ইনসাইড আর্টিকেল

বিশ্বের ভয়ঙ্কর ১০ অপরাধী

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশ: 11/10/2018


Thumbnail

দুর্ধর্ষ অপরাধীদের অস্তিত্ব রয়েছে প্রায় সব দেশেই। মাফিয়া সিন্ডিকেট, চোরাচালান, মাদক ও অস্ত্র ব্যবসাসহ নানা অবৈধ উপায়ে বিপুল অর্থ উপার্জন করে এরা হয়ে উঠেছে দুর্ধর্ষ অপরাধী। পুলিশের চোখ ফাঁকি দিয়ে সন্ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করে চলেছে তাঁরা। খুন, হত্যাসহ অপরাধ জগতের এমন কোনো ক্ষেত্র নেই, যেখানে এই অপরাধীদের অবাধে বিচরণ নেই। আসুন তবে জেনে নেই ইতিহাসের ভয়ঙ্কর এমন ১০ অপরাধী সম্পর্কে:

পাবলো এসকোবার

কলম্বিয়ার মাদকসম্রাট পাবলো এসকোবারকে বলা হয় ইতিহাসের সবচেয়ে ভয়ঙ্কর অপরাধী। মাদক উৎপাদন ও পাচার করে তিনি ৩০ বিলিয়ন ইউএস ডলারের বেশি অর্থ উপার্জন করেছেন। ১৯৮৭ সালে ফোর্বস ম্যাগাজিন তাকে বিশ্বের সেরা ধনী হিসেবে তালিকাভুক্ত করে। ১৯৯১ সালে আত্মসমর্পন করলেও ১৯৯২ সালে জেল থেকে পালিয়ে যান পাবলো। পরে ২ ডিসেম্বর, ১৯৯৩ সালে সার্চ ব্লক জেল পলাতক পাবলোকে খুঁজে পায়। ছাদ থেকে পালাতে গিয়ে পাবলো গুলিবিদ্ধ হন এবং মৃত্যুবরণ করেন।

আল কাপোনে

গ্যাংস্টার সাম্রাজ্যে আল কাপোনে ছিলেন ব্যাপক আলোচিত। চোরাচালান, জুয়া, পতিতালয় চালানোর মতো অনেক অবৈধ ব্যবসা পরিচালনা করে রাতারাতি ধনকুবের বনে যান তিনি। ১৯২০ সালে  মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে ‘শিকাগো আউটফিট’ নামে গ্যাং গড়ে তোলেন। সমাজসেবায় প্রচুর অর্থ সম্পদ খরচ করায় সাধারণ মানুষের চোখে তিনি ছিলেন রবিনহুডের মতো। ১৯৪৭ সালের ২৫ জানুয়ারি হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে নিজ বাসাতেই মৃত্যুবরণ করেন তিনি।

দাউদ ইব্রাহিম

শীর্ষ ডনদের তালিকায় দাউদ ইব্রাহিমের অবস্থান ওপরের দিকেই। অবৈধ নানা উপায়ে তিনি প্রচুর সম্পদ গড়ে তোলেন। মুম্বাই এই ডি-কোম্পানি নামক সংগঠিত অপরাধচক্র ও সিন্ডিকেট প্রতিষ্ঠা করেন দাউদ ইব্রাহিম। ভারতের মুম্বাইয়ে ১৯৯৩ সালে বোমা বিস্ফোরণের ঘটনাগুলোর পেছনে দাউদ ইব্রাহিমের সংশ্লিষ্টতা থাকার অভিযোগ রয়েছে। এরপর ১৯৯৩ সাল থেকেই পলাতক আছেন তিনি। অনেকের মতে দাউদ ইব্রাহিম পাকিস্তানেরই কোথাও লুকিয়ে আছেন।

এল চাপো

পৃথিবীর শীর্ষ সন্ত্রাসী জোকুইন আর্চিভালদো গুজম্যান লোরা ওরফে এল চাপো। মেক্সিকোর ‘কোকেইন সম্রাট’ নামেই তিনি সারা বিশ্বে পরিচিত। শেষবার যখন তিনি জেলখানা থেকে পালিয়ে বের হলেন, প্রথমেই টুইটারে ডোনাল্ড ট্রাম্পকে নিয়ে একটা টুইট করে বিশ্ববাসীকে জানিয়ে দিলেন তার ঘরে ফেরার কথা। তবে তাঁর এই মুক্তিজীবনের শেষ হয় ২০১৬ সালের ৮ই জানুয়ারি। নিজ প্রদেশ সিনালোয়ার লস মচিস শহর থেকে তাকে গ্রেপ্তার করেন মেরিন সেনারা।

লুইস গারাভিতো

ইতিহাসের অন্যতম কুখ্যাত খুনির নাম লুইস গারাভিতো। কলম্বিয়াতে সে লা বেস্টিয়া বা পশু নামে পরিচিত। সন্দেহ করা হয়, সে কমপক্ষে ৪০০ জনের উপরে মানুষ খুন করেছে। ১৯৫৭ সালের ২৫ জানুয়ারি কলম্বিয়াতে জন্ম নেয়া এই খুনি ১৯৯০ সালেই সবচেয়ে বেশি খুন করে। কলম্বিয়ার আইন অনুযায়ী সর্বোচ্চ ৩০ বছরের সাজা হয় তার। তবে লাশ শনাক্ত করতে পুলিশকে সাহায্য করায় তার সাজা কমিয়ে ২২ বছর করা হয়।

ফ্রাঙ্ক লুকাস

যুক্তরাষ্ট্রের হেরোইন ব্যবসায়ীদের তালিকায় শীর্ষে থেকেছেন বহু বছর। ১৯৩০ সালের ৯ সেপ্টেম্বর জন্ম নেওয়া এই কুখ্যাত মাদক ব্যবসায়ী পৃথিবীর অন্যতম শীর্ষ কালো টাকার মালিক। দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়া ও যুক্তরাষ্ট্রের হেরোইনের চালান পুরোটাই নিয়ন্ত্রণ করতেন তিনি। গাছের গুঁড়ির ভেতর থেকে শুরু করে মৃত মানুষের কফিনে ভরে হেরোইন পাচারের খ্যাতি রয়েছে তাঁর। বেশ কয়েকবার তাকে জেলে ঢোকানো হলেও, বেশিদিন তাঁকে জেলে রাখা সম্ভব হয়নি।

মেয়া ল্যানস্কি

ইতিহাসের আরেক কুখ্যাত ধনকুবের হলেন মেয়ার ল্যানস্কি। অবৈধ উপায়ে বহু ধন সম্পত্তির অধিকারী হয়েছেন তিনি। মেয়ার ল্যানস্কিকে বলা হয় আধুনিক উপায়ে মানি লন্ডারিং বা অর্থ পাচারের জনক। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে ‘ন্যাশনাল ক্রাইম সিন্ডিকেট’ গড়ে তোলেন তিনি। সারা পৃথিবী জুড়ে জুয়ার সাম্রাজ্য গড়ে তোলায় তার খ্যাতি রয়েছে। ৫০ বছর ধরে নানা অপরাধ গোষ্ঠীর কার্যকলাপের নেতৃত্ব দিয়ে গেলেও ল্যানস্কির বিরুদ্ধে অবৈধ জুয়াখেলা ছাড়া আর কোনো অভিযোগ প্রমাণ করা যায়নি।

লাকি লুসিয়ানো

লাকি লুসিয়ানো ছিলেন আমেরিকান-ইটালিয়ান একজন গ্যাংস্টার যাকে আধুনিক যুক্তরাষ্ট্রের সংঘবদ্ধ অপরাধ চক্রের জনক বলা হয়। ১৯৩৬ সালে বেশ কয়েকবার চেষ্টা করার পর বাধ্যতামূলক পতিতাবৃত্তির দায়ে তাকে দোষী সাব্যস্ত করে যুক্তরাষ্ট্রের অ্যাটর্নি থমাস ই. ডিউই। অপরাধ প্রমাণের পর ৩০ বছরের সশ্রম কারাদণ্ড দেয়া হয় লুসিয়ানোকে। কিন্তু ইতোমধ্যে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ শুরু হয়ে যাওয়ায় অভ্যন্তরীণ একটি চুক্তির মাধ্যমে যুক্তরাষ্ট্রের বাইরে একটি জায়গায় দ্বীপান্তরিত করা হয় তাকে।

এনোক জনসন

এনোক জনসন নিউ জার্সির আটলান্টিক সিটির রাজনৈতিক নেতা। বিভিন্ন অবৈধ কর্মকাণ্ডের সঙ্গে তিনি জড়িত ছিলেন। প্রজাতান্ত্রিক মেক্সিকান কমিটির আটলান্টিক কাউন্টির শেরিফ হওয়ার পর থেকেই তার ক্ষমতা আরও বাড়তে থাকে। আটক হওয়ার আগ পর্যন্ত আটলান্টিক সিটির রাজনৈতিক যন্ত্রের পুরোপুরি অপব্যবহার করে এনোক জনসন। তার একটি ব্যক্তিগত সংস্থা ছিল যাদের প্রধান কাজ ছিল জুয়া এবং পতিতাবৃত্তিতে দেশকে সামনে এগিয়ে নিয়ে যাওয়া। ১৯৪১ সালে আটক হন তিনি।

গ্রিসেল্ডা ব্লাংকো

‘কোকেইন গডমাদার’ হিসেবে বহুল পরিচিত মিয়ামির এই মাফিয়া নারী। শৈশব থেকে বয়ঃসন্ধিকাল পর্যন্ত পকেট কাটা আর পতিতাবৃত্তিই ছিল গ্রিসেল্ডা ব্লাংকোর প্রধান পেশা। এক পর্যায়ে ফেডারেল ড্রাগ ষড়যন্ত্র মামলায় তাঁকে অভিযুক্ত করা হয় এবং ১০ বছরের কারাদণ্ডে দণ্ডিত করা হয়। গোপন সহচরদের সহায়তায় জেলে বসেও দিব্যি তাঁর কোকেইন ব্যবসা চালিয়ে যান ব্লাংকো। ২০০২ সালের জুন মাসে ৫৬ বছর বয়সে হৃদযন্ত্রের ক্রিয়া বন্ধ হয়ে কারাগারেই মৃত্যুবরণ করেন তিনি।

বাংলা ইনসাইডার/জেডআই/এসএইচটি/জেডএ



প্রধান সম্পাদকঃ সৈয়দ বোরহান কবীর
ক্রিয়েটিভ মিডিয়া লিমিটেডের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান

বার্তা এবং বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ ২/৩ , ব্লক - ডি , লালমাটিয়া , ঢাকা -১২০৭
নিবন্ধিত ঠিকানাঃ বাড়ি# ৪৩ (লেভেল-৫) , রোড#১৬ নতুন (পুরাতন ২৭) , ধানমন্ডি , ঢাকা- ১২০৯
ফোনঃ +৮৮-০২৯১২৩৬৭৭