ওয়ার্ল্ড ইনসাইড

মধ্যবর্তী নির্বাচন টলিয়ে দেবে ট্রাম্পের আসন?

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশ: 05/10/2018


Thumbnail

ডোনাল্ড ট্রাম্প মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হওয়ার দুই বছর পর মধ্যবর্তী নির্বাচন অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে দেশটিতে। আগামী ৬ নভেম্বর মার্কিনীরা কংগ্রেস সদস্যদের নির্বাচিত করতে তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করবেন। বলা হচ্ছে, এই নির্বাচন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের আসন টলিয়ে দিতে ভূমিকা রাখতে পারে।

কারা নির্বাচিত হচ্ছেন?

যুক্তরাষ্ট্রের সংসদের দুইটি স্তর। একটি হাউস অব রিপ্রেজেন্টেটিভস বা প্রতিনিধি পরিষদ এবং অন্যটি সিনেট। এই দুইটি স্তরকে একসঙ্গে বলে হয় কংগ্রেস। ৬ নভেম্বরের নির্বাচনে প্রতিনিধি পরিষদের ৪৩৫টি আসনের সবগুলোতেই ভোট অনুষ্ঠিত হবে। আর সিনেটে ১০০টি আসনের মধ্যে ভোট অনুষ্ঠিত হবে ৩৫ টি আসনে। এছাড়া দেশটির ৫০টি রাজ্যের মধ্যে ৩৬ রাজ্যের গভর্নরদেরও আগামী মাসের ভোটের মাধ্যমে নির্বাচন করা হবে।

কারা জয়ী হতে যাচ্ছেন?

বর্তমানে কংগ্রেসে রিপাবলিকান পার্টির নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা রয়েছে, যা ট্রাম্পকে ক্ষমতায় টিকে থাকতে সাহায্য করছে। ডেমোক্রেটরা মনে করছে, এবারের নির্বাচনে তারা প্রতিনিধি পরিষদে সংখ্যাগরিষ্ঠতা পাবে। যার ফলে ট্রাম্পের বিভিন্ন সিদ্ধান্ত তারা আটকে দিতে কিংবা বিলম্বিত করাতে পারবেন।

প্রতিনিধি পরিষদে নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠা করতে অন্তত ২১৮টি আসনে জয় পেতে হয়। নির্বাচন বিশ্লেষকরা বলছেন, ডেমোক্রেটরা ১৮২টি নিশ্চিতভাবে জয় পেতে যাচ্ছে। আরও ১০টি আসনে তাদের জয়ের ভালো সম্ভাবনা রয়েছে। অন্যদিকে রিপাবলিকানরা ১৪৭টি আসনে নিশ্চিতভাবে জয়লাভ করতে যাচ্ছে বলে মনে করে বিশ্লেষকরা। আরও ৫১ টি আসনে তাদের জয়ের ভালো সম্ভাবনা রয়েছে। ৪২ টি আসন তাঁরা হারাতে যাচ্ছে বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা। বাকী আসনগুলোতে দুই দলের মধ্যে হাড্ডাহাড্ডি প্রতিদন্দ্বীতা হবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।

উল্লেখযোগ্য সংখ্যক রিপাবলিকান সদস্য এবার প্রতিনিধি পরিষদে জায়গা হারাবেন বলেই মনে করছেন বিশ্লেষকরা। ডেমক্রেটরা সংখ্যাগরিষ্ঠতা পেতে যাচ্ছে বলেই পুর্বাভাস দিয়েছেন তাঁরা।

সিনেটে মাত্র ৩৫ আসনে ভোট অনুষ্ঠিত হওয়ায় ডেমক্রেটরা এখানে নিয়ন্ত্রন নিতে পারছে না, এটা মোটামুটি নিশ্চিতভাবেই বলা যায়, তবে ৩৫টি আসনের মধ্যে তাঁরা অধিকাংশ আসন পাবে বলে বিভিন্ন জরিপে উঠে এসেছে।

ট্রাম্প ক্ষমতাগ্রহণের পর থেকে তাঁর একের পর এক কুকীর্তি প্রকাশ পেয়েই চলেছে। তবুও এবারের নির্বাচনে রিপাবলিকানরা ভালো ফল করতে পারে। কারণ মার্কিন অর্থনীতি ভালো অবস্থানে রয়েছে।

সর্বোচ্চ সংখ্যক নারী প্রার্থী

যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাসের সর্বোচ্চ সংখ্যক নারী প্রার্থী অংশ নিচ্ছেন এবারের নির্বাচনে। এটি এবারের নির্বাচনের একটি লক্ষনীয় দিক। নারী প্রার্থী বৃদ্ধির বহু কারণ রয়েছে। বেশ কয়েকজন প্রার্থী জানিয়েছেন, ২০১৬ সালের নির্বাচনে হিলারি ক্লিন্টনের হেরে যাওয়ার অপূর্ণতা পূরণ করাই তাদের নির্বাচনে অংশ নেওয়ার বড় কারণ। তবে ট্রাম্পের বিভিন্ন সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে বাড়তে থাকা ক্ষোভকেই নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার অন্যতম কারণ বলে জানিয়েছেন অধিকাংশ প্রার্থী।

নির্বাচন ট্রাম্পের ওপর কী প্রভাব ফেলবে?

ডেমোক্রেট নেতৃবৃন্দ ট্রাম্পের অপসারণ বা পদত্যাগ করতে বাধ্য করার বিষয়ে প্রকাশ্যে কথা বলা এড়িয়ে চলছে। কিন্তু প্রতিনিধি পরিষদে দলটির নিয়ন্ত্রন চলে আসলে তাঁরা ঘুষ, অসদাচরণ, মিথ্যা তথ্য দেওয়াসহ বিভিন্ন অপরাধে তাঁর অভিশংসনের পক্ষে ভোট দিতে পারে। সেক্ষেত্রে কী ঘটবে?

প্রতিনিধি পরিষদ প্রেসিডেন্টের অভিশংসনের পক্ষে ভোট দিলে তা সিনেটে তোলা হবে। সিনেটরদের দুই-তৃতীয়াংশ যদি তাকে দোষী বলে মত দেয়, তবে ট্রাম্পকে তাঁর পদ হারাতে হবে। তাঁর স্থলাভিষিক্ত হবেন, ভাইস প্রেসিডেন্ট মাইক পেন্স।

কিন্তু এই প্রক্রিয়ার এখনো কোন মার্কিন প্রেসিডেন্ট বিদায় নেননি। সিনেটে ডেমক্রেটদের সংখ্যাগরিষ্ঠতার সম্ভাবনা কম থাকায় ট্রাম্পেরও অভিশংসনের সম্ভাবনা খব একটা নেই। তবে মধ্যবর্তী নির্বাচনে ডেমক্রেটদের জয় নিশ্চিতভাবেই তাকে বিপদে ফেলবে। ট্রাম্পের বিভিন্ন পরিকল্পনা ভেস্তে দিতে পারবে তাঁরা।

বাংলা ইনসাইডার/এএইচসি/জেডএ

 



প্রধান সম্পাদকঃ সৈয়দ বোরহান কবীর
ক্রিয়েটিভ মিডিয়া লিমিটেডের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান

বার্তা এবং বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ ২/৩ , ব্লক - ডি , লালমাটিয়া , ঢাকা -১২০৭
নিবন্ধিত ঠিকানাঃ বাড়ি# ৪৩ (লেভেল-৫) , রোড#১৬ নতুন (পুরাতন ২৭) , ধানমন্ডি , ঢাকা- ১২০৯
ফোনঃ +৮৮-০২৯১২৩৬৭৭