লিভিং ইনসাইড

হিটস্ট্রোক থেকে বাঁচতে হলে…

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশ: 21/09/2018


Thumbnail

দুইদিন থেকে তীব্র গরম, বাইরে সূর্যের তাপ একেবারে সহ্যই করা যাচ্ছে না। ঘরের মধ্যে তবুও ফ্যান বা এসির মধ্যে থাকলে কিছুটা শান্তি পাওয়া যাচ্ছে। এরই মধ্যে ছেলেকে স্কুলে দিয়ে হেঁটেই বাড়িতে ফিরছিলেন হাসানুল সাহেব। স্কুল থেকে বাসা বেশিদূরে নয় বলে হেঁটেই রওনা দিলেন। কিন্তু এই গরমে ঘেমে, হাঁপিয়ে কেমন যেন অসুস্থ লাগছিলো তার। বাড়ি ফিরে মাথাব্যথার সঙ্গে শুরু হলো মাথাঘোরা, বমি পেতে লাগলো। বুঝতে পারছিলেন না যে কেন এমন হচ্ছে। এই অবস্থায় মাথা ঘুরে তিনি পড়ে গেলেন। তাকে হাসপাতালে নেওয়ার পর বোঝা গেলো অসম্ভব গরমে হিটস্ট্রোক হয়েছে তার।

কেন হয় হিটস্ট্রোক

হিটস্ট্রোক একটি গুরুতর অবস্থা এবং এটি মারাত্মক হতে পারে। মাথা ঘোরা, মানসিক পরিবর্তন এবং বমি বমি ভাব এর লক্ষণ হতে পারে। যদি শরীরের তাপমাত্রা ৪০ ডিগ্রি সেলসিয়াস উপরে উঠে এবং শরীর ঠাণ্ডা রাখার ক্ষমতা হারিয়ে ফেলে তাহলে একে হার্টস্ট্রোক হিসেবে বিবেচনা করা হয়। যুবক, প্রাপ্তবয়স্ক এবং অতিরিক্ত ওজনের ব্যক্তিরা হিটস্ট্রোকের ঝুঁকিতে রয়েছেন। গরম আবহাওয়ায় শারীরিক পরিশ্রমের কারণেও হিটস্ট্রোক হতে পারে।

লক্ষণ

যেকোনো বয়সীরা হিটস্ট্রোকে আক্রান্ত হতে পারেন। কারও বেশি গরম লাগলে এবং শরীর থেকে ঘাম বেরিয়ে গেলে অনেক ক্লান্ত বোধ হয়। একই সঙ্গে গরম আবহাওয়ায় আক্রান্ত ব্যক্তি দুর্বল হয়ে পড়েন এবং তার মাংসপেশী অসার হয়ে আসে। এ সময় শরীর যদি সঠিক তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণ করার ক্ষমতা হারিয়ে ফেলেন তাহলে মারাত্মক দুর্ঘটনা ঘটতে পারে। এর ফলে তার হিটস্ট্রোক হতে পারে। এর লক্ষণগুলো জেনে নেওয়া ভালো-

১. শরীরের তাপমাত্রা হঠাৎ করে অনেক বেড়ে যাওয়াই হিটস্ট্রোকের প্রধান বৈশিষ্ট্য। তাই তাপমাত্রা বেড়ে গেলে সাবধান হতে হবে।

২. হিটস্ট্রোক হলে হঠাৎ করে মানসিক পরিবর্তন ঘটতে পারে। এই যেমন বিভ্রান্তি, হৃদরোগ, প্রলাপ, বিরক্ত হওয়া, অসুস্থতা প্রভৃতি হতে পারে।

৩. কারো হিটস্ট্রোক হলে তার ঘামেও পরিবর্তন দেখা যায়। গরম আবহাওয়ায় চামড়া শুকিয়ে শুষ্ক হয়ে যায়। এ সময় ঘাম শরীরে গরম একটা অনুভূতি ছড়িয়ে দেয়। 

৪. হিটস্ট্রোক হলে তার অবশ্যেই বমি বমি ভাব হবে। গরম আবহাওয়ার কারণেই তার অসুস্থবোধ হয় এবং বমি বমি লাগে।

৫. আর হিটস্ট্রোক হলে মাথাব্যথা খুবই স্বাভাবিক একটি বিষয়।  আর শরীর গরম হয়ে গেলে ত্বক লাল হতে পারে। শ্বাস দ্রুত এবং শ্বাস কষ্ট হতে পারে। আবার শরীর যখন ঠাণ্ডা করার পদক্ষেপ নিতে থাকলে তখন হৃদস্পন্দন বেড়ে যায়। 

চিকিৎসা

১. কোনো ব্যক্তি হিটস্ট্রোকে আক্রান্ত হলে যত দ্রুত সম্ভব তার ভেতরের তাপমাত্রা কমিয়ে আনা জরুরি অবশ্যই। হিটস্ট্রোকের প্রাথমিক চিকিৎসাই হলো রোগীর তাপমাত্রা কমানো এবং সম্ভাব্য ক্ষতি প্রতিরোধ করা। আক্রান্ত হলে সেক্ষেত্রে কি করণীয়-

২. কোনো ব্যক্তি হিটস্ট্রোকে আক্রান্ত হলে তাকে ঠাণ্ডা পানিতে নিমজ্জিত রাখতে হবে অথবা তাকে বরফ পানি দিয়ে গোসল করাতে হবে তখনই।

৩. গোসল করানো না গেলে তার শরীর ঠাণ্ডা পানিতে মুছিয়ে দিতে হবে। কারণ ঠাণ্ডা পানি শরীরের অতিরিক্ত তাপমাত্রা বাষ্পীভূত হয়ে উড়ে যেতে সাহায্য করে। ফলে শরীরও ঠাণ্ডা হয়ে আসে।

৪. হিটস্ট্রোকে আক্রান্ত ব্যক্তিকে ভোজানো কম্বলে মুড়িয়ে রাখুন। আবার ত্বক এবং শরীরের বিভিন্ন অংশে আইসপ্যাকের ব্যবহারও শরীরের তাপমাত্রা কমাতে কাজ করে। শরীরের তাপমাত্রা কমাতে চাইলে বেনজোডিয়াজেপিনস নামের ওষুধও ব্যবহার করতে পারেন।

৫. হিটস্ট্রোক মূলত এমন একটি গুরুতর অবস্থা, যে কেউ এতে আক্রান্ত হলে তৎক্ষণাৎ চিকিৎসকের কাছে যাওয়া উচিত। তবে যতক্ষণ পর্যন্ত চিকিৎসকের কাছে না যেতে পারবেন, ততক্ষণ শরীরের তাপমাত্রা কমাতে এই পদ্ধতিগুলো মানুন।


বাংলা ইনসাইডার/এসএইচ/জেডএ 



প্রধান সম্পাদকঃ সৈয়দ বোরহান কবীর
ক্রিয়েটিভ মিডিয়া লিমিটেডের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান

বার্তা এবং বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ ২/৩ , ব্লক - ডি , লালমাটিয়া , ঢাকা -১২০৭
নিবন্ধিত ঠিকানাঃ বাড়ি# ৪৩ (লেভেল-৫) , রোড#১৬ নতুন (পুরাতন ২৭) , ধানমন্ডি , ঢাকা- ১২০৯
ফোনঃ +৮৮-০২৯১২৩৬৭৭