লিভিং ইনসাইড

দেরিতে বিয়ে: গর্ভধারণে জটিলতা

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশ: 17/09/2018


Thumbnail

এখন বিয়ে করবো কি করবো না, প্রতিষ্ঠিত হতে আরও সময় দরকার, উপযুক্ত পাত্র পাওয়া যাচ্ছে না- এগুলো ভাবতে সময় কেটে যায় অনেক। একজন নারীর জীবনে প্রতিষ্ঠিত হতে হতে অনেকটা সময় পেরিয়ে গেলে বিয়ের ক্ষেত্রে অনেকটাই দেরি হয়ে যায়। এতে সামাজিক বিভিন্ন সমস্যার পাশাপাশি যে সমস্যাটা সবচেয়ে প্রকট হয় সেটা হলো গর্ভধারণে বিভিন্ন জটিলতা। বয়সের কারণে সন্তান ধারণক্ষমতা অনেকাংশে হ্রাস পায়। দেরিতে গর্ভধারণে যেসব সমস্যাগুলো দেখা দিতে পারে:

১. একজন নারীর বছরে ১৩ বার ওভুলেশন (ওভুলেশন বা ডিম্বোস্ফোটন সে সময়টাকে বলে যখন ডিম্বাশয় থেকে একটি ডিম্বাণু অবমুক্ত হয়ে ফেলপিয়ান টিউবে অবস্থান করে এবং নিষিক্ত হওয়ার জন্য প্রস্তুত থাকে। পরবতীতে তা ক্রমশ গর্ভাশয়ের এর দিকে আগায়) হয়। অর্থাৎ প্রতি মাসেই গর্ভসঞ্চারের সম্ভাবনা থাকে। কিন্তু বয়স ৩০ পেরিয়ে ৪০ এর দিকে যেতে থাকলে ওভুলেশনের পরিমাণ কমতে থাকে, বছরে ৫-৬ বারেও নেমে আসতে পারে। ফলে আপনার শারীরিক সমস্যা না থাকলেও এই ওভুলেশনের কারণে হয়তো গর্ভধারণে সমস্যায় পড়তে হতে পারে। আর গর্ভধারণ করতে পারলেও ডিম্বানু সুস্থ বা স্বাভাবিক নাও থাকতে পারে। আর ডিম্বানুতে সমস্যা থাকলে বাচ্চার জন্মগত জটিলতা তৈরি হতে পারে, গর্ভপাতও হতে পারে।

২. বয়সের সঙ্গে জরায়ু আর ওভারিতে নানা সমস্যা দেখা দিতে পারে। যেমন ফ্রাইবয়েড, অ্যান্ডোমেট্রিওসিস ইত্যাদি। এটা বন্ধ্যাত্বের অন্যতম কারণ। এতে চিকিৎসায় সমস্যা সারিয়ে তারপর গর্ভসঞ্চার হতে হতে অনেকটা সময় চলে যেতে পারে। আবার কখনো রিস্ক প্রেগন্যান্সির আওতায় গিয়ে সন্তানধারণ সম্ভব নাও হতে পারে।

৩. বয়স বেড়ে যাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে পরিপক্ক ডিম্বানুর সংখ্যা কমে যায়। ফলে শুক্রানুর সঙ্গে নিষিক্ত হওয়ার জন্য যে পরিপক্ক ডিম্বানুর প্রয়োজন তা অনেকসময় পাওয়া সম্ভব হয় না।

৪. বয়স্ক নারীদের সার্ভিক্যাল মিউকাসে সমস্যা দেখা দেয়। বয়স বাড়লে জরায়ু মুখে যে সারভাইকেল ফ্লুইড থাকে তার এসিডের মাত্রা বা পি.এইচ লেভেল কমতে থাকে।

৫. বয়সের কারণে নানারকম শারীরিক সমস্যা হতে পারে যে কারণে গর্ভধারণে সমস্যা হতে পারে। যেমন: ফেলোপিয়ান টিউব ব্লক হতে পারে নানা ইনফেকশনের কারণে।

৬. বেশি বয়সের কারণে অনেক নারীর ওজন বেড়ে যায়। শারীরিক স্থুলতাও গর্ভধারনে বাধা সৃষ্টি করে। সেই সঙ্গে নানারকম স্বাস্থ্যগত সমস্যা, যেমন: ডায়াবেটিস, উচ্চ রক্তচাপ,জরায়ুর সমস্যা, ইত্যাদি দেখা যা নারীর উর্বরতা শক্তি কমিয়ে দেয়।

৭. একটু বেশি বয়স বাড়তে থাকলে মহিলাদের ডিম্বকোষের ক্রোমোজোনালে অস্বাভাবিকতা দেখা দেয় যা উর্বরতা শক্তি হ্রাস করে বা কমিয়ে দেয়। অনেক সময় এ সমস্যার কারণে অনেক বয়স্ক মহিলাদের বিকলাঙ্গ সন্তান জন্ম নেয়।

৮. বেশি বয়সে সন্তান গর্ভে ধারণ করলে গর্ভকালীন ডায়াবেটিস, গর্ভকালীন উচ্চ-রক্তচাপ, হরমোনগত সমস্যা কিংবা বাচ্চা নষ্ট হয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা ইত্যাদি দেখা দিতে পারে। বয়সের সঙ্গে সঙ্গে উচ্চ রক্তচাপ, ডায়বেটিস, হাইপোথাইরয়েডিজম হওয়ার আশঙ্কা বেড়ে যায়, যা গর্ভাবস্থা এবং সন্তানদানের ক্ষেত্রটিকে অনেক বেশি জটিল করে দিতে পারে। কখনো কখনো গর্ভাবস্থার প্রথম দিকে রক্তচাপ হতে পারে।

৯. উচ্চ রক্তচাপের সমস্যা যদি আগে থেকে থাকে বা না থাকলে থার্ড ট্রাইমেস্টারের সময় রক্তচাপ বেড়ে প্রি-অ্যাকলেম্পসিয়ার মতো জটিলতা হয়ে মা ও শিশু দুজনেরই বিপদ হতে পারে।

১০. প্রসবের ধকল কাটিয়ে উঠতে বেশি সময় লেগে যায়। শারীরিক ক্লান্তির পাশাপাশি মানসিক অবসাদও দেখা দিতে পারে। অনেক সময়ে শিশুকে বুকের দুধ খাওয়ানো সম্ভব হয় না।

বাংলা ইনসাইডার/এসএইচ/জেডএ

 



প্রধান সম্পাদকঃ সৈয়দ বোরহান কবীর
ক্রিয়েটিভ মিডিয়া লিমিটেডের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান

বার্তা এবং বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ ২/৩ , ব্লক - ডি , লালমাটিয়া , ঢাকা -১২০৭
নিবন্ধিত ঠিকানাঃ বাড়ি# ৪৩ (লেভেল-৫) , রোড#১৬ নতুন (পুরাতন ২৭) , ধানমন্ডি , ঢাকা- ১২০৯
ফোনঃ +৮৮-০২৯১২৩৬৭৭