ইনসাইড পলিটিক্স

নির্বাচন নিয়ে অনিশ্চয়তা সৃষ্টি করছে কমিশন?

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশ: 08/10/2018


Thumbnail

`জাতীয় সংসদ নির্বাচন বানচালের ষড়যন্ত্র চলছে।’ ক্ষমতাসীন সরকারের নীতি নির্ধারকদের গত দুই দিনে এই বিষয়টি নিয়ে আলোচনা হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, নিজেও আজ মন্ত্রিসভার বৈঠকে মন্ত্রীদের আগামী কিছুদিন চোখ-কান খোলা রাখতে বলেছেন। সরকারের দু’একজন প্রভাবশালী মন্ত্রী, নির্বাচন কমিশনের ভূমিকা নিয়েও প্রশ্ন তুলেছেন। সরকার চাইছিল ডিসেম্বরের মধ্যে জাতীয় সংসদ নির্বাচন করতে। কিন্তু নির্বাচন কমিশন এটিকে জানুয়ারিতে নিতে চাইছে। তাছাড়া নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার ব্যাপারে নির্বাচন কমিশনের একেক জন একেক রকম মন্তব্য করছেন। প্রধান নির্বাচন কমিশনার নূরুল হুদা অন্তত দু’বার বলেছিলেন, ‘অক্টোবরের শেষ নাগাদ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করা হবে।’ অথচ এখন নির্বাচন কমিশনার এবং নির্বাচন কমিশনের সচিব বলছেন, নভেম্বরে তফসিল ঘোষণা করা হবে। এর আগে নির্বাচন কমিশনের একাধিক দায়িত্বশীল কর্মকর্তা জানিয়েছিল যে, ডিসেম্বরের মধ্যেই জাতীয় সংসদ নির্বাচন হবে। কিন্তু এখন নির্বাচন কমিশনের একই কর্মকর্তারা জানুয়ারিতে জাতীয় সংসদ নির্বাচনের কথা বলছে। সরকারের দায়িত্বশীল একটি সূত্র বলছে, নির্বাচনকে প্রশ্নবিদ্ধ এবং বিতর্কিত করতে নির্বাচন কমিশনের মধ্যেই একটি শক্তি কাজ করছে। যদিও, সংবিধান অনুযায়ী আগামী ২৭ জানুয়ারির মধ্যে নির্বাচন হলেই চলে। কিন্তু সরকার এই নির্বাচনকে জানুয়ারি পর্যন্ত নিয়ে যেতে অনাগ্রহী। সরকারের একজন প্রভাবশালী মন্ত্রী বলেছেন, সাংবিধানিক সময় সীমার একমাস আগে আমরা নির্বাচন করতে চাই। কিন্তু নির্বাচন কমিশন এখনো এ ব্যাপারে তাদের সুস্পষ্ট অবস্থান ঘোষণা করেনি।’ নির্বাচন কমিশন বলছে, নির্বাচনের নানা ইস্যু নিয়ে কমিশনের মধ্যে স্পষ্ট মতবিরোধ রয়েছে। বিশেষ করে, সাম্প্রতিক সময়ে ইভিএম নিয়ে বিতর্ক প্রকাশ্য হয়েছিল। এই বিতর্ক এড়িয়ে কমিশন শেষ পর্যন্ত ঐক্যমত্যের ভিত্তিতে একটি নির্বাচনী তফসিল ঘোষণা করতে পারবে কিনা, তা নিয়ে সংশয় এবং সন্দেহ বাড়ছে।

জাতীয় ঐক্য প্রক্রিয়া শুরুর মুহূর্তে ড. কামাল হোসেন নির্বাচন নিয়ে অনিশ্চয়তার কথা বলেছিলেন। সিঙ্গাপুর থেকে ঢাকায় ফিরে তিনি তাঁর ঘনিষ্ঠদের বলেছেন, ‘ডিসেম্বরে নির্বাচন হচ্ছে না।’ গত রাতে ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেনের বাসায় অনুষ্ঠিত বিএনপি, যুক্তফ্রন্ট এবং ঐক্য প্রক্রিয়ার বৈঠকেও, নির্বাচন পিছিয়ে যাবে বলে মন্তব্য করা হয়। বৈঠকে উপস্থিত বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ব্যারিস্টার মওদুদ আহমেদ বলেছেন, ‘আমাদের ৫ দফা দাবি অর্জিত না হওয়া পর্যন্ত বাংলাদেশে কোন নির্বাচন হবে না।’

সরকারের দায়িত্বশীল সূত্রগুলো বলছে, নির্বাচন পিছিয়ে একটি সাংবিধানিক শূন্যতা সৃষ্টি ড. কামাল হোসেনের বৃহত্তর ঐক্যের কৌশল। ড. কামাল হোসেনরা মনে করছেন ২৭ জানুয়ারি পর্যন্ত নির্বাচন ঠেকিয়ে রাখতে পারলেই, একটি ‘সংকটময় পরিস্থিতি’ সৃষ্টি করা সম্ভব, যেখানে সরকার একটি রাজনৈতিক সমঝোতায় আসতে বাধ্য হবে। এ রকম একটি কৌশলে নির্বাচন কমিশনও জড়িত কিনা তা নিয়ে ক্রমশ: সন্দেহ তৈরি হচ্ছে। এর আগে প্রধান নির্বাচন কমিশনার নূরুল হুদা জিয়াউর রহমানকে বহুদলীয় গণতন্ত্রের প্রবর্তক বলে এবং নির্বাচনে সেনা মোতায়েনের ঘোষণা দিয়ে বিতর্কিত হয়েছে। তাই, নির্বাচন নিয়ে কমিশনের অস্পষ্ট অবস্থা ক্রমশ: জনমনে প্রশ্ন সৃষ্টি করছে।    

বাংলা ইনসাইডার/জেডএ



প্রধান সম্পাদকঃ সৈয়দ বোরহান কবীর
ক্রিয়েটিভ মিডিয়া লিমিটেডের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান

বার্তা এবং বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ ২/৩ , ব্লক - ডি , লালমাটিয়া , ঢাকা -১২০৭
নিবন্ধিত ঠিকানাঃ বাড়ি# ৪৩ (লেভেল-৫) , রোড#১৬ নতুন (পুরাতন ২৭) , ধানমন্ডি , ঢাকা- ১২০৯
ফোনঃ +৮৮-০২৯১২৩৬৭৭