ইনসাইড ইকোনমি

সেপ্টেম্বরে বিশ্বব্যাপী খাবারের দাম ছিল সবচেয়ে কম

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশ: 07/10/2018


Thumbnail

চলতি বছর সেপ্টেম্বরে বছরের সবচেয়ে কম দামে খাবার কেনার সুযোগ পেয়েছে বিশ্ববাসী। এ সময় বিশ্বব্যাপী চিনির দাম কিছুটা বাড়লেও ভোজ্যতেল, খাদ্যশস্য, দুগ্ধ ও আমিষ পণ্যের মূল্যসূচকে নিম্নমুখী প্রবণতা বজায় ছিল। জাতিসংঘের খাদ্য ও কৃষি সংস্থার (এফএও) সর্বশেষ মাসভিত্তিক ফুড প্রাইস ইনডেক্সে (এফএফপিআই) এ তথ্য উঠে এসেছে।

এ বছরের শুরু থেকে ধারাবাহিকভাবে বাড়তি থাকার পর গত জুনে বৈশ্বিক খাদ্যমূল্য প্রথমবারের মতো কমে আসে। এরই ধারাবাহিকতায় টানা চতুর্থ মাস হিসেবে সর্বশেষ সেপ্টেম্বরে আন্তর্জাতিক বাজারে খাদ্যপণ্যের দাম কমতির দিকে ছিল। এ সময় খাদ্যপণ্যের বৈশ্বিক গড় মূল্যসূচক আগের মাসের তুলনায় ১ দশমিক ৪ শতাংশ কমেছে বলে জানিয়েছে এফএও। সংস্থাটির মাসভিত্তিক ফুড প্রাইস ইনডেক্স অনুযায়ী, জুনে খাদ্যপণ্যের বৈশ্বিক গড় মূল্যসূচক ছিল ১৭৩ দশমিক ৭ পয়েন্ট। পরের মাসে তা ৩ দশমিক ৭ শতাংশ কমে ১৬৮ দশমিক ৮ পয়েন্টে নেমে আসে। ২০১৭ সালের ডিসেম্বরের পর এটিই বৈশ্বিক খাদ্যমূল্যের সর্বোচ্চ পতন। এরপর গত আগস্টে খাদ্যপণ্যের বৈশ্বিক গড় মূল্যসূচক আরো কমে ১৬৭ দশমিক ৬ পয়েন্টে পৌঁছায়। আর সদ্য সমাপ্ত সেপ্টেম্বরে খাদ্যপণ্যের বৈশ্বিক গড় মূল্যসূচক দাঁড়িয়েছে ১৬৫ দশমিক ৪ পয়েন্টে, যা আগের মাসের তুলনায় ১ দশমিক ৪ শতাংশ কম।

এফএও’র তথ্য অনুযায়ী, গত সেপ্টেম্বরে আন্তর্জাতিক বাজারে ভোজ্যতেলের দাম আগের মাসের তুলনায় ২ দশমিক ৩ শতাংশ কমেছে। এ সময় ভোজ্যতেলের গড় মূল্যসূচক দাঁড়িয়েছে ১৩৪ দশমিক ৯ পয়েন্টে, যা আগের মাসের তুলনায় ৩ দশমিক ২ পয়েন্ট কম। বিগত ৩৬ মাসের মধ্যে এটাই ভোজ্যতেলের সবচেয়ে কম বৈশ্বিক মূল্যসূচক বলে জানিয়েছে এফএও।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ইন্দোনেশিয়া ও মালয়েশিয়া থেকে আন্তর্জাতিক বাজারে পাম অয়েলের রপ্তানি চাহিদা তুলনামূলক কম রয়েছে। এ কারণে টানা পাঁচ মাস মালয়েশিয়ার বাজারে পাম অয়েলের দাম কমতির দিকে রয়েছে। এরই প্রভাব পড়েছে ভোজ্যতেলের আন্তর্জাতিক বাজারে। তাছাড়া কৃষ্ণসাগরীয় অঞ্চলের দেশগুলোয় সূর্যমুখী তেলের বাড়তি উৎপাদনের কারণে তারাও এর দাম আগের তুলনায় কমিয়ে দিয়েছে। মুলত এসব কারণেই বিশ্বব্যাপী ভোজ্য তেলের দাম কমেছে।

গত আগস্টে খাদ্যশস্যের বৈশ্বিক গড় মূল্যসূচক ছিল ১৬৮ দশমিক ৪ পয়েন্টে। সেপ্টেম্বরে তা ৪ দশমিক ৭ পয়েন্ট কমে দাঁড়িয়েছে ১৬৪ পয়েন্টে। ২০১৭ সালের একই সময়ের তুলনায় গত সেপ্টেম্বরে এ সূচকমান ৮ শতাংশ বাড়তি ছিল বলে জানিয়েছে এফএও। এছাড়া আগস্টের তুলনায় ২ দশমিক ৪ শতাংশ কমে গত সেপ্টেম্বরে দুগ্ধপণ্যের বৈশ্বিক গড় মূল্যসূচক দাঁড়িয়েছে ১৯১ দশমিক ৫ পয়েন্টে। এনিয়ে টানা চতুর্থ মাসের মতো দুগ্ধপণ্যের দাম কমতির দিকে ছিল। নিউজিল্যান্ডে তরল দুধের বাড়তি উৎপাদনের কারণেই দুগ্ধপণ্যের দাম কমছে বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।

সদ্য সমাপ্ত সেপ্টেম্বরে আমিষ পণ্যের বৈশ্বিক মূল্যসূচক ছিল ১৬৬ দশমিক ২ পয়েন্ট। এর আগের মাস আগস্টে তা ছিল ১৬৬ দশমিক ৩ পয়েন্ট। চীন-মার্কিন বাণিজ্যযুদ্ধের কারণেই আন্তর্জাতিক বাজারে আমিষ পণ্যের দাম আগের তুলনায় কমতির দিকে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।

সেপ্টেম্বরে খাদ্যপণ্যের দাম কমতির দিকে থাকলেও একমাত্র ব্যতিক্রম ছিল চিনি। এ সময় চিনির গড় মূল্যসূচক ছিল ১৬১ দশমিক ৪ পয়েন্ট, যা আগের মাসের তুলনায় ২ দশমিক ৬ শতাংশ বেশি। প্রতিকূল আবহাওয়ার কারণে ২০১৮-১৯ মৌসুমে ব্রাজিল ও ভারতে আখের ফলন ব্যাহত হওয়াকেই চিনির মূল্যবৃদ্ধির কারণ হিসেবে দায়ী করছেন সংশ্লিষ্টরা। চলতি মাসে এর দাম আরও বাড়তে পারে বলে মনে করা হচ্ছে।

বাংলা ইনসাইডার/এএইচসি/জেডএ



প্রধান সম্পাদকঃ সৈয়দ বোরহান কবীর
ক্রিয়েটিভ মিডিয়া লিমিটেডের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান

বার্তা এবং বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ ২/৩ , ব্লক - ডি , লালমাটিয়া , ঢাকা -১২০৭
নিবন্ধিত ঠিকানাঃ বাড়ি# ৪৩ (লেভেল-৫) , রোড#১৬ নতুন (পুরাতন ২৭) , ধানমন্ডি , ঢাকা- ১২০৯
ফোনঃ +৮৮-০২৯১২৩৬৭৭