ইনসাইড পলিটিক্স

দায় এড়াতে পারেন না খালেদাও

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশ: 11/10/2018


Thumbnail

২০০৪ সালের ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলার ঘটনায় সময় বেগম খালেদা জিয়া ছিলেন বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী। শুধু প্রধানমন্ত্রী নন, স্বরাষ্ট্র এবং প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বও ছিল তাঁর হাতে। গতকাল ১০ অক্টোবর ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলা মামলার রায় হয়েছে। এই মামলায় যে ১৯ জনের ফাঁসির আদেশ হয়েছে, তাদের তিনজন বেগম জিয়ার অধস্তন। এরা হলেন, বেগম জিয়া যে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বে ছিলেন, সেই মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী লুৎফুজ্জামান বাবর, তৎকালীন ডিজিএফআইয়ের প্রধান মেজর জেনারেল (অব.) রেজ্জাকুল হায়দার। যিনি সরাসরি প্রতিরক্ষা মন্ত্রীর নির্দেশে কাজ করেন এবং ব্রিগেডিয়ার (অব.) আব্দুর রহিম, যিনি এনএসআইয়ের প্রধান ছিলেন। এই দুই সেনা কর্মকর্তার প্রধান প্রতিরক্ষামন্ত্রী। এছাড়াও যাবজ্জীবন প্রাপ্তদের মধ্যে আছেন হারিছ চৌধুরী, যিনি বেগম খালেদা জিয়ার রাজনৈতিক উপদেষ্টা।

বাংলাদেশের সংবিধান অনুযায়ী প্রধানমন্ত্রী রাষ্ট্রের নির্বাহী প্রধান। রাষ্ট্রের সব সিদ্ধান্তও গ্রহণের কেন্দ্রে তিনি। ২০০৪ সালের ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলার সময় রাষ্ট্রের কেন্দ্রে ছিলেন বেগম খালেদা জিয়া। এই ঘটনার সঙ্গে সংশ্লিষ্ট সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ মন্ত্রণালয়ের সর্বময় ক্ষমতা ছিল তাঁর হাতে। ২১ আগস্ট  গ্রেনেড হামলা মামলার রায়ে বলা হয়েছে, এই হামলা ঘটাতে রাষ্ট্রযন্ত্র ব্যবহার করা হয়েছে। তাই যদি হয় তাহলে বেগম জিয়া দায় এড়ান কীভাবে? কেন তিনি এই মামলায় অভিযুক্ত হননি? অপরাধ বিশ্লেষকরা এই প্রশ্ন তুলেছেন।

বাংলাদেশে সংসদীয় গণতন্ত্র প্রবর্তিত হবার পর সব সময়েই প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় প্রধানমন্ত্রীর হাতেই ন্যস্ত থাকে। ডিজিএফআই প্রধান  এবং সেনাপ্রধান প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশেই কাজ করেন। অনেক গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে তিনি প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গেই শুধু পরামর্শ করেন। রেজাকুল হায়দার বেগম জিয়ার একক নির্দেশেই চলতেন বলে জানা যায়। জেনারেল মঈন ইউ. আহমেদের গ্রন্থ থেকে জানা যায়, তিনি বেগম জিয়া ও তারেকের ঘনিষ্ঠ ছিলেন। গ্রেনেড হামলা মামলার রায়ে রেজাকুল হায়দার সন্দেহাতীত ভাবে দোষী প্রমাণিত হয়েছেন। প্রশ্ন হচ্ছে, প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশ ছাড়া কি এ রকম ‘জঘন্যতম’ ঘটনার সঙ্গে জড়িত থাকতে পারতেন? আমরা যদি তর্কের খাতিরেও ধরে নেই, প্রধানমন্ত্রীর অজ্ঞাতে তিনি এটি করেছেন, তাহলে ঘটনা জানার পর তাঁর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হলো না কেন? একই প্রশ্ন আসে বাবর এবং ব্রিগেডিয়ার রহিমের ব্যাপারেও। বেগম জিয়ার রাজনৈতিক উপদেষ্টা হারিছ চৌধুরী ঘটনার সঙ্গে জড়িত অথচ বেগম জিয়া সন্দেহের তালিকাতেও নেই! কি অদ্ভূত! এটা কি হতে পারে?

এই ঘটনার দায় কি বেগম জিয়া এড়াতে পারেন?

বলা হচ্ছে, ২১ আগস্টের গ্রেনেড হামলার ঘটনা ছিল আরেকটি ৭৫ এর ১৫ আগস্ট পুনরাবৃত্তির চেষ্টা। ৭৫ এর ১৫ আগস্ট যেমন জিয়া সব জানতেন, প্রয়োজনীয় পরামর্শও দিয়েছেন খুনিদের, কিন্তু তিনি ধরা ছোঁয়ার বাইরে ছিলেন। তেমনি, ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলার ঘটনাও বেগম জিয়ার জ্ঞাতসারেই হয়েছে। তিনিও তাঁর স্বামীর মতোই কি তাহলে পার পেয়ে গেলেন।

বাংলা ইনসাইডার/জেডএ



প্রধান সম্পাদকঃ সৈয়দ বোরহান কবীর
ক্রিয়েটিভ মিডিয়া লিমিটেডের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান

বার্তা এবং বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ ২/৩ , ব্লক - ডি , লালমাটিয়া , ঢাকা -১২০৭
নিবন্ধিত ঠিকানাঃ বাড়ি# ৪৩ (লেভেল-৫) , রোড#১৬ নতুন (পুরাতন ২৭) , ধানমন্ডি , ঢাকা- ১২০৯
ফোনঃ +৮৮-০২৯১২৩৬৭৭