নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: 10/10/2018
মৃত্যুদণ্ডাদেশকে একটি নিষ্ঠুর ও অমানবিক শাস্তি হিসেবে মনে করেন অনেকেই। তবে নাগরিকদের অপরাধে নিরুত্সাহিত করার জন্য এই দন্ডটিই প্রয়োগ করে বিশ্বের অর্ধশতাধিক রাষ্ট্র। পৃথিবীর আলোচিত কয়েকটি মৃত্যুদণ্ডের ঘটনা এখানে তুলে ধরা হলোঃ
জাভেদ ইকবাল মুঘল
জাভেদ ইকবাল মুঘলকে দক্ষিণ এশিয়ার অন্যতম ভয়ঙ্কর হত্যাকারী বলা হয়। ১৯৫৬ সালে পাকিস্তানে জন্ম নেওয়া জাভেদের হাতে অন্তত ১০০ শিশুর মৃত্যু হয়েছিল। প্রায় প্রতিটি মৃত্যুর সঙ্গেই যৌন নীপিড়নের যোগসূত্র ছিল। ১৯৯৮ সাল নাগাদ জাভেদের নৃশংসতার বিষয়গুলো প্রকাশ পেতে শুরু করে। সেসময় ২ বালককে যৌন হয়রানির অভিযোগে জাভেদকে আটক করে পুলিশ। কিন্তু কিছুদিনের মধ্যেই আইনের ফাঁক গলে ছাড়া পেয়ে যায় সে। এরপর আরও ভয়ঙ্কর হয়ে ওঠে জাভেদ। মিষ্টি ব্যবহা্রের মাধ্যমে খুব সহজেই মানুষের সঙ্গে সুন্দর সম্পর্ক গড়ে তুলত সে। এরপরই তার স্বরূপ প্রকাশ পেত। যৌন নির্যাতনের পর ছুরিকাঘাতের মাধ্যমে মানুষদের হত্যা করত সে। হত্যার পর জাভেদ মৃতদেহগুলোকে টুকরো করে ফেলত। এই টুকরোগুলো কোথাও ফেলে না দিয়ে এসিডভর্তি ড্রামে ডুবিয়ে রাখত। এতে করে অল্প সময়ের মধ্যেই সেগুলো গলে যেত। গলিত দেহাবশেষ স্যুয়ারেজ লাইন কিংবা নদীতে ফেলে দিত সে।
পুলিশের কাছে জাভেদ নিজেই তার সব অপরাধের বর্ণনা তুলে ধরে। হত্যার আগে সব শিশুকে যৌন নির্যাতন করেছে বলে নিজের ডায়েরিতেও উল্লেখ করে সে। কোন অনুশোচনাও করতে দেখা যায়নি তাকে। জবানবন্দিতে সে জানায়, ‘আমি চাইলে ৫০০ বালককে হত্যা করতে পারতা্ম। কিন্তু কেবল ১০০ শিশুকেই হত্যা করেছি আমি। পৃথিবীকে আমি ঘৃণা করি। আমার কাজের জন্য মোটেই লজ্জিত নই আমি।’
বিচারে তার মৃত্যুদণ্ডের আদেশ দেয় আদালত। বিচারক তার রায়ে বলেন, যদিও তাকে ফাঁসির রায় দেওয়া হয়েছে কিন্তু আমি চাই তাকে ১০০ বার ছুরিকাহত করে হত্যা করতে এবং ১০০ টুকরো করে এসিডে ডুবিয়ে রাখতে।
ফাঁসি কার্যকর হওয়ার আগেই ২০০১ সালের ৭ অক্টোবর কারাগারে জাভেদকে মৃত অবস্থায় পাওয়া যায়। কর্তৃপক্ষ জানায়, ছুরি ব্যবহার করে প্রিজন সেলে আত্মহত্যা করেছে সে।
রিচার্ড ট্রেনটন সেচ
মার্কিন এই সিরিয়াল কিলারের জন্ম ১৯৫০ সালে। বীভৎসতার কারণে সে ‘ভ্যাম্পায়ার অব স্ক্রেরামেন্টো’ নামে পরিচিতি পায়। ১৯৭৭ সালের সেচ ৫১ বছর বয়সী প্রকৌশলী এমব্রোস গ্রিফিনকে হত্যা করে। টেরেসা ওয়ালিন নামের এক অন্তঃসত্ত্বাও তার হত্যার শিকার হন। হত্যার পর মৃতদেহগুলোর সঙ্গে সে বিকৃত যৌনাচারে লিপ্ত হত বলে জানা যায়। এমনকি মৃতদের রক্ত সে গোসল করত বলেও জানায় বিভিন্ন সংবাদমাধ্যম।
১৯৮০ সালের ৮ মে যুক্তরাষ্ট্রের একটি আদালত সেচকে গ্যাস চেম্বারের মাধ্যমে মৃত্যুদন্ডের আদেশ দেয়। তবে রায় কার্যকর হওয়ার আগেই ওই বছরের ২৬ ডিসেম্বর তাকে মৃত অবস্থায় পাওয়া যায়। কারাগারে সরবরাহকৃত ওষুধ অতিরিক্ত গ্রহণের মধ্যামে সে আত্মহত্যা করে বলে ধারণা করা হয়।
আন্দ্রেই চিকাতিলো
আন্দ্রেই চিকাতিলো রোস্তবের কসাই নামে কুখ্যাত ছিল। এই সিরিয়াল কিলারকে দ্য রেড রিপার নামেও ডাকা হতো। ইউক্রেনে জন্ম হলেও পরবর্তীকালে রাশিয়ার নাগরিকত্ব নিয়ে সেখানেই বসবাস করতে শুরু করে সে। চিকাতিলো ১৯৭৮ থেকে ১৯৯০ সালের মধ্যে ৫৩ জন নারী ও শিশুকে হত্যা করে বলে জানা যায়।
সে প্রথম হত্যাকান্ড ঘটায় ১৯৭৮ সালের ২২ ডিসেম্বর। মাত্র ৯ বছর বয়সী এক মেয়েকে পরিত্যক্ত বাড়িতে নিয়ে গিয়ে ছুরিকাঘাতে হত্যা করে সে। এরপর একে একে ৫০ টিরও বেশি হত্যাকাণ্ড চালায় সে। ১৯৯৪ সালের ১৪ ফেব্রুয়ারি ফায়ারিং স্কোয়াডের মাধ্যমে এই কুখ্যাত খুনির মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করা হয়।
বাংলা ইনসাইডার/এএইচসি/জেডএ
প্রধান সম্পাদকঃ সৈয়দ বোরহান কবীর
ক্রিয়েটিভ মিডিয়া লিমিটেডের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান
বার্তা এবং বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ ২/৩ , ব্লক - ডি , লালমাটিয়া , ঢাকা -১২০৭
নিবন্ধিত ঠিকানাঃ বাড়ি# ৪৩ (লেভেল-৫) , রোড#১৬ নতুন (পুরাতন ২৭) , ধানমন্ডি , ঢাকা- ১২০৯
ফোনঃ +৮৮-০২৯১২৩৬৭৭