ইনসাইড বাংলাদেশ

‘বিশ্ব নেতারা আবারও আমাকে প্রধানমন্ত্রী দেখতে চান’

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশ: 03/10/2018


Thumbnail

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, দেশের রাজনীতি নিয়ে বিশ্ব নেতারা আমাকে কোনো পরামর্শ দেননি। বরং সবাই আগামীতে আবারও আমাকে প্রধানমন্ত্রী হিসেবে দেখতে চেয়েছেন। আমাকে তাঁরা স্বাগত জানিয়েছে।’ এ সময় উপস্থিত সবাই হাততালি দিলে তিনি বলেন, ‘তালি বাজানোর কিছু নেই। জনগণ ভোট দিলে আছি, না দিলে নাই।’

জাতিসংঘের ৭৩তম সাধারণ পরিষদে অংশগ্রহণ বিষয়ে আজ বুধবার প্রধানমন্ত্রীর সরকারি বাসভবন গণভবনে সংবাদ সম্মেলনে প্রধানমন্ত্রী একথা বলেন।   

প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন, ‘প্রায় ১০ বছরের মত আমরা ক্ষমতায় আছি। এমন কোনো অন্যায় কাজ করিনি যে ক্ষমতা ছেড়ে দিতে হবে। ২০০৮ বন্দি থাকাকালীন সময়ে দেশের উন্নয়ন অগ্রযাত্রা নিয়ে পরিকল্পনা করেছি। এটি এখন বাস্তবায়ন করছি। উন্নয়ন হচ্ছে। দেশের মানুষ মানুষ এখন শান্তিতে আছে।’

সুষ্ঠু নির্বাচন প্রসঙ্গে শেখ হাসিনা বলেন, আমাদের সরকারের সময়ে এখন পর্যন্ত ৬ হাজার নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছে। কোনো অনিয়ম হয়নি। সম্প্রতি সিলেট সিটি নির্বাচনে আমরা হেরেছি। ক্ষমতায় থাকা সত্ত্বেও কোনো হস্তক্ষেপ করিনি। তাই আগামীতেও সুস্থ নির্বাচন হবে। আমি আশা করছি, জাতীয় সংসদ নির্বাচনে সব দল অংশগ্রহণ করবে। আর যারা আসবে না সেটা তাদের বিষয়।

ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন বিষয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘ভয় পাবে তাঁরা যাঁরা অপরাধী। কারও যদি অপরাধী মন না থাকে, ভবিষ্যতে কিছু অপরাধ করবে এরকম পরিকল্পনা না থাকে, তার ভয় পাওয়ার কোনও কারণ নেই।’

তিনি আরও বলেন, বাংলাদেশ অসাম্প্রদায়িক রাজনীতিতে বিশ্বাস করে। আমরাও অসাম্প্রদায়িকতায় বিশ্বাস করি। যারা এ ধরনের কাজ করে, এরা আসলে বিকৃতমনা। এদের কোনও নীতি নাই। এটা ঠেকাতে সমাজকেই আরও সচেতন হতে হবে। এই জন্যেই ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন। এই বিষয়ে সাংবাদিকদেরকেও ভূমিকা রাখতে হবে।’

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, ‘পদ্মাসেতু নিয়ে যখন আমাদের অপমানিত হতে হয়েছিল, তখন কারা বেশি উৎসাহিত ছিল। ২০০৭ সালে কাদের পত্রিকার বড় বড় হেডলাইন দিয়ে আমাকে দুর্নীতিবাজ বানানোর অপচেষ্টা করা হতো। একটার পর একটা করে ১৬ টা মামলা দেওয়া হয়েছে আমার নামে। বিশ্বব্যাংকও তদন্ত করে কিছু পায় নাই। এরপরেও কিছু লোক অপেক্ষা করে বসে থাকে যে সরকার চলে যাবে, কেউ আসবে যাদের চাল নেই, চুলা নেই, সংঘঠন করতে পারবে না, ভোটও চাইতে পারবে না। কিন্তু তাদের ক্ষমতায় যাওয়ার খায়েস। তাদের খায়েস পূরণ করতে গিয়ে মানুষকে অনেক খেসারত দিয়ে হয়।’

সুশীল সমাজকে উদ্দেশ্য করে বঙ্গবন্ধু কন্যা বলেন, ‘যারা অবৈধ ভাবে ক্ষমতা দখলকারীদের দাঁরা উপকৃত হয়, তাদেরতো একটা আকাঙ্ক্ষা থেকেই যায়। সেই আকাঙ্ক্ষা পূরণ করতে গিয়ে বারবার দেশকে বিপদে ফেলা হয়। আমি ভোটে যেতে পারবো না, সাহস নেই, কিন্তু আমার পতাকা ওয়ালা গাড়ি চাই। আর সেই পতাকা দেবে অবৈধ ক্ষমতা দখলকারী। যারা ব্যক্তি স্বার্থে ক্ষমতা দখল করতে চায়, তাদের সবসময় একটা অপচেষ্টা আছে।’

জাতির পিতা শেখ মুজিবুর রহমানের খুনিদের ফিরিয়ে আনার বিষয়ে তিনি বলেন, ‘আমেরিকার প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের সঙ্গে যখন আমার দেখা হয়েছিল তখন এ বিষয়ে তাকে বলেছি। তিনি বেশ আগ্রহ দেখিয়েছেন এবং নোট নিয়েছেন। পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে আমার এ বিষয়ে কথা হয়েছে। আমি আশাবাদী বঙ্গবন্ধুর খুনিদের ফিরিয়ে আনতে পারবো।’

রোহিঙ্গাদের প্রসঙ্গে শেখ হাসিনা বলেন, রোহিঙ্গাদের বিষয়ে আমরা কাজ করছি। বিদেশি সংস্থাগুলোও সহযোগিতা করছে। ভাসানচরে ইতোমধ্যে রোহিঙ্গাদের বসবাসের ব্যবস্থা করা হচ্ছে। মিয়ানমারের সঙ্গে আমাদের চুক্তি হয়েছে। তালিকাও করা হয়েছে। তারা যেন মিয়ানমারে ফিরে যেতে পারে সে ব্যবস্থাও আমরা করছি। মিয়ানমার হ্যাঁ-হ্যাঁ বলে কিন্তু কাজের বেলায় কিছু না।’

বিএনপিকে উদ্দেশ্য করে আওয়ামী লীগ সভাপতি বলেন, ২০১৪ সালে বিএনপিকে নির্বাচনে আসার আহ্বান জানাই। তখন বিরোধী দল আমার আহ্বানে সাড়া দেয়নি। নির্বাচনে অংশ না নিয়ে তারা (বিএনপি) নির্বাচন ঠেকানোর জন্য কাজ করেছে। তারা ৩৯০০ মানুষ পুড়িয়ে মেরেছে। যারা মানুষকে মানুষ মনে করে না তাদের জন্য এত মায়াকান্না কেন? যারা আগুনে পুড়েছে তাদের কখনো খোঁজ-খবর নিয়েছেন?   তাদের পরিবার কীভাবে চলছে খোঁজ নিয়েছেন কোনদিন?  যারা সামান্য এতিমের টাকার লোভ সামলাতে পারে না তাদের জন্য এত কান্না কেন? এরা কীভাবে স্বপ্ন দেখে ক্ষমতায় আসার? তারা কীভাবে দেশ চালাবে?’

এবারের নির্বাচনী ইশতেহারে কি থাকছে এমন প্রশ্নের উত্তরে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘এবার আগামী ৮১ বছরের ডেল্টা প্ল্যান করেছি। ২১০০ সালে অর্থাৎ আগামী শতাব্দীতে বাংলাদেশ কেমন হবে সেই পরিকল্পনা করে ফেলেছি আমরা।’  

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গত ২১ সেপ্টেম্বর নিউইয়র্কের উদ্দেশে ঢাকা ত্যাগ করেন। এরপর জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদের ৭৩তম অধিবেশনে শেষে সোমবার সকাল সাড়ে ৯টায় দেশে ফিরে আসেন।

বাংলা ইনসাইডার/আরকে/জেডএ



প্রধান সম্পাদকঃ সৈয়দ বোরহান কবীর
ক্রিয়েটিভ মিডিয়া লিমিটেডের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান

বার্তা এবং বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ ২/৩ , ব্লক - ডি , লালমাটিয়া , ঢাকা -১২০৭
নিবন্ধিত ঠিকানাঃ বাড়ি# ৪৩ (লেভেল-৫) , রোড#১৬ নতুন (পুরাতন ২৭) , ধানমন্ডি , ঢাকা- ১২০৯
ফোনঃ +৮৮-০২৯১২৩৬৭৭