নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: 20/09/2018
তথ্য প্রযুক্তি মন্ত্রী মোস্তাফা জব্বার বলেছেন, গণমাধ্যম দমনে বা নিয়ন্ত্রণে নয়, ডিজিটাল অপরাধ দমনে ডিজিটাল নিরাপত্তা বিল আইন পাস করা হয়েছে। মতামত প্রকাশের জন্য যাতে কোনো সমস্যা না হয় সে জন্য তথ্য অধিকার আইনও এখানে সম্পূর্ণ অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে।’
গতকাল বুধবার সংসদে জাতীয় পার্টির কয়েকজন সংসদ সদস্য ডিজিটাল নিরাপত্তা বিল ২০১৮ নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করলে তথ্য প্রযুক্তি মন্ত্রী এই কথা বলেন।
মন্ত্রী সংসদে ডিজিটাল নিরাপত্তা বিল আইনের প্রয়োজনীয়তা ব্যাখ্যা করে বলেন, ‘নাসিরনগর, রামু, বগুড়ায় কী ঘটনা ঘটেছে? সাম্প্রতিককালে ছাত্র আন্দোলনের নামে কী ঘটনা ঘটেছে, সেটা যদি বিবেচনায় আনা হয়, তাহলে এই বিলটির যৌক্তিকতা প্রমাণ হয়।’
আইন নিয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলোচনা করা হয়েছে এবং সরকার তাদের মতামতগুলোকে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়েছে উল্লেখ করে মন্ত্রী মোস্তাফা জব্বার বলেন, ‘যেসব সংশোধনী করা দরকার বলে তারা যেসব পরামর্শ দিয়েছেন, তার সবই এখানে আনা হয়েছে। সাংবাদিক নেতারা আমাদের সঙ্গে আইনমন্ত্রীর সঙ্গে, সংসদীয় কমিটির সঙ্গে আলোচনায় যেসব প্রস্তাব দিয়েছেন, সম্ভবত সেসব কথা ভুলে গেছেন। নইলে এখন এই বিলের সমালোচনা করতেন না তারা।’
মন্ত্রী বলেন, ‘মত প্রকাশের স্বাধীনতা নিশ্চিত করার জন্য এখানে ৫৭ ধারা বাতিল হয়েছে। সাংবাদিকরা আপত্তি করেছেন ৩২ ধারা নিয়ে। তারা গুপ্তচরবৃত্তির কথা বলেছিলেন, সংসদীয় কমিটি সেটা বাদ দিয়ে অফিসিয়াল সিক্রেসি অ্যাক্ট সংযোজন করা হয়েছে। আর অফিসিয়াল সিক্রেসি অ্যাক্টের কোনো অপব্যবহারের নজির নেই। কোনো মামলাও হয়নি।’
গতকাল বুধবার বহুল আলোচিত এবং সমালোচিত তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি আইনের ৫৭ ধারাসহ কয়েকটি ধারা বাতিল করে নতুন ডিজিটাল নিরাপত্তা বিল সংসদে পাস হয়। জাতীয় সংসদে ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রী মোস্তাফা জব্বার বিল পাসের প্রস্তাব উত্থাপন করার পর বিলটি কণ্ঠভোটে পাস হয়।
নতুন এই আইনের ৩২ ধারায় অফিসিয়াল সিক্রেট অ্যাক্ট প্রয়োগ করে সরকারি কোন কম্পিউটার, ডিজিটাল ডিভাইস, কম্পিউটার নেটওয়ার্ক, ডিজিটাল নেটওয়ার্ক বা অন্য কোনও ইলেকট্রনিক্স মাধ্যমে সংগ্রহীত তথ্যকে (‘তথ্য পাচারের’) অপরাধ হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে। এই অপরাধ সংঘটন ও সংঘটনে সহায়তা দায়ে ১৪ বছর কারাদণ্ড বা ২৫ লাখ টাকা অর্থদণ্ড বা উভয় দণ্ডের বিধান রাখা হয়েছে। যদি কেউ একই অপরাধ দ্বিতীয়বার বা বারবার সংঘটিত করেন, তাহলে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড বা ১ কোটি টাকা অর্থদণ্ড বা উভয় দণ্ডে দণ্ডিত হবেন। আইনে পুলিশকে বিনা ওয়ারেন্টে তল্লাশি ও গ্রেফতারের পাশাপাশি ক্ষতিকর তথ্য-উপাত্ত ব্লক বা অপসারণের বিধানও রাখা হয়েছে।
এছাড়া এই আইনের অধীনে সব কাজকে দায় মুক্তি দেওয়া হয়েছে। এমনকি জাতীয় ডিজিটাল নিরাপত্তা কাউন্সিলের মহাপরিচালককে প্রয়োজনবোধে নিজ ক্ষমতা এজেন্সির কোন কর্মচারী এবং অন্যকোন ব্যক্তি বা পুলিশ অফিসারকে অর্পণ করারও ক্ষমতা দেওয়া হয়েছে।
স্বাধীন সাংবাদিকতা ও গণতন্ত্রের জন্য হুমকি চিহ্নিত করে প্রস্তাবিত এই আইনটিকে পাস না করতে কয়েকদিন আগেও আহ্বান জানিয়েছিল সম্পাদক পরিষদ।
বাংলা ইনসাইডার/এসএইচটি
প্রধান সম্পাদকঃ সৈয়দ বোরহান কবীর
ক্রিয়েটিভ মিডিয়া লিমিটেডের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান
বার্তা এবং বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ ২/৩ , ব্লক - ডি , লালমাটিয়া , ঢাকা -১২০৭
নিবন্ধিত ঠিকানাঃ বাড়ি# ৪৩ (লেভেল-৫) , রোড#১৬ নতুন (পুরাতন ২৭) , ধানমন্ডি , ঢাকা- ১২০৯
ফোনঃ +৮৮-০২৯১২৩৬৭৭