ইনসাইড পলিটিক্স

বিএনপির কট্টরপন্থীরা নেই ঐক্য প্রক্রিয়ায়

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশ: 22/09/2018


Thumbnail

গণফোরাম সভাপতি ড. কামাল হোসেনের সভাপতিত্বে আজ বিকেলে মহানগর নাট্যমঞ্চে অনুষ্ঠিত হলো জাতীয় ঐক্য প্রক্রিয়ার ব্যানারে নাগরিক সমাবেশে। এই সমাবেশের বিএনপির কয়েকজন নেতার উপস্থিতি ছিল লক্ষণীয়। সমাবেশে উপস্থিত ছিলেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন, ব্যারিস্টার মওদুদ আহমেদ, ড. মঈন খান। বিএনপির এই নেতারা আগামী নির্বাচনে যেকোনো মূল্যে নির্বাচনে যাওয়ার পক্ষে। গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, মির্জা আব্বাস, নজরুল ইসলাম খান, আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরীর মতো নেতারা যাঁরা বিএনপির স্থায়ী কমিটিতে কট্টরপন্থী বলে পরিচিত, নির্দলীয় নিরপেক্ষ তত্ত্বাবধায়ক সরকার ছাড়া কোনোভাবেই নির্বাচনে যাওয়ার পক্ষে নয় যাঁরা, তাঁদের দেখা যায়নি আজকের সমাবেশে। বিএনপি জাতীয় ঐক্য প্রক্রিয়ায় যোগ দেওয়ার কথা হলেও শুরুতেই দলটির মধ্যে ঐক্য নিয়ে মতপার্থক্য স্পষ্ট হয়ে দেখা দিল।

কট্টরপন্থী বলে পরিচিত বিএনপির নেতাদের যুক্তি হলো, দলীয় সরকারের অধীনেই যদি এবার নির্বাচনে যাই, তাহলে ২০১৪ তে কেন গেলাম না। দুটি মৌলিক বিষয় পূরণ না হলে তাঁরা কোনোভাবেই নির্বাচনে যাওয়ার পক্ষপাতী নয়। বিষয়গুলো হলো, বিএনপির চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার নি:শর্ত মুক্তি এবং নির্দলীয় নিরপেক্ষ তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দাবি অর্জন। এই দুই দাবি পূরণ না কোনোভাবেই বিএনপির নির্বাচনে যাওয়া উচিত নয় বলে মত কট্টরপন্থী নেতাদের।

বিএনপির এই কট্টরপন্থী নেতারা মনে করেন, ডা. কামাল-বি. চৌধুরীর ঐক্য প্রক্রিয়া হলো সরকারের আরেকটি ফাঁদ। তাঁদের মতে, এই ঐক্য শেষ পর্যন্ত নির্বাচনমুখী হবে এবং এক্ষেত্রে বড় ভূমিকা রাখবেন বি. চৌধুরী। আর শেষ পর্যন্ত আন্দোলনের এক পর্যায়ে যদি জোট ভেঙ্গে যায় এবং এর একটি অংশ যদি নির্বাচনে যায়, তখন সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত হবে বিএনপি। আর এমনটি ঘটলে পরিস্থিতি হবে ২০১৪’র চেয়েও খারাপ। ২০১৪ তে প্রায় সব রাজনৈতিক দলই নির্বাচন বর্জন করেছিল। আর এবার জাতীয় ঐক্য করে একটি অর্ধেক অংশ যদি নির্বাচনে যায়, তাহলে সেটি হবে এক বড় প্রহসন। আর এই প্রহসনের মাধ্যমে বৈধতা দেওয়া হবে সরকারকেই।

এসব কারণেই মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীররা ঐক্য প্রক্রিয়ার মধ্যে গেলেও বিএনপির গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, মির্জা আব্বাস, নজরুল ইসলাম খান, আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরীর মতো নেতারা ঐক্য প্রক্রিয়ার সমাবেশে যায়নি। অবশ্য আজকের সমাবেশে না যাওয়ার পেছনে আরেকটি কারণ ছিল তাঁদের। তাঁদের মতে, বিএনপি একটি অন্যতম বৃহৎ রাজনৈতিক দল। বিএনপি যদি কোনো ঐকে যায় তবে সেই ঐক্যটি হতে হবে তাঁদের নেতৃত্বে। যেমন ঐক্য বিএনপি করেছিল এরশাদ বিরোধী আন্দোলনে। ওই সময় বিএনপির গঠন করেছিল ৭ দলের ঐক্য। তৎকালীন সময়ে আওয়ামী লীগ ছিল দেশের বৃহত্তম রাজনৈতিক দল। তাই আওয়ামী লীগের সঙ্গে বিএনপি ঐক্য করেনি। তবে আওয়ামী লীগের সঙ্গে ঐক্য না করেও স্বৈরাচার পতনে ভূমিকা রেখেছিল বিএনপি। আওয়ামী লীগ বিএনপি পাশাপাশি থেকেই স্বৈরাচারের পতন ঘটিয়েছিল। বিএনপির দীর্ঘ সময়ের পরীক্ষিত নেতারা মনে করেন, বিএনপি যদি কারও অধীনে ঐক্যে যায়, তাহলে তাদের অবস্থানই দুর্বল হয়ে পড়ে।

জানা গেছে, বিএনপির ঐক্যে যাওয়া নিয়ে দলটির নেতাদের মধ্যে তীব্র মতবিরোধ ও মতপার্থক্য রয়েছে। অবশ্য এমন মতপার্থক্য থাকা সত্ত্বেও বিএনপির একটি অংশ জাতীয় ঐক্যে গেছে। এখন ঐক্য গিয়ে বিএনপির একটি অংশ যদি নির্বাচনে যাওয়ার পক্ষে থাকে তাহলে দলটির মধ্যে ভাঙ্গন অনিবার্য বলেই মনে করেন রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা। 

বাংলা ইনসাইডার/জেডএ 



প্রধান সম্পাদকঃ সৈয়দ বোরহান কবীর
ক্রিয়েটিভ মিডিয়া লিমিটেডের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান

বার্তা এবং বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ ২/৩ , ব্লক - ডি , লালমাটিয়া , ঢাকা -১২০৭
নিবন্ধিত ঠিকানাঃ বাড়ি# ৪৩ (লেভেল-৫) , রোড#১৬ নতুন (পুরাতন ২৭) , ধানমন্ডি , ঢাকা- ১২০৯
ফোনঃ +৮৮-০২৯১২৩৬৭৭