নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: 26/09/2018
জাতীয় ঐক্যে যেতে বিএনপির হাতে মাত্র ৪৮ ঘণ্টা সময় আছে। এই ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে বিএনপিকে ৪টি মৌলিক সিদ্ধান্ত নিতে হবে। না হলে বিএনপিকে বাদ দিয়েই এগুবে জাতীয় ঐক্য প্রক্রিয়া। আগামী ২৯ সেপ্টেম্বর বিএনপির সমাবেশ হোক আর নাই হোক ঐ দিনের মধ্যেই বিএনপিকে যুক্তফ্রন্ট এবং জাতীয় ঐক্যের ৪ শর্ত পূরণ করতে হবে।
এই চার শর্তের প্রধানটি হলো জামাতের সঙ্গে আনুষ্ঠানিকভাবে সম্পর্কচ্ছেদ। যুক্তফ্রন্টের অন্যতম নেতা মাহী বি. চৌধুরী স্পষ্ট করেই বলেছেন, ’২০ দলের নামে জামাতের সঙ্গে ঘর করে আবার জাতীয় ঐক্যের সঙ্গে আলাদা জোট হবে না।’ মাহী মনে করেন, জাতীয় ঐক্যে আসতে হলে বিএনপিকে জামাতের সঙ্গে সম্পর্ক ত্যাগের আনুষ্ঠানিক ঘোষণা দিতে হবে। যদিও এর আগে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের সঙ্গে ড. কামাল হোসেনের বৈঠকে অন্যরকম কথা হয়েছিল। ড. কামাল হোসেন বিএনপি মহাসচিবকে আশ্বস্ত করেছিলেন যে, ২০ দল নিয়ে তাঁদের মাথাব্যথা নেই। ২০ দল থেকে নিবন্ধিত দলগুলোই শুধু ঐক্য প্রক্রিয়ায় যুক্ত হবে। কিন্তু ২২ সেপ্টেম্বর ঐক্য প্রক্রিয়ার সমাবেশে জামাত না থাকলেও খেলাফত মজলিশের মতো স্বাধীনতা বিরোধী রাজনৈতিক দল ছিল। এজন্য এখন বিএনপির কাছ থেকে এব্যাপারে আনুষ্ঠানিক ঘোষণা চাওয়া হচ্ছে।
আগামী ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে বিএনপিকে দ্বিতীয় যে শর্তটি পূরণ করতে হবে তা হলো সাম্প্রদায়িক রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে গাঁটছাড়া ছিন্ন করতে হবে। বিএনপির নেতৃত্বাধীন ২০ দলের অর্ধেকেরই বেশি দল ইসলামপন্থী এবং মৌলবাদী। জাতীয় ঐক্যের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে যে সাম্প্রদায়িক দলের সঙ্গে তাঁরা কোনো ঐক্য করবে না। যুক্তফ্রন্টের অন্যতম নেতা আ.স.ম. আবদুর রব বলেছেন, ‘আমরা সাম্প্রদায়িকতা মুক্ত একটি জোট চাই। এজন্য মৌলবাদীদের আমরা এই ঐক্যে নেব না।’
বিএনপির কাছে তৃতীয় শর্ত হলো বিএনপির নেতৃত্ব। যুক্তফ্রন্টের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, জাতীয় ঐক্যে বিএনপির পক্ষ থেকে কে নেতৃত্ব দেবে তা ঠিক করতে হবে। বেগম জিয়া জেলে, তারেক জিয়া লন্ডনে। এই অবস্থায় জাতীয় ঐক্যে বিএনপির পক্ষ থেকে কে নেতৃত্ব দেবে তা নির্ধারিত থাকতে হবে। যদিও বিএনপির পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, জাতীয় ঐক্যে বিএনপির প্রতিনিধিত্ব করবেন দলের মহাসচিব। কিন্তু যুক্তফ্রন্টের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, প্রতিনিধিত্ব আর নেতৃত্ব এক জিনিস নয়। বিএনপি মহাসচিবকে যেকোনো সিদ্ধান্তের জন্য লন্ডনে ফোন করতে হয়। তাঁর কোনো সিদ্ধান্ত নেওয়ার ক্ষমতা নেই। তাই, বিএনপিকে আনুষ্ঠানিকভাবে নেতার নাম ঘোষণা করতে হবে।
আর চতুর্থ শর্তটি হলো, ২০০২ সালে তৎকালীন রাষ্ট্রপতি অধ্যাপক বদরুদ্দোজা চৌধুরীর সঙ্গে আচরণের জন্য আনুষ্ঠানিক দু:খ প্রকাশ করতে হবে। গত ২১ সেপ্টেম্বর বিএনপির তিন নেতা অধ্যাপক বদরুদ্দোজা চৌধুরীর বাসায় গিয়ে দু:খ প্রকাশ করেছিলেন। কিন্তু যুক্তফ্রন্টের অন্যতম শরীক বিকল্পধারা বলছে, আনুষ্ঠানিকভাবে কোনো সমাবেশ বা সংবাদ বিজ্ঞপ্তির আকারে দু:খ প্রকাশ করতে হবে।
এই চার শর্ত পূরণ না করলে, জাতীয় ঐক্যে আনুষ্ঠানিকভাবে বিএনপির যোগদান সম্ভব না। এই শর্তে বিএনপি শেষ পর্যন্ত জাতীয় ঐক্যে যাবে কি না সেটাও দেখার বিষয়।
বাংলা ইনসাইডার/জেডএ
প্রধান সম্পাদকঃ সৈয়দ বোরহান কবীর
ক্রিয়েটিভ মিডিয়া লিমিটেডের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান
বার্তা এবং বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ ২/৩ , ব্লক - ডি , লালমাটিয়া , ঢাকা -১২০৭
নিবন্ধিত ঠিকানাঃ বাড়ি# ৪৩ (লেভেল-৫) , রোড#১৬ নতুন (পুরাতন ২৭) , ধানমন্ডি , ঢাকা- ১২০৯
ফোনঃ +৮৮-০২৯১২৩৬৭৭