ইনসাইড থট

নির্বাচন এলেই গুজব বাড়ে

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশ: 24/09/2018


Thumbnail

বাংলাদেশের জন্মলগ্ন থেকে গুজব নামের চিলটি আমাদের পিছু নিয়েছে। বঙ্গবন্ধুর সময়ে নোট ছাপানোকে কেন্দ্র করে গুজব ছড়ানো, বাসন্তীকে ইচ্ছাকৃত ভাবে জাল পরিয়ে ছবি তুলে গুজব সৃষ্টি, মিথ্যা ব্যাংক ডাকাতির ধোঁয়া তুলে গুজব সৃষ্টিসহ নানা গুজব ছড়ানো হয়েছে। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে এখন গুজবের ধরন বদল হয়েছে। কখনো সাম্প্রদায়িক গুজব ছড়ানো হয়েছে এই বলে যে, আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসলে মসজিদে উলু ধ্বনি শোনা যাবে। আবার কখনো গুজব ছড়ানো হয়েছে যে, বাংলাদেশ ভারতের অঙ্গ রাজ্য হয়ে যাবে । পরে সবই গুজবই থেকে গেছে।

এবারও জাতীয় সংসদ নির্বাচন যখন দরজায় কড়া নাড়ছে তখন কিন্তু আবার গুজবের যন্ত্র চালু হয়ে গেছে। এখন গুজব পর্বের প্রস্তুতি চলছে ১০ অক্টোবর নিয়ে। ওই দিন ২১ আগস্টের গ্রেনেড হামলা মামলার রায় ঘোষণা করা হবে।

আওয়ামী লীগ ২০০৮ সালে ক্ষমতায় আসার পর দেশকে ডিজিটাল করার কাজ যখন দ্রুত এগিয়ে চলছে তখন গুজব ছড়ানোর কাজে ব্যবহৃত হয় ডিজিটাল মাধ্যম। ফেসবুকে ‘বাঁশের কেল্লা’ নামক গ্রুপ খুলে সেখানে ফটোশপের মাধ্যমে মিথ্যা ছবি বানিয়ে বড় ধরনের দাঙ্গা লাগানোর চেষ্টা অনেকবার হয়েছে। চাঁদে সাঈদীকে দেখা গেছে,  হেফাজতের লাখ লাখ কর্মী মারা গিয়েছে, রামুতে মিথ্যা ছবি বানিয়ে বৌদ্ধ বিহার আক্রমণ, ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নাসিরনগরে রসরাজের উপর ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত হানার গুজব, এ সবই ছড়ানো হয়েছে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ব্যাবহার করে।

সর্বশেষ কোটা সংস্কার আন্দোলন এবং নিরাপদ সড়কের দাবিতে আন্দোলনকে কেন্দ্র করে ভয়ানক ভাবে মিথ্যা গুজব ছড়িয়ে উস্কে দেয়া হয়েছে ধ্বংসাত্মক কার্যকলাপ। অনেকেই না বুঝে আবেগের বশবর্তী হয়ে ফাঁদে পা দিয়ে নিজের জন্য ডেকে এনেছেন বিপদ।

এই মহলটির ‘চিলে কান নিয়ে গেছে’ টাইপ গুজবের মূল টার্গেট তরুণ সম্প্রদায়। কুচক্রী মহল জানে বাংলাদেশের সমস্ত আন্দোলনের নেতৃত্ব দিয়েছে এই তরুণরাই। বাংলাদেশের বেশিরভাগ বড় বড় অর্জন এসেছে এই তরুণদের হাত ধরে। ষড়যন্ত্রকারীরা ভালো করে জানে তরুণ সম্প্রদায়কে যদি বিপথে নেওয়া যায় তাহলে সহজেই বাংলাদেশের ভবিষ্যৎকে অন্ধকার করা সম্ভব। বাংলাদেশের সমস্ত অর্জনের পথকে রুদ্ধ করা সম্ভব।

একাদশ সংসদ নির্বাচন সামনেই । তাই এই নির্বাচনকে সামনে রেখে কুচক্রী মহল আরও তৎপর হয়ে ওঠার সম্ভাবনা রয়েছে। তারা চেষ্টা করবে আরও কিছু গুজব সমাজে ছড়িয়ে দিয়ে সমাজকে অস্থিতিশীল করতে। তাই সময় থাকতে এদের ব্যাপারে সাবধান হতে হবে।

বাংলাদেশে যারা রাতের আঁধারে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে গোপন বৈঠক করে, কারণে-অকারণে আল জাজিরাতে সত্য মিথ্যা বানিয়ে গুজবের চিল উড়ানোর চেষ্টা করে- জানতে হবে এরা কারা? এরা হচ্ছে সেই প্রজাতির লোক যারা বলবে ‘আমরা গণতন্ত্রের কথা বলি, জনগণের কথা বলি।’ অথচ এরা কখনো গণতান্ত্রিক শাসন ব্যবস্থায় নির্বাচিত হবার যোগ্যতা রাখে না। জনগণের ভোটে নির্বাচিত হওয়ার সাহস এদের নেই। এরা সবসময় ক্ষমতায় যাবার জন্য অন্ধকারের চোরাগলি খোঁজে। পিছনের দরজা দিয়ে ক্ষমতায় যাবার শখ তাদের সারাজীবনের।

এখন বাংলাদেশের তরুণ সম্প্রদায়কে এই দুষ্ট চক্রের বিষয়ে সাবধান হতে হবে। মনে রাখতে হবে যেহেতু সামনে নির্বাচন, তাই গুজবের চিল উড়িয়ে দিয়ে এই মহল বাংলাদেশের তরুণ সম্প্রদায়কে অন্ধকারের চোরাবালিতে নিমজ্জিত করে পিছনের দরজা দিয়ে ক্ষমতায় আসার চেষ্টা করবে। বাংলাদেশের তরুণ সম্প্রদায়কে সিদ্ধান্ত নিতে হবে যে, নিজেদের মেধা কাজে লাগিয়ে এই মহলের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ানোর। নইলে নির্বাচন এলেই যে গুজবের ডামাডোল শুরু হয়, তা থেকে নিস্তার পাওয়া যাবে না।

লেখক: সাংবাদিক

বাংলা ইনসাইডার/জেডএ

 



প্রধান সম্পাদকঃ সৈয়দ বোরহান কবীর
ক্রিয়েটিভ মিডিয়া লিমিটেডের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান

বার্তা এবং বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ ২/৩ , ব্লক - ডি , লালমাটিয়া , ঢাকা -১২০৭
নিবন্ধিত ঠিকানাঃ বাড়ি# ৪৩ (লেভেল-৫) , রোড#১৬ নতুন (পুরাতন ২৭) , ধানমন্ডি , ঢাকা- ১২০৯
ফোনঃ +৮৮-০২৯১২৩৬৭৭