ইনসাইড পলিটিক্স

রাজনৈতিক অসুখে আজও আদালতে আসবেন না বেগম জিয়া

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশ: 20/09/2018


Thumbnail

পুরান ঢাকার নাজিমউদ্দিন রোডের পুরোনো ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারে আবারও আদালত বসছে আজ। জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট মামলায় এই নিয়ে চতুর্থ বারের মতো কারাগারে আদালত বসছে। তবে সর্বশেষ দু’বারের মতো আজও আদালতে উপস্থিত থাকবেন না বেগম জিয়া। অসুস্থতার কথা বলেই তিনি আজ আদালতে হাজির হচ্ছেন না বলে জানা গেছে।

বেগম জিয়ার জন্য বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বিএসএমএমইউ) পাঁচ বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের সমন্বয়ে গঠিত মেডিকেল বোর্ড সম্প্রতি কারাগারে গিয়ে বেগম জিয়াকে দেখেছে। পরীক্ষার পরদিন মেডিকেল বোর্ডের দেওয়া প্রতিবেদনে বলা হয়, স্বাস্থ্য ঝুঁকিতে নেই বেগম জিয়া। মেডিকেল বোর্ডের প্রধান অধ্যাপক আব্দুল জলিল চৌধুরী (ইন্টারনাল মেডিসিন) বাংলা ইনসাইডারকে, বেগম খালেদা জিয়ার তেমন কোনো অসুস্থতা নেই। তাঁর যেসব অসুখ দেখা গেছে তার সবই বার্ধক্যজনিত। হাসপাতালে নিয়ে বেগম জিয়ার কিছু টেস্ট করার কথা আমরা বলেছিলাম। তবে বেগম জিয়াকে হাসপাতালে ভর্তি করে চিকিৎসার মতো কোনো অসুখ নেই।

অথচ বেগম জিয়া গতকাল কারাগারে আসা তাঁর আইনজীবীদের বলেছেন, তিনি আদালতে যেতে প্রস্তুত কিন্তু শরীর ভালো না থাকায় তিনি যেতে পারছেন না। বেগম জিয়াকে প্রথম যখন কারাগারের আদালতে নেওয়া তখন বলেছিলেন, এই আদালতে তিনি আর আসবেন না। যা খুশি রায় আদালত চাইলে দিতে পারে। এরপর থেকে প্রতিবারই আদালতে বলছেন অসুস্থতার জন্য তিনি আদালতে হাজির হতে পারবেন।

অনেকের মনে প্রশ্ন উঠতেই পারে, অসুস্থতার কথা বলে বেগম জিয়ার চ্যারিটেবল মামলার কার্যক্রম ব্যাহত করে লাভ কোথায়? উওরটা দিচ্ছেন রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা। তাঁদের মতে, জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট মামলায় ৫ বছরের জন্য দণ্ডিত হয়ে কারাগারে যাওয়া বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া চ্যারিটেবল মামলায় দণ্ডিত হলে আগামী নির্বাচনে অংশগ্রহণের সব যোগ্যতাই হারাবেন। অরফানেজ মামলায় দণ্ডিত হলেও বেগম জিয়ার আগামী নির্বাচনে অংশগ্রহণের আশা এখনো বেঁচে আছে। অরফানেজ মামলার আপিল হাইকোর্টে চলছে। কোনোভাবে যদি মামলার কার্যক্রম নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার পর পর্যন্ত টেনে নেওয়া যায়, তাহলে মামলা এখনো চলমান এই পরিপ্রেক্ষিতে আদালত বেগম জিয়াকে নির্বাচনে অংশগ্রহণের সুযোগ দিতে পারেন। কিন্তু চ্যারিটেবল মামলায়ও দণ্ডিত হলে বেগম জিয়া দুই মামলায় দণ্ডিত হয়ে পড়বেন। তখন আদালত থেকে নির্বাচনের অনুমতি আর পাবেন না বেগম জিয়া। বিএনপি চেয়ারপারসন ভালোভাবেই জানেন চ্যারিটেবল মামলার শুনানিও শেষ পর্যায়ে যেকোনো সময় এর রায় হতে পারে। তাই শেষ সময়ে মামলার কার্যক্রম ব্যাহত করার প্রচেষ্টা।

গতকাল আইনজীবীদের বেগম জিয়া আবার বলেছেন, চিকিৎসার জন্য বিএসএমএমইউ যাবেন না তিনি। সিএমএইচেও তিনি যেতে চান না। বেসরকারি হাসপাতাল ইউনাইটেড ছাড়া কোথাও যাবেন না তিনি। রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা বলছেন, এর পেছনেও আছে মামলা দীর্ঘায়িত করার প্রচেষ্টা। কারণ বিএসএমএমইউসহ সরকারি কোনো হাসপাতাল বা সিএমএইচ থেকে তিনি অসুস্থতা ছাড়া অসুস্থতার কোনো সার্টিফিকেট পাবেন না। কিন্তু বেসরকারি হাসপাতালে প্রভাব খাটিয়ে তিনি অসুস্থ এমন একটি সার্টিফিকেট পাওয়া বিএনপি চেয়ারপারসনের জন্য কঠিন কিছু নয়। বেগম জিয়ার আদালতে না যাওয়া এবং অসুখ দুটোই যেমন রাজনৈতিক তেমনি রাজনৈতিক তাঁর বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসার বিষয়টি।


বাংলা ইনসাইডার/জেডএ 
 



প্রধান সম্পাদকঃ সৈয়দ বোরহান কবীর
ক্রিয়েটিভ মিডিয়া লিমিটেডের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান

বার্তা এবং বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ ২/৩ , ব্লক - ডি , লালমাটিয়া , ঢাকা -১২০৭
নিবন্ধিত ঠিকানাঃ বাড়ি# ৪৩ (লেভেল-৫) , রোড#১৬ নতুন (পুরাতন ২৭) , ধানমন্ডি , ঢাকা- ১২০৯
ফোনঃ +৮৮-০২৯১২৩৬৭৭