ইনসাইড বাংলাদেশ

যেসব ক্ষেত্রে ভারতকে ছাড়িয়ে গেছে বাংলাদেশ

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশ: 15/09/2018


Thumbnail

দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোর মধ্যে আর্থ-সামাজিক বিভিন্ন ক্ষেত্রে ক্রমাগত এগিয়ে যাচ্ছে প্রতিবেশী দুই দেশ ভারত ও বাংলাদেশ। সদ্য প্রকাশিত ইউএনডিপির (জাতিসংঘ উন্নয়ন কর্মসূচি) ‘মানব উন্নয়ন প্রতিবেদন-২০১৮’ তেও এমন চিত্রই উঠে এসেছে। তবে বেশ কয়েকটি সূচকে ভারতকেও পেছনে ফেলে দিয়ে বিশ্বকে অবাক করে দিয়েছে বাংলাদেশ।

ইউএনডিপির এবারের প্রতিবেদনে ১৮৯ দেশের মধ্যে বাংলাদেশ রয়েছে ১৩৬তম অবস্থানে। আর ভারতের অবস্থান ১৩০। গতবছরের তুলনায় বাংলাদেশ এগিয়েছে তিন ধাপ। সেখানে ভারতের অগ্রগতি হয়েছে এক ধাপ।

প্রত্যাশিত আয়ুষ্কাল

ইউএনডিপির প্রতিবেদনের তথ্য অনুযায়ী, বাংলাদেশের নাগরিকদের প্রত্যাশিত আয়ুষ্কাল ৭২ দশমিক ৮ বছর। অন্যদিকে,পার্শ্ববর্তী দেশ ভারতের গড় আয়ু ৬৮ দশমিক ৮ বছর।

ভারতে নারীদের গড় আয়ু ৭০ দশমিক ৪ আর পুরুষদের ৬৭ দশমিক ৩। অন্যদিকে বাংলাদেশে নারীদের গড় আয়ু ৭৪ দশমিক ৬ আর পুরুষদের ৭১ দশমিক ১। প্রত্যাশিত আয়ুষ্কালের দিক থেকে বাংলাদেশের স্কোর শূণ্য দশমিক ৮১২। আর ভারতের শূণ্য দশমিক ৭৫১।

শিশু মৃত্যু

মানব উন্নয়ন সূচক ২০১৮ অনুযায়ী, বাংলাদেশে সদ্যজাত শিশু মৃত্যুর হার ২৮ দশমিক ২। অন্যদিকে ভারতে এই হার ৩৪ দশমিক ৬।

বাংলাদেশে ৫ বছরের কম বয়সী শিশু মৃত্যুর হার প্রতি হাজারে ৩৪ দশমিক ২ জন। ভারতে এই হার ৪৩ জন।

টিকাদান কর্মসূচি

ভারতে শতকরা ৯ টি সদ্যজাত শিশু প্রয়োজনীয় ডিপিটি টিকা থেকে বঞ্চিত হয়। বাংলাদেশে এই সংখ্যা মাত্র ১ জন। ভারতে হামের টিকা থেকে বঞ্চিত হয় শতকরা ১২ জন সদ্যজাত শিশু। বাংলাদেশে এই সংখ্যা মাত্র ৬ জন।

অপুষ্টি

ভারতে ৫ বছরের কম বয়সী শিশুদের অপুষ্টির হার ৩৭ দশমিক ৯। বাংলাদেশে এই হার ৩৬ দশমিক ২।

এইডসের প্রাদুর্ভাব

ভারতে প্রতি ১০০ জনে এইচ আই ভি আক্রান্তের হার শূণ্য দশমিক ৩। অন্যদিকে বাংলাদেশে শূণ্য দশমিক ১।

ম্যালেরিয়ার প্রকোপ

বাংলাদেশে ম্যালেরিয়া আক্রান্তের হার প্রতি হাজারে মাত্র শূণ্য দশমিক ৬ জন। ভারতে এই হার ১৮ দশমিক ৮ জন।

মৃত্যু হার

ভারতের প্রতি হাজারে নারী মৃত্যুর হার ১৩৯ জন। বাংলাদেশের এই হার প্রতি হাজারে ১০৭ জন। ভারতে পুরুষদের ক্ষেত্রে এই হার ২১২ আর বাংলা দেশে ১৪৮।

বৈষম্য

ভারতে শিক্ষা ক্ষেত্রে বৈষম্যের হার ৩৮ দশমিক ৭ শতাংশ। বাংলাদেশে ৩৭ দশমিক ৩ শতাংশ।

ভারতে আয় বৈষম্যের শিকার হয় শতকরা ১৮ দশমিক ৮ শতাংশ আর বাংলাদেশে ১৫ দশমিক ৭ শতাংশ।

জেন্ডার ডেভেলপমেন্ট

জেন্ডার ডেভেলপমেন্ট ইনডেক্স (জিডিআই) এ ভারতের স্কোর শূণ্য দশমিক ৮৪১। এই সুচকেও ভারতের থেকে এগিয়ে বাংলাদেশ। দেশটির স্কোর স্কোর শূণ্য দশমিক ৮৮১।

ভারতে পার্লামেন্টে নারীর আসন ১১ দশমিক ৬ শতাংশ। অন্যদিকে বাংলাদেশে এই হার ২০ দশমিক ৩ শতাংশ।

প্রসূতি সেবা

প্রসূতি সেবার প্রসারের দিক থেকে বাংলাদেশ উন্নত বিশ্বের সঙ্গে পাল্লা দিচ্ছে। ভারতে এখনো প্রসূতি সেবার প্রসার ঘটেনি। অন্যদিকে বাংলাদেশে শতকরা ৬৩ দশমিক ৯ শতাংশ এই সেবা পেয়ে থাকে।

কর্মসংস্থান

ভারতে মোট জনসংখ্যার ৫১ দশমিক ৯ শতাংশ কর্মসংস্থানের সুযোগ পায়। বাংলাদেশে এই হার ৫৪ শতাংশ।

ভারতে বয়স্কদের মধ্যে পেনশন সুবিধা পায় ২৪ দশমিক ১ শতাংশ মানুষ। বাংলাদেশে এ হার ৩৩ দশমিক ৪ শতাংশ।

নিরাপত্তা

ভারতে প্রতি লাখে হত্যার শিকার হন ৩ দশমিক ২ জন। বাংলাদেশে এই সংখ্যা ২ দশমিক ৫ জন।

ভারতে প্রাকৃতিক দুর্যোগের কারণে বাস্তুহারা হয় প্রতি ১০ লাখে ৪৬১ জন। বাংলাদেশে এই সংখ্যা ১৩১ জন।

ভারতে নারীদের আত্মহত্যার হার প্রতি লাখে ১৪ দশমিক ২ জন। পুরুষদের ক্ষেত্রে এই হার ১৭ দশমিক ৯ জন। অপরদিকে বাংলাদেশে এই হার যথাক্রমে ৬ দশমিক ৬ ও ৫ দশমিক ৩ জন।

রেমিটেন্স

ভারতের প্রবাসী আয় জিডিপির ২ দশমিক ৬৬ শতাংশ। বাংলাদেশে এই হার ৫ দশমিক ৪১ শতাংশ।

পরিবেশের ভারসাম্য

কার্বন ডাই অক্সাইড নিঃসণের ক্ষেত্রে ভারতের স্কোর ১.৭ আর বাংলাদেশের ০.৫।

বায়ু দূষণের প্রভাবে ভারতে মৃত্যুর হার প্রতি লাখে ১৮৪ দশমিক ৩ জন। বাংলাদেশে এই হার ১৪৯ জন।

দূষিত পানি এবং পয়নিষ্কাশন অব্যবস্থাপনার কারণে ভারতে মৃত্যু হয় লাখে ১৮ দশমিক ৬ জনের। বাংলাদেশে এই হার ১১ দশমিক ৯ জন।

আর্থ-সামাজিক অবস্থা

বাংলাদেশে দক্ষ শ্রমিক শতকরা ২৭ দশমিক ২ জন। অপরদিকে ভারতে এই সংখ্যা ১৮ দশমিক ৫ জন।

বাংলাদেশে মোট জাতীয় আয়ের বিপরীতে সঞ্চয়ের হার ২৬ শতাংশ। ভারতে এই হার ১৫ দশমিক ৫ শতাংশ।

ভারতে নিরাপদ পানি পানের সুযোগ পায় ৮৭ দশমিক ৬ শতাংশ মানুষ। বাংলাদেশে এ হার ৯৭ দশমিক ৩ শতাংশ।

স্যানিটেশনের দিক থেকেও ভারতের থেকে এগিয়ে বাংলাদেশ। ভারতে নিরাপদ স্যানিটেশনের আওতায় রয়েছে ৪৪ দশমিক ২ শতাংশ মানুষ। বাংলাদেশে এই হার ৪৬ দশমিক ৯ শতাংশ।

বাংলা ইনসাইডার/এএইচসি/জেডএ

 



প্রধান সম্পাদকঃ সৈয়দ বোরহান কবীর
ক্রিয়েটিভ মিডিয়া লিমিটেডের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান

বার্তা এবং বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ ২/৩ , ব্লক - ডি , লালমাটিয়া , ঢাকা -১২০৭
নিবন্ধিত ঠিকানাঃ বাড়ি# ৪৩ (লেভেল-৫) , রোড#১৬ নতুন (পুরাতন ২৭) , ধানমন্ডি , ঢাকা- ১২০৯
ফোনঃ +৮৮-০২৯১২৩৬৭৭