ইনসাইড আর্টিকেল

২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলার ঘটনাক্রম

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশ: 18/09/2018


Thumbnail

২০০৪ সালের ২১ আগস্ট আওয়ামী লীগের জনসমাবেশে গ্রেনেড হামলা চালানো হয়। এই হামলার তদন্তে তৎকালীন বিএনপি সরকার গড়িমসি করে। পরবর্তীতে তত্ত্বাবধায়ক সরকার এবং আওয়ামী লীগ সরকারের উদ্যোগে এই মামলার তদন্ত কাজ জোরেশোরে শুরু হয়। ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলার প্রায় ১৪ বছর পর আজ ১৮ সেপ্টেম্বর এই মামলার রায়ের তারিখ ঘোষণা করা হতে পারে। বাংলাদেশের ইতিহাসের ভয়াবহ এই হামলার মামলা ও বিচারিক কার্যক্রমের ঘটনাক্রম তুলে ধরা হলো:

২০০৪ সালের ২১ আগস্ট
বঙ্গবন্ধু এভিনিউতে আওয়ামী লীগের জনসমাবেশে তৎকালীন বিএনপি সরকারের পৃষ্ঠপোষকতায় গ্রেনেড হামলা চালানো হয়। ওই হামলার মূল লক্ষ্য ছিল আওয়ামী লীগ সভাপতি বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনাকে হত্যা করা। কিন্তু সৌভাগ্যক্রমে বেঁচে যান তিনি। ওই হামলায় আওয়ামী লীগের ২৩ নেতা-কর্মী নিহত হন। শেখ হাসিনাকে বাঁচাতে আওয়ামী লীগ নেতারা মানবঢাল রচনা করেন। নারীনেত্রী আইভি রহমান গুরুতর আহত হন।

২০০৪ সালের ২২ আগস্ট
আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে মামলা করতে গেলে পুলিশ মামলা নিতে অনীহা প্রকাশ করে। গ্রেনেড হামলার তদন্তে বিচারপতি জয়নুল আবেদীনের নেতৃত্বে এক সদস্যবিশিষ্ট বিচার বিভাগীয় তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়।

২০০৪ সালের ২৩ আগস্ট
গ্রেনেড হামলা মামলার তদন্ত সিআইডিতে স্থানান্তর করা হয়।

২০০৪ সালের ২৪ আগস্ট
গ্রেনেড হামলায় আহত আওয়ামী লীগের নেত্রী ও প্রয়াত রাষ্ট্রপতি জিল্লুর রহমানের স্ত্রী আইভি রহমান মৃত্যুবরণ করেন।

২০০৪ সালের ২৯ আগস্ট
তদন্ত কাজে সহযোগিতার জন্য মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থা এফবিআই এর দুই কর্মকর্তা মিস জ্যাকুলিন ও জেফ্রি আইলস ঢাকায় আসেন।

২০০৪ সালের ১ সেপ্টেম্বর
তদন্তে সহযোগিতার জন্য ইন্টারপোলের কর্মকর্তা এইচ ডব্লিউ সিন, মারাস ভুসিনাস ও উইসন গিবসনের ঢাকায় আসেন।

২০০৪ সালের ১২ সেপ্টেম্বর
গ্রেনেড হামলার কিছুদিন পরই ১২ সেপ্টেম্বর অষ্টম জাতীয় সংসদের ১৩তম অধিবেশন শুরু হয়। সংসদের ওই অধিবেশনের প্রথম বৈঠকে কার্যপ্রণালী বিধি অনুযায়ী তৎকালীন স্পিকার ব্যারিস্টার মুহম্মদ জমির উদ্দিন সরকার শোক প্রস্তাব আনেন। কিন্তু শোক প্রস্তাবে মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে আইভি রহমানের ছাড়া আর কারও নাম উল্লেখ করা হয়নি।

২০০৪ সালে ২ অক্টোবর
বিচার বিভাগীয় তদন্ত কমিটি ১৬২ পৃষ্ঠার তদন্ত রিপোর্ট দাখিল করে।

২০০৫ সালের ৯ জুন
নোয়াখালীর সেনবাগ থেকে গুলিস্তানের সিডির ব্যবসায়ী জজ মিয়াকে আটক করে পুলিশ। ভোটার আইডি কার্ডে জজ মিয়ার নাম জালাল উদ্দীন।

২০০৬ সালের ২১ আগস্ট
একটি জাতীয় দৈনিকে প্রতিবেদন প্রকাশের পর গ্রেনেড হামলার কথিত প্রধান আসামি জজ মিয়ার মা জোবেদা খাতুন সিআইডির জজ মিয়া নাটকের ঘটনা ফাঁস করে দেন।

২০০৭ সালের ১১ জানুয়ারি
২০০৭ সালে সেনা নিয়ন্ত্রিত তত্ত্বাবধায়ক সরকার রাষ্ট্রক্ষমতায় আসার পর নতুন করে ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলা মামলা তদন্তের নির্দেশ দেওয়া হয়।

২০০৮ সালের ১১ জুলাই
তত্ত্বাবধায়ক সরকারের নির্দেশে পূর্ণ তদন্ত শেষে সিআইডির এএসপি ফজলুল কবীর ২০০৮ সালের ১১ জুলাই হত্যা ও বিস্ফোরক আইনে আদালতে দুটি চার্জশিট জমা দেন। এই চার্জশিটে ২২ জনকে আসামি করা হয় যাদের মধ্যে জোট সরকারের সাবেক উপমন্ত্রী আবদুস সালাম পিন্টু ছাড়া বাকি হরকাতুল জিহাদের জঙ্গি। এই চার্জশিটে উল্লেখ করা হয়, আবদুস সালাম পিন্টুর সহযোগিতায় হরকাতুল জিহাদের জঙ্গিরা আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনাকে হত্যা করে আওয়ামী লীগকে নেতৃত্বশূন্য করার উদ্দেশ্যেই ওই হামলা চালায়।

২০০৯ সালের ১৩ আগস্ট
২০০৯ সালে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসার পর সে বছরের ১৩ আগস্ট থেকে সিআইডি কর্তৃক এই মামলার অধিকতর তদন্ত শুরু হয়।

২০১১ সালের ২ জুলাই
তদন্ত শেষে ২০১১ সালের ২ জুলাই সিআইডি ৩০ জনকে আসামি করে আদালতে সম্পূরক চার্জশিট দাখিল করে। চার্জশিটে উল্লেখিত আসামিরা হলেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক জিয়া, বিএনপি-জামাত জোট সরকারের স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী লুত্ফুজ্জামান বাবর, প্রধানমন্ত্রী থাকাকালে খালেদা জিয়ার রাজনৈতিক সচিব হারিছ চৌধুরী, জামায়াতে ইসলামীর নেতা আলী আহসান মোহাম্মাদ মুজাহিদ, সাবেক সংসদ সদস্য শাহ মোহাম্মদ কায়কোবাদ, খালেদা জিয়ার ভাগ্নে সাইফুল ইসলাম ডিউক প্রমুখ। পুরান ঢাকার নাজিমউদ্দিন রোডের বিশেষ আদালতে আনুষ্ঠানিকভাবে ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলা মামলার বিচারকাজ শুরু হয়।

২০১৪ সালের ৩০ সেপ্টেম্বর
বহুল আলোচিত ‘জজ মিয়া’ মিয়া নাটকের অবসান হয় সেদিন। আদালতে সাক্ষ্য দেওয়ার সময় জজ মিয়া তাঁর ওপর তৎকালীন পুলিশি নির্যাতনের বর্ণনা দেন।

২০১৮ সালের ১৭ সেপ্টেম্বর
আদালতে রাষ্ট্রপক্ষের আইনগত ব্যাখ্যা উপস্থাপন শেষ হয়।

২০১৮ সালের ১৮ সেপ্টেম্বর
২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলা মামলার রায়ের তারিখ ঘোষণা করা হতে পারে।

বাংলা ইনসাইডার/এসএইচটি/জেডএ

 



প্রধান সম্পাদকঃ সৈয়দ বোরহান কবীর
ক্রিয়েটিভ মিডিয়া লিমিটেডের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান

বার্তা এবং বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ ২/৩ , ব্লক - ডি , লালমাটিয়া , ঢাকা -১২০৭
নিবন্ধিত ঠিকানাঃ বাড়ি# ৪৩ (লেভেল-৫) , রোড#১৬ নতুন (পুরাতন ২৭) , ধানমন্ডি , ঢাকা- ১২০৯
ফোনঃ +৮৮-০২৯১২৩৬৭৭