোক্রেটিক পার্টি নেতৃত্বে আসবে। অধিকাংশ রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞরা বলছে, ডেমোক্রেটিকরা এই নির্বাচনে প্রতিনিধিদের সহযোগিতা গ্রহণ করবে। আবার অনেকে বলছে, ডেমোক্রেটিকরা রিপাবলিকান চেয়ে অনেক বেশি আসন পেয়ে জয়ী হবে। তবে রিপাবলিকানরা সংখ্যাগরিষ্ঠতা পাওয়ার জন্য পূর্বের নির্বাচনের তুলনায় এই নির্বাচনে নতুন কোনো পন্থা অবলম্বন করবে বলে মনে করছেন অনেকে।
এর বাইরেও নভেম্বরের মধ্যবর্তী নির্বাচন নিয়ে অন্যান্য ব্যাখ্যা রয়েছে। কোনো কোনো আমেরিকান পন্ডিত বলেছে, শুরুর ব্যাখ্যা ভুলও হতে পারে। কারণ ২০১৬ সালের নির্বাচনেও এমন কথা উঠেছিল, এদের অনেকই তখন নির্বাচেনর সঙ্গে জড়িত ছিলেন, এরপরও ওই নির্বাচনে তা ঘটেনি। আবার একই সঙ্গে বলা হচ্ছে, ডোনাল্ড ট্রাম্প ও তাঁর দল নির্বাচনী শহরগুলোর মহিলার ভোটারদের সমালোচনার রোষে পড়ে ক্ষতিগ্রস্থ হতে পারে। তবে যুক্তরাষ্ট্রের অর্থনীতি দ্রুত গতিতে বৃদ্ধি পাওয়ার কারণে অনেক ভোটার ট্রামের নীতিগুলোর বিরোধিতা করবে না বলে মনে করা হচ্ছে।
কিন্তু আরেকটি সম্ভাবনা হলো, নির্বাচনে ‘অর্থনৈতিক প্রভাব’ সত্যকে ধারণ করে না। অর্থনৈতিক সংকট ক্ষমতাসীন দলকে ক্ষতিগ্রস্ত করতে পারে, তবে অর্থনৈতিক শক্তি ক্ষমতাসীন দলকে অতীতের মতো একই প্রকার সাহযোগিতা করে না। কারণ ভোটাররা যখন অর্থনৈতিকভাবে সমৃদ্ধ হয়ে ওঠে, তখন ভোট দেওয়ার ব্যাপারে তাদের নজর থাকে অন্যান্য ইস্যুগুলোতে।
এছাড়া সম্প্রতি এক জরিপে দেখা গেছে, ডেমোক্রেটদের একটি বড় অংশ পুঁজিবাদের থেকে সমাজতন্ত্রকে বেশি পছন্দ করে। একারণে ডেমোক্রেট দল নাগরিকদের জন্য সবসময় সার্বজনীন স্বাস্থ্য বীমা, টিউশন ফ্রি শিক্ষা ব্যবস্থা ও একটা নির্দিষ্ট আয়ের উৎস প্রস্তাব করে আসছে। আর এই এজেন্ডাই ডেমোক্রেটকে কংগ্রেসের উভয় কক্ষকে নিজেদের দখলে নিতে সাহয্য করবে। আর এটার জন্য ইউরোপীয়দের মতো মূল্য সংযোজন কর, উচ্চ আয় এবং বেতন ব্যবস্থার প্রয়োজন হবে বলে মনে করা হচ্ছে।
অন্যদিকে রিপাবলিকানরা মুক্ত বাজার অর্থনীতি ও মুক্ত বাণিজ্যকে বিভক্ত করার মাধ্যমে অভিবাসন ও অন্যান্য তহবিলকে কমাতে চাইছে। ফলে নভেম্বরের মধ্যবর্তী নির্বাচনের পর, যুক্তরাষ্ট্রের চলমান বাণিজ্য যুদ্ধ ও অতিরিক্ত কর দেশটিতে হুমকি স্বরুপ দেখা দিতে পারে। তাই ইউরোপ, চীনসহ ক্রমবর্ধমান বিশ্ব অর্থনীতিতে টিকে থাকার জন্য অবশ্যই যুক্তরাষ্ট্রকে তাদের নীতিগত ভুলগুলো এড়িয়ে চলতে হবে।
লেখক: স্টানফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতির অধ্যাপক ও হোভার ইন্সটিটিউশনের ফেলো
বাংলা ইনসাইডার/বিপি
প্রধান সম্পাদকঃ সৈয়দ বোরহান কবীর
ক্রিয়েটিভ মিডিয়া লিমিটেডের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান
বার্তা এবং বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ ২/৩ , ব্লক - ডি , লালমাটিয়া , ঢাকা -১২০৭
নিবন্ধিত ঠিকানাঃ বাড়ি# ৪৩ (লেভেল-৫) , রোড#১৬ নতুন (পুরাতন ২৭) , ধানমন্ডি , ঢাকা- ১২০৯
ফোনঃ +৮৮-০২৯১২৩৬৭৭