ইনসাইড বাংলাদেশ

বেতন-ভাতাকে কেন্দ্র করে পোশাক শ্রমিকদের উসকানি বামদের

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশ: 15/09/2018


Thumbnail

দেশের রপ্তানি আয়ের প্রধান খাত তৈরি পোশাক শিল্পের শ্রমিকদের ন্যূনতম মজুরি আট হাজার টাকা নির্ধারণ করেছে সরকার। এর ফলে দেশের প্রায় ৪০ লাখ শ্রমিকের মজুরি এখনকার চেয়ে ৫১ শতাংশ বেড়েছে। কিন্তু, সরকার নির্ধারিত বেতন-ভাতা প্রত্যাখান করে পোশাক শ্রমিকদের নিয়ে বিক্ষোভের পাঁয়তারা করছে বাম শ্রমিক সংগঠনগুলো।

সরকার নির্ধারিত শ্রমিকদের নূন্যতম মজুরি আট হাজার টাকা ঘোষণার আগে পোশাক শ্রমিকরা ২০১৩ সালের ১ ডিসেম্বরে ঘোষিত নূন্যতম মজুরি ৫ হাজার ৩০০ টাকা বেতন পাচ্ছিলেন। কিন্তু এবার শ্রমিক সংগঠনগুলো ন্যূনতম মজুরি ১৬ হাজার টাকা নির্ধারণের দাবি জানায়। এই দাবির বিপরীতে পোশাক শিল্প মালিকরা প্রস্তাব করেন ৬ হাজার ৩৬০ টাকা। আবার গবেষণা সংস্থা সিপিডি ন্যূনতম মজুরি ১০ হাজার টাকা করার পক্ষে মত দিয়েছিল।

গত জানুয়ারিতে পোশাক শ্রমিকদের মজুরি পুনর্মূল্যায়নে সরকার মজুরি বোর্ড গঠনের পর বোর্ডের সদস্যরা দফায় দফায় বৈঠক করে মালিক ও শ্রমিক প্রতিনিধিদের নিয়ে। গত বৃহস্পতিবার মজুরি বোর্ডের সদস্যদের নিয়ে সচিবালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে নতুন মজুরি কাঠামোর ঘোষণা দেন শ্রম প্রতিমন্ত্রী মুজিবুল হক চুন্নু।

ঘোষণা অনুযায়ী, পোশাক শ্রমিকদের ন্যূনতম মজুরি হবে ৮ হাজার টাকা। এর মধ্যে বেসিক ৪ হাজার ১০০ টাকা; বাড়ি ভাড়া ২০৫০ টাকা; চিকিৎসা ভাতা ৬০০ টাকা; যাতায়াত ভাতা ৩৫০ টাকা; খাদ্য ভাতা ৯০০ টাকা।

অন্যান্য শ্রমিকদের বেতন-কাঠামো পরে ঘোষণা করা হবে। সেইসঙ্গে আগামী ডিসেম্বরে প্রজ্ঞাপন জারির পর থেকে নতুন বেতন কার্যকর হবে বলে জানান প্রতিমন্ত্রী।

নতুন মজুরি কাঠামো মালিক-শ্রমিক উভয় পক্ষ মেনে নেবে বলে প্রতিমন্ত্রী চুন্নু আশা প্রকাশ করলেও এই মধ্যে আপত্তি এসেছে বামপন্থী শ্রমিক সংগঠনগুলোর পক্ষ থেকে। নূন্যতম মজুরি আট হাজার টাকা ঘোষণার দিন থেকেই বিক্ষোভ করছে গার্মেন্ট শ্রমিক ট্রেড ইউনিয়ন কেন্দ্র, শ্রমিক সংহতিসহ বিভিন্ন সংগঠনের নেতা-কর্মীরা।

গত বৃহস্পতিবার যখন মজুরি বোর্ডের সদস্যরা মজুরি বোর্ডের কার্যালয় থেকে সভা শেষ করে সচিবালয়ে যাচ্ছিলেন, তখন কয়েকশ বিক্ষুব্ধ শ্রমিক ১৬ হাজার টাকা ন্যূনতম মজুরির দাবিতে স্লোগান দিচ্ছিলেন।

এরই ধারাবাহিকতায় গতকাল শুক্রবার জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে বেলা সাড়ে ১১টার দিকে বিক্ষোভ কর্মসূচি পালন করে পোশাক কারখানার শ্রমিকরা। সরকার নির্ধারিত মাসিক বেতন-ভাতা ৮ হাজার থেকে ১৬ হাজার করার দাবিতে রাস্তা অবরোধ করে তারা। এর ফলে রাস্তায় সৃষ্টি হয় তীব্র যানজট।

এরপর পোশাক শ্রমিকরা একটি মিছিল বের করে। সেইসঙ্গে সরকার তাদের দাবি না মানলে তারা কঠোর আন্দোলনে যাওয়ার হুশিয়ারি দেন গার্মেন্টস শ্রমিক ট্রেড ইউনিউন কেন্দ্রের শ্রমিক নেতারা।

এদিকে, আওয়ামী লীগ সমর্থক শ্রমিক নেতারা এবং কিছু কিছু শ্রমিক সংগঠন মজুরি বোর্ডের ঘোষণা মেনে নিলেও কিছু বামপন্থী শ্রমিক সংগঠন এই মজুরি প্রত্যাখ্যান করে আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দিয়েছে। এদের সঙ্গে যোগ দিয়েছে বেশ কিছু সুবিধাবাদী মতলববাজ মহল। যারা শ্রমিকদের এ আন্দোলনকে পুঁজি করে জাতীয় নির্বাচনের আগে দেশে অরাজকতা সৃষ্টির পাঁয়তারা করছে। কর্মবিরতি, সড়ক অবরোধ, গাড়ি ভাঙচুর তাদের আন্দোলনের কর্মসূচীতে রাখা হয়েছে। আর তাদেরকে চোখ বন্ধ করে বিশ্বাস করে ন্যূনতম মজুরি বৃদ্ধির আশায় আন্দোলের নামে অরাজকতা সৃষ্টির প্রস্তুতি নিচ্ছে বামপন্থী শ্রমিক সংগঠনের কর্মীরা। আর শ্রমিকদের এ অন্ধ বিশ্বাসে চক চক করছে কতিপয় স্বার্থান্বেষী মহলের চোখ।

বাংলা ইনসাইডার/বিকে/জেডএ

 



প্রধান সম্পাদকঃ সৈয়দ বোরহান কবীর
ক্রিয়েটিভ মিডিয়া লিমিটেডের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান

বার্তা এবং বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ ২/৩ , ব্লক - ডি , লালমাটিয়া , ঢাকা -১২০৭
নিবন্ধিত ঠিকানাঃ বাড়ি# ৪৩ (লেভেল-৫) , রোড#১৬ নতুন (পুরাতন ২৭) , ধানমন্ডি , ঢাকা- ১২০৯
ফোনঃ +৮৮-০২৯১২৩৬৭৭