ইনসাইড পলিটিক্স

সন্দেহের তীর যাদের দিকে

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশ: 21/09/2018


Thumbnail

একাদশ জাতীয় নির্বাচনকে সামনে রেখে দেশের বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের মধ্যে সরকার বিরোধী জাতীয় ঐক্য প্রক্রিয়া জোরেসোরে চলছে। কিন্তু জাতীয় ঐক্যের সঙ্গে সম্পৃক্ত কিংবা সম্পৃক্ত হতে যাওয়া দলগুলোর কয়েকজন রাজনীতিবিদকে নিয়ে এখনো সন্দেহ ও অবিশ্বাস রয়েই গেছে। প্রধানত, এটি একটি সরকার বিরোধী জোট। কিন্তু অনেকে মনে করছেন এই জোটে সরকারের কিছু এজেন্ট আছে যারা জোটকে গতিশীল করার সময়টাতে সবকিছু ভণ্ডুল করে দেবেন এবং  এমন কিছু একটা করবেন যাতে ঐক্য প্রক্রিয়ার পুরো লাভটা সরকারের ঘরে চলে যায়।

জাতীয় ঐক্য প্রক্রিয়ার জন্য বেশ কয়েকজনকে ঠিক বিশ্বাসভাজন বলে ভাবা হচ্ছে না। এই রকম সন্দেহের তালিকায় যারা আছে তাদের মধ্যে প্রথম হলেন বিকল্পধারার যুগ্ম মহাসচিব মাহী বি. চৌধুরী। বিকল্পধারার প্রেসিডেন্ট অধ্যাপক বদরুদ্দোজা চৌধুরীর ছেলে মাহী বি. চৌধুরী প্রথম থেকেই জামাত ইস্যুতে সোচ্চার এবং তিনি বলছেন যারা প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে জামাতের সঙ্গে জড়িত তাদের সঙ্গে জোটে তাঁর আগ্রহ নেই।আর জামাতের সঙ্গে পরোক্ষভাবে জড়িত বলতে বিএনপিকেই বোঝায়। এসব বিবেচনায় শেষ পর্যন্ত যদি যুক্তফ্রন্ট ও বিকল্পধারা ঐক্য প্রক্রিয়ায় থেকেও যায় তাহলে মাহীকেই সবচেয়ে বেশি সন্দেহের চোখে দেখা হবে।মাহী যে কোনো সময় বিশ্বাস ভঙ্গ করতে পারেন বলে মনে করছেন ঐক্য প্রক্রিয়ার নেতারা।

ঐক্য প্রক্রিয়ার সঙ্গে এখনো যুক্ত হননি কিন্তু যোগাযোগ রেখে চলেছেন কৃষক শ্রমিক জনতা লীগের প্রেসিডেন্ট বঙ্গবীর কাদের সিদ্দিকী। ঐক্য প্রক্রিয়ার পরিপ্রেক্ষিতে কাদের সিদ্দিকীকেও সন্দেহের তালিকায় রাখা হয়েছে। এর কারণ হচ্ছে, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনার ব্যাপারে তাঁর অবস্থান অত্যন্ত সুস্পষ্ট। তিনি সবসময় বলেছেন, জাতির পিতাকে যারা স্বীকার করে না তাদের সঙ্গে তিনি ঐক্য করবেন না। তবে কাদের সিদ্দিকীর সঙ্গে গণফোরাম সভাপতি ও জাতীয় ঐক্যের নেতা ড. কামাল হোসেনের বেশ ভালো সখ্যতা রয়েছে, সে কারণে শেষ পর্যন্ত কাদের সিদ্দিকী ঐক্য প্রক্রিয়ার সঙ্গে থাকতেও পারেন। কিন্তু একটি পর্যায়ে গিয়ে কাদের সিদ্দিকীও যে বিগড়ে যাবেন না তার কোনো নিশ্চয়তা নেই। এই কারণে সন্দেহের তালিকায় উপরের দিকে আছেন বঙ্গবীর কাদের সিদ্দিকী।

সন্দেহের তীর আছে লিবারেল ডেমোক্র্যাটিক পার্টির (এলডিপি) সভাপতি কর্নেল অলি আহমেদের দিকেও। এলডিপি নিবন্ধিত রাজনৈতিক দল হওয়ায় ২০ দলীয় জোট থেকে যে দলগুলো ঐক্য প্রক্রিয়ায় যাবে তার মধ্যে অন্যতম ধরা হচ্ছে এলডিপিকে। তবে, এলডিপির সভাপতির সঙ্গে গত এক-দেড় বছর ধরে  অত্যন্ত ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক রয়েছে সরকারের। এছাড়া কর্নেল অলি আহমেদ তারেক জিয়া বিরোধী হিসেবে পরিচিত এবং তিনি অত্যন্ত সৎ একজন রাজনীতিবিদ। বিএনপি থেকে সরে আসার কারণে বিএনপির ব্যাপারে তাঁর একটি ক্ষোভ ও বেদনার জায়গাও রয়েছে। কাজেই তিনিও যে জোটের সঙ্কটকালীন সময়ে ঐক্য প্রক্রিয়া থেকে বেরিয়ে গিয়ে আওয়ামী লীগকে সমর্থন দেবেন না তার কোনো নিশ্চয়তা নেই।

তরুণ রাজনীতিবিদদের মধ্যে অন্যতম জনপ্রিয় হচ্ছেন বিজেপি (মঞ্জুর) বর্তমান চেয়ারম্যান ব্যারিস্টার আন্দালিব রহমান পার্থ। দল হিসেবে বিজেপির তেমন নামডাক না থাকলেও নিবন্ধিত রাজনৈতিক দল হিসেবে ঐক্য প্রক্রিয়ার এর আলাদা গুরুত্ব রয়েছে। কিন্তু আন্দালিব রহমান পার্থ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার আত্মীয়। আত্মীয়তা ছাড়াও আওয়ামী লীগে সঙ্গে রয়েছে তাঁর ঘনিষ্ঠ যোগাযোগ৷ গত কিছুদিন ধরে ঐক্য প্রক্রিয়া বিষয়ে তাঁর নীরবতাই একথা প্রমাণ করে। তাই নতুন জোটের নেতারা আশঙ্কা করছেন, ঐক্য প্রক্রিয়া যখন হবে আন্দালিব রহমান পার্থর দিকে থেকেও সমস্যা সৃষ্টি হতে পারে।

জাতীয় ঐক্য প্রক্রিয়া অনেকটা এগিয়ে গেলেও এই চারজন রাজনীতিবিদকে এই প্রক্রিয়ার জন্য বিশ্বস্ত ভাবা হচ্ছে না। এই লোকগুলোর জন্যই ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ ঐক্য প্রক্রিয়ার ব্যাপারে নিশ্চিন্ত কী না সেটি নিয়ে বিএনপির মধ্যেও সন্দেহ আছে। আর নাগরিক ঐক্যের আহ্বায়ক মাহমুদুর রহমান মান্না থেকে শুরু করে জাসদের আ স ম আব্দুর রব - যারাই এই ঐক্য প্রক্রিয়ার উদ্যোক্তা তাঁরাও এই ব্যক্তিদের সন্দেহের চোখে দেখছেন।

বাংলা ইনসাইডার/এসএইচটি/জেডএ
 


প্রধান সম্পাদকঃ সৈয়দ বোরহান কবীর
ক্রিয়েটিভ মিডিয়া লিমিটেডের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান

বার্তা এবং বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ ২/৩ , ব্লক - ডি , লালমাটিয়া , ঢাকা -১২০৭
নিবন্ধিত ঠিকানাঃ বাড়ি# ৪৩ (লেভেল-৫) , রোড#১৬ নতুন (পুরাতন ২৭) , ধানমন্ডি , ঢাকা- ১২০৯
ফোনঃ +৮৮-০২৯১২৩৬৭৭