ওয়ার্ল্ড ইনসাইড

নির্বাচনে কাটবে মালদ্বীপ সংকট?

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশ: 23/09/2018


Thumbnail

ভারত মহাসাগরীয় দ্বীপরাষ্ট্র মালদ্বীপ পর্যটনের স্বর্গরাজ্য হিসেবেই বিশ্বজুড়ে পরিচিত ছিল। চার লাখেরও কম জনসংখ্যার দেশটির সার্বিক স্থিতিশীলতা পর্যটক আকর্ষণের অন্যতম কারণ ছিল। কিন্তু ২০১২ সাল নাগাদ এই অবস্থা দ্রুত বদলাতে শুরু করে। ওই বছরের ফেব্রুয়ারিতে রাজধানী মালেতে পুলিশ ও সেনা বিদ্রোহের পর ক্ষমতা থেকে সরে দাঁড়ান দেশটির প্রেসিডেন্ট মোহাম্মদ নাশিদ। এরপর থেকেই দ্বীপরাষ্ট্রটিতে রাজনৈতিক অস্থিতিশীলতার শুরু।

দীর্ঘ ৩০ বছরের স্বৈরশাসনের অবসান ঘটিয়ে ২০০৮ সালে গণতান্ত্রিকভাবে নির্বাচিত হয়ে ক্ষমতায় বসেছিলেন মোহাম্মদ নাশিদ। সাবেক এই সাংবাদিক ও মানবাধিকারকর্মীর বেশ কয়েকটি পদক্ষেপ আন্তর্জাতিকভাবেও দারুন প্রশংসিত হয়। ২০০৯ সালে বিশ্বে প্রথমবারের মত পানির নীচে মন্ত্রিসভার এক বৈঠক আয়োজন করেন নাশিদ। জলবায়ু পরিবর্তনে দ্বীপরাষ্ট্রটির অস্তিত্ব সংকট সম্পর্কে বিশ্ববাসীর দৃষ্টি আকর্ষণের জন্যই ওই পদক্ষেপ নিয়েছিলেন তিনি। দারুন জনপ্রিয় এই প্রেসিডেন্টের ক্ষমতা থেকে সরে দাড়ানোর কয়েকমাস পর তাকে গ্রেপ্তার করা হয়। এরপর থেকেই তাঁর সমর্থকরা বিক্ষোভ সমাবেশ করে আসছিল। এর মধ্যেই ২০১৩ সালে দেশটিতে প্রেসিডেন্ট নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। ওই নির্বাচনে প্রথম দফায় প্রতিদ্বন্দ্বীর চেয়ে ২০ শতাংশ বেশি ভোট পান নাশিদ। এরপর দ্বিতীয় দফা ভোটে তিনি জিতলেও সুপ্রিম কোর্টের রায়ে তা বাতিল করা হয়। পুনরায় ভোট গ্রহণের পর ৩ শতাংশ ব্যবধানে হেরে যান তিনি। নির্বাচনে নাশিদকে অন্যায়ভাবে হারানো হয়েছিল বলে বরাবরই অভিযোগ করে এসেছেন নাশিদ সমর্থকরা।

২০১৩ সালের নির্বাচন মালদ্বীপকে আরও অস্থিতিশীল করে তোলে। বিতর্কিত ওই নির্বাচনের মাধ্যমে প্রেসিডেন্ট পদে বসেন সাবেক প্রেসিডেন্ট মামুন আবদুল গাইয়ুমের সৎভাই আবদুল্লাহ ইয়ামিন। বিভিন্ন গণমাধ্যমের খবর অনুযায়ী, ক্ষমতায় এসেই বিরোধীদলীয় সমর্থকদের ধরপাকড়সহ নানাভাবে নির্যাতন শুরু করেন তিনি। নাশিদকে নির্বাসনেও পাঠানো হয়। ২০১৫ সালে ক্ষমতা অপব্যবহারের মামলায় নাশিদকে ১৩ বছরের কারাদণ্ড দেয় দেশটির একটি আদালত। দমন পীড়নের বিরুদ্ধে আন্দোলন বাড়তে থাকলে চলতি বছরের ফেব্রুয়ারিতে জরুরী অবস্থা জারি করা হয় দেশটিতে।

একটি অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচনের মধ্য দিয়ে মালদ্বীপে টানা কয়েক বছর ধরে চলা সংকটের অবসান ঘটবে এমন প্রত্যাশা করছেন সবাই। কিন্তু বাস্তবতা ভিন্ন ইঙ্গিতই দিচ্ছে। এবারের নির্বাচনে অংশ নিচ্ছেন না সাবেক প্রেসিডেন্ট নাশিদ। তবে নিজ দল মালদ্বীভিয়ান ডেমোক্র্যাটিক পার্টির (এমডিপি) জেষ্ঠ্য নেতা ইব্রাহিম মোহাম্মদ সালিহকে সমর্থন জানিয়েছেন তিনি। অন্যদিকে দ্বিতীয় মেয়াদে ক্ষমতায় আসার জোর প্রচেষ্টা চালাচ্ছেন ক্ষমতাসীন প্রোগ্রেসিভ পার্টির নেতা ইয়ামিন। এমডিপি’র দাবি, জাতীয় নির্বাচনকে সামনে রেখে ভোট চুরির বহুমুখী আয়োজন সাজিয়ে রেখেছে সরকার। দেশটির নির্বাচন কমিশন (ইসি) প্রোগ্রেসিভ পার্টিকে অন্যায়ভাবে সাহায্য করছে বলেও অভিযোগ রয়েছে। যদিও ইসি এ ধরনের অভিযোগ অস্বীকার করেছে। চীন, ভারত এবং ইউরোপিয়ান ইউনিয়ন নির্বাচন নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণ করছে বলে জানিয়েছে। সবকিছু ছাপিয়ে যে প্রশ্নটি বড় হয়ে উঠেছে তা হলো, এই নির্বাচন কি মালদ্বীপের অস্থিতিশীলতা দূর করবে নাকি আরও ঘনীভূত হয়ে উঠবে রাজনৈতিক সংকট?

বাংলা ইনসাইডার/এএইচসি/জেডএ

 



প্রধান সম্পাদকঃ সৈয়দ বোরহান কবীর
ক্রিয়েটিভ মিডিয়া লিমিটেডের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান

বার্তা এবং বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ ২/৩ , ব্লক - ডি , লালমাটিয়া , ঢাকা -১২০৭
নিবন্ধিত ঠিকানাঃ বাড়ি# ৪৩ (লেভেল-৫) , রোড#১৬ নতুন (পুরাতন ২৭) , ধানমন্ডি , ঢাকা- ১২০৯
ফোনঃ +৮৮-০২৯১২৩৬৭৭