ওয়ার্ল্ড ইনসাইড

চে গুয়েভারা স্মরণ: শুধুই রোমান্টিকতা?

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশ: 09/10/2018


Thumbnail

বিশ্বজুড়েই চে গুয়েভারা এক প্রেরণার নাম। শোষণ, নিপীড়ন, নির্যাতন এবং সামাজিক বৈষম্যের বিরুদ্ধে যুদ্ধের প্রতীক হয়ে আছেন তিনি। ১৯৬৭ সালের আজকের এই দিনে বলিভিয়ার লা হিগুয়েরা নামক স্থানে নিরস্ত্র অবস্থায় গুলি করে হত্যা করা হয় বন্দি চে’কে। এই মহান বিপ্লবীর মৃত্যুর স্থান-কাল নিয়ে মতপার্থক্য থাকলেও আজ ৯ অক্টোবরকেই বিশ্বব্যাপী চে’র প্রয়াণ দিবস হিসেবে পালন করা হয়।

মৃত্যুর অর্ধশতাব্দী পরেও তরুণ প্রজন্মের মাঝে চে’র জনপ্রিয়তা তুঙ্গে। তরুণদের মধ্যে তাঁর বিভিন্ন স্টাইল অনুসরণ করার প্রবণতাও প্রবল। সমাজতান্ত্রিক দেশগুলো তো বটেই পুঁজিবাদী দেশগুলোর তরুণ সমাজও শ্রদ্ধাভরে স্মরণ করছে চে গুয়েভারা’কে। কিন্তু প্রশ্ন হচ্ছে, কোন চে’কে স্মরণ করছে তরুণ প্রজন্ম?

চে’র সবচেয়ে বড় পরিচয় হলো, তিনি আমৃত্যুই ছিলেন একজন বিপ্লবী নেতা। শৈশবকালেই সমাজের বঞ্চিত, অসহায় ও দরিদ্রদের প্রতি তাঁর গভীর মমত্ববোধ প্রকাশ পায় বলে জানা যায়। যুবক বয়সে মেডিসিন বিষয়ে পড়ার সময় চে দক্ষিণ আমেরিকার বিভিন্ন অঞ্চলে ভ্রমণ করেন। তখন থেকেই তিনি মার্কসবাদের দিকে ঝুঁকে পড়েন বলে জানা যায়। মার্ক্সবাদই তাঁকে গুয়াতেমালার সামাজিক সংস্কার আন্দোলনে উদ্বুদ্ধ করে বলে ধারণা করা হয়। পরবর্তীকালে ফিদেল কাস্ত্রোর সঙ্গে মিলে তিনি মার্কিন-মদদপুষ্ট কিউবান একনায়ক ফুলজেনসিও বাতিস্তাকে উত্খাত করে দেশটিতে সমাজতন্ত্র প্রতিষ্ঠায় ভূমিকা রাখেন। কিউবার নতুন মন্ত্রী পরিষদে সদস্যপদও দেওয়া হয় তাকে। কিন্তু খুব বেশিদিন তিনি এই দায়িত্ব পালন করেননি। সুখ-শান্তিময় জীবন উপেক্ষা করেন চে। বলিভিয়ায় সাম্যবাদ প্রতিষ্ঠার উদ্দেশ্যে গেরিলা জীবন বেছে নেন তিনি।

সমাজতন্ত্রের পুরোধা বলা হয় যাদের, সেই মার্ক্স, লেনিন, স্টালিন কিংবা ফিদেল কাস্ত্রো সবাইকেই জনপ্রিয়তায় পেছনে ফেলেছেন চে। অথচ কাস্ত্রো বা স্টালিনের তুলনায় চে’র বাস্তব সাফল্য কম বলেই মনে করেন বিশ্লেষকরা।

তরুণরা চে’র চুল বা দাড়ির স্টাইল অনুসরণ করে। চে’র ছবিযুক্ত পোশাক-পরিচ্ছদ ব্যবহার করে। কিন্তু তাঁর বিপ্লবী চেতনাকে ধারণ করে ক’জন, সে প্রশ্ন উঠছেই।

চে গুয়েভারার পরে বিশ্বে এমন কোন তরুণ নেতা উঠে আসেননি, যিনি একটি সমাজ বদলে দিতে পারেন। মাত্র ৩৯ বছরের জীবনে চে লাতিন আমেরিকার কয়েকটি দেশে সমাজতন্ত্র প্রতিষ্ঠায় অবদান রেখেছিলেন। বারবার স্বাচ্ছন্দময় জীবন উপেক্ষা করেছিলেন। অথচ আজকের তরুণরা মুখে চে’র মতাদর্শের কথা বললেও বাস্তবে অনুসরণ করছে কেবল তাঁর স্টাইলটুকুই। অনেকে বলছেন, চে’কে স্মরণ এখন রোমান্টিকতায় পরিণত হয়েছে; হারিয়েই যেতে বসেছে তাঁর বিপ্লবী চেতনা।

বাংলা ইনসাইডার/এএইচসি/জেডএ



প্রধান সম্পাদকঃ সৈয়দ বোরহান কবীর
ক্রিয়েটিভ মিডিয়া লিমিটেডের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান

বার্তা এবং বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ ২/৩ , ব্লক - ডি , লালমাটিয়া , ঢাকা -১২০৭
নিবন্ধিত ঠিকানাঃ বাড়ি# ৪৩ (লেভেল-৫) , রোড#১৬ নতুন (পুরাতন ২৭) , ধানমন্ডি , ঢাকা- ১২০৯
ফোনঃ +৮৮-০২৯১২৩৬৭৭