নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: 29/09/2018
নির্বাচন নয় বরং সাংবিধানিক সংকট সৃষ্টি করে ক্ষমতার দখল ছিল ড. কামাল হোসেনের নীল নকশা। আর এজন্যই ‘পরিস্থিতি সৃষ্টির’ লক্ষ্যে গড়ে তোলা হয়েছিল জাতীয় ঐক্য প্রক্রিয়া। কাছাকাছি সময়ে সাবেক প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার সিনহাকে দিয়ে লেখানো হয়েছিল ‘এ ব্রোকেন ড্রিম’ গ্রন্থটিও। ড. ইউনূস মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রসহ ইউরোপের দেশগুলোকে রাজি করানোর দায়িত্বও নিয়েছিলেন। দেশের প্রভাবশালী একটি মিডিয়া হাউজ পরিস্থিতি উত্তপ্ত করার দায়িত্ব নিয়েছিল। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এই পরিকল্পনা ভেস্তে গেছে। বাংলাদেশে যারা এরকম পরিস্থিতি সৃষ্টিতে সবচেয়ে প্রভাবশালী ভূমিকা রাখতে পারে তারা এরকম উদ্যোগে সাড়া দেয়নি। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রও বলেছে, গণতান্ত্রিক ধারা অব্যাহত রাখতে হবে। ফলে সাংবিধানিক শূন্যতা সৃষ্টি করে অনির্বাচিত শক্তির ক্ষমতা দখলের পরিকল্পনাকারীরা আবারও পিছু হটেছে। একাধিক সূত্রে প্রাপ্ত খবরে জানা গেছে, এই পরিকল্পনার সঙ্গে জড়িত ছিলেন অনেকে। তবে পরিকল্পনার মুখ্য ক্রীড়নক ছিলেন তিনজন। এরা হলেন ড. মুহাম্মদ ইউনূস, ড. কামাল হোসেন এবং বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার সিনহা।
কি ছিল নীল নকশায়:
নির্বাচন করে জনগণের ভোটে ক্ষমতায় যাওয়া এই পরিকল্পনায় ছিল না। নীল নক্সায় ছিল, অক্টোবরের মধ্যে দেশে আন্দোলনের নামে একটি অরাজক পরিস্থিতি সৃষ্টি করা। যাতে করে, ২৮ জানুয়ারির মধ্যে নির্বাচন করা সম্ভব না হয়। ২৮ জানুয়ারির মধ্যে নির্বাচন না হলেও সংসদ ভেঙে যাবে। সৃষ্টি হবে একটি সাংবিধানিক শূন্যতা। এই শূন্যতায় অনির্বাচিত সরকারকে দিয়ে সরকার গঠন করা হবে। রাস্তার আন্দোলনের জন্যই ড. কামাল হোসেন বিএনপিকে ঐক্য প্রক্রিয়ায় নিতে আগ্রহী ছিলেন। আর আন্দোলনে ‘বারুদ’ যোগানের জন্য দেশের শীর্ষস্থানীয় দু’টি পত্রিকাকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছিল। আশা করা হয়েছিল, বিচারপতি সিনহার বই ভারতসহ আন্তর্জাতিক অঙ্গনে বিস্ফোরণমূলক পরিস্থিতি তৈরি করবে। সরকারের ভূমিকা প্রশ্নবিদ্ধ হবে। এ সময়েই ‘প্রভাবশালী’ প্রতিষ্ঠান এগিয়ে আসবে। বাইরে রাজনৈতিক আন্দোলন আর ভেতরে সাংবিধানিক সংকট সৃষ্টি করে ক্ষমতা দখলই ছিল নীল নকশার আসল উদ্দেশ্য।
কেন ভেঙ্গে গেল?
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ড. ইউনূসের মাধ্যমে জানতো একটি তৃতীয় রাজনৈতিক শক্তির উত্থানের কথা। ঢাকাস্থ মার্কিন দূতাবাস এনিয়ে যত বৈঠক করেছিল, তার সব গুলোতেই ঐক্যবদ্ধ নির্বাচনের মাধ্যমে সরকার হটানোর কথাই বলা হয়েছিল। কিন্তু ড. কামাল হোসেন এবং ড. ইউনূস মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরকে জানান তাঁরা ‘নির্বাচন চাচ্ছেন না।’ তখনই মার্কিন দূতাবাস পিছু হটে। মার্কিন পররাষ্ট্র মন্ত্রী নিউইয়র্কে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে দেখা করে গণতান্ত্রিক ধারা অব্যাহত রাখার পক্ষে বলেন। একই অবস্থান ঘোষণা করেন জাতিসংঘের মহাসচিব।
সিনহার বই নিয়ে জাতীয় এবং আন্তর্জাতিক অঙ্গনে যতটা হৈচৈ হবে বলে আশা করা হয়েছিল, তাঁর কিছুই হয়নি। বিবিসি এবং জামাত-বিএনপি নিয়ন্ত্রিত কিছু অনলাইনে সিনহার বক্তব্য মানুষকে উদ্বেলিত করতে পারেনি। অন্যদিকে, অধ্যাপক বদরুদ্দোজা চৌধুরী-ড. কামাল হোসেনদের নীল নকশায় শামিল হতে অনাগ্রহ দেখায়। সবচেয়ে বড় কথা, ড. কামাল-ইউনূস-সিনহা যাদের ওপর আশা করেছিলেন, যে তাঁরা এগিয়ে আসবে, তাঁরাও সাড়া দেয়নি। ফলে, ক্ষমতা দখলের স্বপ্ন হোঁচট খেল। ভেঙ্গে গেল আরেকটি ওয়ান ইলেভেনের স্বপ্ন। ড. কামালও পাড়ি জমালেন বিদেশে।
বাংলা ইনসাইডার/জেডএ
প্রধান সম্পাদকঃ সৈয়দ বোরহান কবীর
ক্রিয়েটিভ মিডিয়া লিমিটেডের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান
বার্তা এবং বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ ২/৩ , ব্লক - ডি , লালমাটিয়া , ঢাকা -১২০৭
নিবন্ধিত ঠিকানাঃ বাড়ি# ৪৩ (লেভেল-৫) , রোড#১৬ নতুন (পুরাতন ২৭) , ধানমন্ডি , ঢাকা- ১২০৯
ফোনঃ +৮৮-০২৯১২৩৬৭৭