ইনসাইড পলিটিক্স

তারেকের মনোনয়ন তালিকাঃ ‘ত্যাগী’রা বাদ

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশ: 01/10/2018


Thumbnail

আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনের জন্য তারেক জিয়ার করা বিএনপির প্রার্থী তালিকা ফাঁস হয়ে গেছে। এ নিয়ে বিএনপিতে চলছে তোলপাড়। এই প্রার্থী তালিকায় অন্তত ৪৩ জনের নাম আছে যারা বিএনপিতে অপরিচিত। বিএনপির রাজনীতির সঙ্গেও তাঁদের কোনো সংশ্রব নেই। বিএনপির স্থায়ী কমিটির অনেক সদস্যই তাঁদের চেনেন না। বিএনপির নেতারাই বলছেন, টাকার বিনিময়ে এদের নাম মনোনয়ন তালিকায় ঢোকানো হয়েছে।

গত দুই দিন ধরে লন্ডন থেকে আসা বিএনপির মনোনয়ন তালিকা নেতাকর্মীদের হাতে হাতে। দেখা যাচ্ছে এই তালিকায় নাম নেই তারেক জিয়ার ঘনিষ্ঠ হিসেবে পরিচিত বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভীর। বিএনপিতে তারেক জিয়ার আরেক ঘনিষ্ঠ হিসেবে পরিচিত, বর্তমানে কারান্তরীণ হাবিব-উন-নবী সোহেলকে ঢাকা থেকে সরিয়ে দেওয়া হয়েছে রংপুরের একটি আসনে। ২০০৮ সালের নির্বাচনে সোহেল ঢাকার মতিঝিল থেকে নির্বাচন করেছিলেন। বেগম জিয়ার ব্যক্তিগত সহকারী শিমুল বিশ্বাসের নামই নেই মনোনয়ন তালিকায়। এছাড়াও গত ১০ বছরে যারা বিএনপির জন্য ত্যাগ স্বীকার করেছেন, কারাবরণ করেছেন, তাদের অনেকেই তালিকায় নেই। তারেক জিয়ার করা তালিকায় ২০ দলের শরিকদের জন্য বরাদ্দ করা হয়েছে মাত্র ৩০টি আসন। এর মধ্যে জামাতকে ১২টি এবং অন্যান্য শরিক দলকে ১৮টি আসন দেওয়া হয়েছে। অথচ ২০ দলের বৈঠকে বিএনপির পক্ষ থেকে আশ্বস্ত করা হয়েছিল শরিকদের সম্মানজনক আসন দেওয়া হবে। বিএনপির একাধিক নেতা বলেছিলেন শরিকদের অন্তত ৭০টি আসন দেওয়া হতে পারে। যদিও শরীকরা অন্তত ১০০টি আসন দাবি করে আসছে।

বিএনপির দায়িত্বশীল একাধিক সূত্র বলছে, গত তিন মাস ধরেই মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের নেতৃত্বে দলের সিনিয়র নেতারা নির্বাচনের প্রস্তুতি নিচ্ছেন। ঘোষণাপত্র, সহায়ক সরকারের রূপরেখা এবং প্রার্থী তালিকা চূড়ান্ত করার কাজ চলছিল। জানা গেছে, বিএনপির প্রার্থী তালিকা নিয়ে মির্জা ফখরুল তারেক জিয়ার সঙ্গে কয়েক দফা কথা বলেন। সাম্প্রতিক লন্ডন সফরেও তারেক জিয়া তাঁকে খসড়া প্রার্থী তালিকা চূড়ান্ত করতে বলেন। এই প্রেক্ষাপটে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্যরা একসঙ্গে বসে, একটি খসড়া তালিকা চূড়ান্ত করে। কিন্তু এর মধ্যেই তাবিথ আউয়াল দলের মহাসচিবকে একটি মনোনয়ন তালিকা দিয়ে জানান এটাই তারেক জিয়ার তালিকা। বিএনপির স্থায়ী কমিটির একজন সদস্য জানিয়েছেন যে, দলের সিনিয়র নেতারা প্রতিটি নির্বাচনী এলাকা ধরে, আওয়ামী লীগের অবস্থা বিবেচনায় নিয়ে তালিকা চূড়ান্ত করেছে। যেখানে মনোনয়ন পাবার মাপকাঠি হিসেবে এলাকায় তাঁর জনপ্রিয়তা এবং দলের প্রতি আনুগত্য প্রধান বিবেচনায় রাখা হয়েছে। কিন্তু তারেক জিয়া প্রণীত এলাকায় অর্থ এবং বিত্তকেই প্রধান বিবেচনায় রাখা হয়েছে। যেমন, ঢাকায় একমাত্র মির্জা আব্বাস ছাড়া কোনো রাজনীতিবিদই নেই তারেকের খসড়া তালিকায়। ঢাকায় সব ব্যবসায়ীদের রাখা হয়েছে।

এই তালিকা ২০ দলের শরিকদেরও বিক্ষুব্ধ করে তুলেছে। বিশেষ করে, শরিকদের সঙ্গে আলাপ আলোচনা না করে এক তরফা ভাবে এরকম তালিকা ২০ দলের ঐক্যকে প্রশ্নবিদ্ধ করবে বলেও ২০ দলের শরিকরা মনে করছেন। অবশ্য তারেক পন্থীরা বলছেন, বিজ্ঞানভিত্তিক জরিপ এবং তথ্য উপাত্তের ভিত্তিতেই এই তালিকা তৈরি করা হয়েছে।

বাংলা ইনসাইডার/জেডএ 



প্রধান সম্পাদকঃ সৈয়দ বোরহান কবীর
ক্রিয়েটিভ মিডিয়া লিমিটেডের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান

বার্তা এবং বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ ২/৩ , ব্লক - ডি , লালমাটিয়া , ঢাকা -১২০৭
নিবন্ধিত ঠিকানাঃ বাড়ি# ৪৩ (লেভেল-৫) , রোড#১৬ নতুন (পুরাতন ২৭) , ধানমন্ডি , ঢাকা- ১২০৯
ফোনঃ +৮৮-০২৯১২৩৬৭৭